জুলাই বিপ্লবকে রাজনৈতিকভাবে শক্তিশালী করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
বুধবার (২১ মে) পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট (পিআরআই) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমাদের সবকিছুর গুণগত মান রক্ষা করতে হবে। একবার যেটা হয়েছে সেটা যেন আর না হয় সেটার দিকে খেয়াল রাখতে হবে এবং শিক্ষা নিতে হবে। আমরা যদি ভুল শিক্ষা নেই তাহলে আরও বড় খেসারত দিতে হবে। এই শঙ্কাটা আমাদের সবার মধ্যে আছে। এমনকি জনগণের মধ্যেও আছে। আমরা চাই না আবার সেই পথে হাঁটি। আমাদের আংশিকভাবে পুনর্গঠিত একটা অর্থনীতি নির্বাচিত সরকারের হাতে তুলে দিতে হবে। যেটাকে পরবর্তী সরকার আরও সুন্দরভাবে সামনের দিকে নিয়ে যাবে। এটা আমাদের প্রত্যাশা। আশা করছি আমরা সামনের দিকে যেতে পারব। আমাদের অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জগুলোকে মোকাবিলা করতে পারব।
গভর্নর বলেন, দুর্ঘটনাকবলিত অর্থনীতি পুনর্গঠনে দরকার অর্থনৈতিক বিপ্লব। এজন্য জুলাই বিপ্লবকে রাজনৈতিকভাবে শক্তিশালী করতে হবে। দূর করতে হবে অর্থনৈতিক বৈষম্য। আনুষ্ঠানিক খাতে আর্থিক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হলে রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পাবে। এজন্য ক্যাশলেস লেনদেন বাড়াতে হবে।
গভর্নর বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি অর্থনীতি দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার এটি পুনর্গঠনের চেষ্টা করছে। ইতোমধ্যে অর্থনীতি কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়েছে। রাজনৈতিক সরকারকে এর ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে হবে। বিপ্লবকে রাজনৈতিকভাবে শক্তিশালী করতে হবে, তাহলে অর্থনৈতিক বিপ্লব সম্ভব হবে। ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের পরিস্থিতি সৃষ্টি না হয় সেদিকে সবাইকে নজর রাখতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলোকে এ বিষয়ে সচেতন হতে হবে।
গভর্নর বলেন, আমাদের একটা শক্ত ভিত্তির ওপর ব্যাংকিং খাত প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আমি সবাইকে সর্বোচ্চ মানে সেবা ও সাপোর্ট দিতে পারব। সেই লক্ষ্যে কাজ করছি। আমাদের অনেক দূর যেতে হবে। আমরা কেবল শুরুতে আছি। আমরা অনেক পিছিয়ে পড়েছিলাম। অনেক অনেক দুর্ঘটনা ঘটেছে। সেই দুর্ঘটনা থেকে একটা সুস্থ জীবনে ফিরতে সময় দিতে হবে। সেই প্রক্রিয়ায় আমরা আছি। সবাইকে ধৈর্য ধরতে হবে। রাজনৈতিক সরকারকেও এই ধারা অব্যাহত রাখতে হবে।
আর্থিক বৈষম্য দূর করার তাগিদ দিয়ে গভর্নর বলেন, একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলের মানুষ সিংহভাগ ঋণ পাচ্ছে। এ বৈষম্য দূর করতে এজেন্ট ব্যাংক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। এমএফএস এবং এজেন্ট ব্যাংক স্বল্প সুদে ঋণ বিতরণ করলে ক্ষুদ্র ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে। বাধ্য হয়ে তারাও সুদের হার কমাবে।
গভর্নর আরও বলেন, ৪৮ বিলিয়ন ডলার থেকে যে রিজার্ভ ২০ বিলিয়নে নেমে এসেছে, তা ৪০ বিলিয়নে উন্নীত করতে চায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এজন্য অর্থনীতিকে গতিশীল করতে হবে। আগামী মাসে রিজার্ভ হবে ২৭-৩০ বিলিয়ন ডলার। এ রিজার্ভ ৪০ বিলিয়ন ডলারে নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে, যার জন্য সময় প্রয়োজন।
মন্তব্য করুন