বাংলাদেশে আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে ৪০ কোটি ডলার কর ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগটির অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুদকের একজন কর্মকর্তা বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, এ বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে দুদক। কমিশনের উপপরিচালক রেজাউল করিম জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এবং বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) কাছে প্রয়োজনীয় নথি তলব করে চিঠি পাঠিয়েছেন।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের সঙ্গে স্বাক্ষরিত একটি বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তির আওতায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) শুল্ক ও কর অব্যাহতির সুবিধা নিয়ে আদানি গ্রুপ এই কর ফাঁকি দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
উল্লেখ্য,২০১৭ সালের নভেম্বরে আদানি পাওয়ার লিমিটেডের ঝাড়খণ্ড পাওয়ার প্ল্যান্টের সঙ্গে ২৫ বছরের জন্য ১৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেনার চুক্তি করে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)। চুক্তির আওতায় গেল বছরের জুলাই পর্যন্ত আদানির কেন্দ্র থেকে ১০৫৮ কোটি ৮৯ লাখ ৯০ হাজার ৮৪ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করেছে বাংলাদেশ, যার মূল্য ১২৮ কোটি ১৮ লাখ ৪৩ হাজার ৪৪২ ডলার। এর বিপরীতে ৩১ শতাংশ আমদানি শুল্ক ও বিভিন্ন কর মিলে ৩৯ কোটি ৭৩ লাখ ৭১ হাজার ৪৬৭ ডলারের শুল্ক-কর পাওয়ার কথা এনবিআরের। চুক্তিতে শুল্ক অব্যাহতি দেওয়া হলেও সেটির অনুমোদন নেওয়া হয়নি এনবিআর থেকে। শুল্ক গোয়েন্দা প্রতিবেদনের ভাষায় এটি ‘ফাঁকি’।
আমদানি করা বিদ্যুতের শুল্ক-কর মওকুফ সংক্রান্ত কোনো চুক্তি ছিল কি না এবং থাকলে এ বিষয়ে কোনো প্রজ্ঞাপন বা আদেশ জারি হয়েছে কি না জানতে চাইলে শুল্ক গোয়েন্দাকে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড লিখিত জবাব দেয়।
সেখানে বলা হয়, আদানি পাওয়ার (ঝাড়খণ্ড) লিমিটেড ও বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে বাস্তবায়ন চুক্তি অনুযায়ী বিদ্যুৎ বিভাগ ২০২২ সালের ১৪ অগাস্ট তৎকালীন এনবিআর চেয়ারম্যানের কাছে আদানির বিদ্যুতের ওপর থেকে প্রযোজ্য যাবতীয় শুল্ক ও কর মওকুফের আবেদন করে। এক্ষেত্রে এর আগে ভারতীয় বিদ্যুৎ রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান এনটিপিসি বিদ্যুৎ নিগম লিমিটেডকে দেওয়া অব্যাহতির কথা তুলে ধরা হয়। তবে এনবিআরের শুল্ক অব্যাহতি ও প্রকল্প সুবিধা শাখা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
মন্তব্য করুন