অন্তর্বর্তী সরকার চামড়ার ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতের যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে তাতে লাভের চেয়ে ক্ষতির সম্ভাবনাই বেশি। কোরবানির পশুর চামড়া সংরক্ষণে বিভিন্ন কওমি মাদ্রাসা ও এতিমখানায় সরকারিভাবে বিনা মূল্যে ৩০ হাজার টন লবণ বিতরণ। একইসঙ্গে সরকারের বাণিজ্য উপদেষ্টার ঘোষণা ঈদ পরবর্তী ১০ দিন পর্যন্ত রাজধানীতে কাঁচা চামড়া ঢুকতে না দেওয়া। আমরা মনে করি যারা চামড়া শিল্পের সঙ্গে জড়িত তাদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা উচিত ছিল। এই বৈষম্যমূলক সিদ্ধান্তের ফলে রাজধানীতে অবস্থিত মাদ্রাসাগুলো অধিক উপকৃত হবে। পাশাপাশি গ্রাম-গঞ্জের মাদ্রাসাগুলো আর্থিক ক্ষতিগ্রস্ত হবে। মধ্যস্বত্তভোগীরা আরও অধিক মুনাফার সুযোগ পাবে।
বৃহস্পতিবার (৫ জুন) গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে কওমি মাদ্রাসা শিক্ষক পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির দেওনার পীর অধ্যক্ষ শাহ মিজানুর রহমান চৌধুরী ও পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মুস্তাকীম বিল্লাহ হামিদী ও যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মুফতি দ্বীন মোহাম্মদ আশরাফ এসব কথা বলেন।
নেতারা বলেন, সরকারি অনুদানের লবণ বণ্টনে নানা প্রকার দুর্নীতি ও অনিয়মে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ জড়িয়ে পরার আশঙ্কা রয়েছে। স্থানীয় দলীয় রাজনৈতিক নেতাদের দ্বারস্থ হতে হবে। সামান্য লবণ অনুদান গ্রহণের মাধ্যমে কওমি মাদ্রাসার স্বকীয়তা, মূলনীতি, ভাবধারা ক্ষুণ্ন হবে। কওমি মাদরাসায় সরকারি অনুদান গ্রহণের সংস্কৃতি সৃষ্টি হবে। ভরা বর্ষা মৌসুমে মফস্বল এলাকার অধিকাংশ মাদ্রাসার চামড়া সংরক্ষণের পর্যাপ্ত জায়গা, দক্ষজনবল এবং প্রাক প্রস্তুতিমূলক ব্যবস্থা না থাকায় মাদ্রাসার পরিবেশ কলুষিত হবে। মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষকে মারাত্মক দুর্ভোগের শিকার হতে হবে। সংরক্ষণের বিড়ম্বনায় ঈদের ছুটি থেকেও বঞ্চিত হবে মাদ্রাসার শিক্ষক ছাত্রদেরকে। বিপাকে পড়তে হবে আংশিক মূল্যে সংগৃহীত চামড়া নিয়ে। ক্ষতিগ্রস্ত হবে চামড়ার মূল্যের প্রকৃত হকদার দরিদ্র জনগোষ্ঠী, মফস্বল এলাকার চামড়া ব্যবসায়ীরাও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
নেতারা বলেন, ঈদ পরবর্তী ১০ দিন রাজধানীতে কাঁচা চামড়া ঢুকতে না দিলে সংশ্লিষ্টরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তারা অবিলম্বে বৈষম্যমূলক সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে সরকারকে পুনর্বিবেচনা করার আহ্বান জানান।
মন্তব্য করুন