তরুণ প্রজন্ম চাকরি খোঁজার পরিবর্তে চাকরি সৃষ্টির প্রতি অধিক মনযোগী হবে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
বুধবার (৯ আগস্ট) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে ‘ভিশন-২০৪১ স্মার্ট টাওয়ার সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক’ এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন শেষে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন তিনি।
‘ভিশন-২০৪১ স্মার্ট টাওয়ার সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক’ এর পাশে ০.৪৭ একর জায়গায় সরকার এবং বিশ্বব্যাংকের যৌথ অর্থায়নে ‘ডিজিটাল উদ্যোক্তা ও ইনোভেশন ইকোসিস্টেম উন্নয়ন’ প্রকল্পের অধীনে এই স্মার্ট টাওয়ার নির্মিত হবে।
জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, আইটি খাতে বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কে স্পেসের ব্যাপক চাহিদা পূরণ এবং ব্র্যান্ডিংয়ের উপযুক্ত ইকোসিস্টেম গড়ে তোলার জন্য কারওয়ান বাজারে আরও একটি সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক স্থাপনের কাজ আজ শুরু হলো। প্রায় এক লাখ ৭০ হাজার বর্গফুট আয়তন বিশিষ্ট চারটি বেজমেন্টসহ নয় তলা এই ‘গ্রিন বিল্ডিং’ তৈরিতে প্রায় ১৬০ কোটি টাকা ব্যয় হবে।
পলক আরও বলেন, বর্তমানে বিশ্বব্যাংকের ঋণ সহায়তায় আইসিটি বিভাগে ‘ডিজিটাল উদ্যোক্তা এবং উদ্ভাবন ইকো-সিস্টেম উন্নয়ন’ এবং ‘এনহ্যান্সিং ডিজিটাল গভর্নমেন্ট অ্যান্ড ইকোনমি’ নামে দুইটি পৃথক প্রকল্প চলমান রয়েছে। দেশে ‘ইনোভেশন ইকোসিস্টেম’ গড়ে তোলার মাধ্যমে বেসরকারি বিনিয়োগের গতি বৃদ্ধি করতে ডিজিটাল উদ্যোক্তা তৈরি করছে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ। ফলে তরুণ প্রজন্ম চাকরি খোঁজার পরিবর্তে চাকরি সৃষ্টির প্রতি অধিক মনযোগী হবে। অথচ ১৩ বছর আগে দেশের স্বল্প শিক্ষিত তরুণ প্রজন্ম কর্মসংস্থানের জন্য গার্মেন্টসসহ অন্যান্য শ্রমনির্ভর শিল্পের ওপর নির্ভরশীল ছিলো। বর্তমানে তারা আইটি শিল্পে নিজেদের ক্যারিয়ার গড়ে তুলছে।
এছাড়া স্টার্টআপ এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি প্রতিষ্ঠানগুলোর ইন্ডাস্ট্রিতে প্রবেশের হার বাড়ানো এবং ‘জেন্ডার ইনক্লুসিভ ডিজিটাল এন্টারপ্রেনারশিপ’ তৈরি করা এই প্রকল্পের অন্যতম লক্ষ্য। খুব দ্রুতই এই স্মার্ট টাওয়ারের নির্মাণ কাজ শেষ হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আইসিটি বিভাগের সচিব শামসুল আরেফিন বলেন, এই স্মার্ট টাওয়ারে যেসব কার্যক্রম চলবে তা বাংলাদেশে ডিজিটাল অর্থনীতি প্রসারে সহায়ক পরিবেশ তৈরি এবং দেশিয় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি শিল্পের প্রসার ঘটাতে ব্যাপক ও সুদূরপ্রসারী ভূমিকা রাখবে।
অনুষ্ঠানের সভাপতি বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জি এস এম জাফরউল্লাহ বলেন, দেশের সৃজনশীল কার্যক্রমকে গতিশীল করে একটি সৃজনশীল সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠার জন্য সরকারের অর্থায়নে ও বিশ্বব্যাংকের ঋণে মোট ৩৫৩ কোটি ছয় লাখ টাকা ব্যয়ে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের আওতায় ‘ডিজিটাল উদ্যোক্তা এবং উদ্ভাবন ইকোসিস্টেম উন্নয়ন’ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। প্রকল্পটির মূল উদ্দেশ্য হলো বাংলাদেশে ‘ইনোভেশন ইকোসিস্টেম’ গড়ে তোলার মাধ্যমে বেসরকারি বিনিয়োগ উৎসাহিতকরণ এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি। আজ এই ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের মধ্য দিয়ে একটি টেকসই ইনোভেশন ইকোসিস্টেম তৈরির পথ সুগম হলো।
এসময় ডিজিটাল উদ্যোক্তা এবং উদ্ভাবন ইকোসিস্টেম উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক আবুল ফাতাহ মো. বালিগুর রহমান, উপ পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ আতিকুল ইসলামসহ বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধি এবং বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন