বিশ্ব ডিম দিবস আজ। যুক্তরাজ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল এগ কমিশনের (আইইসি) সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রতি বছর অক্টোবরের দ্বিতীয় শুক্রবার বিশ্বব্যাপী পালিত হয় ডিম দিবস।
ডিমকে বলা হয় পরিপূর্ণ খাদ্য। পৃথিবীতে মাত্র কয়েকটি খাদ্যকে সুপার ফুড হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়, যার মধ্যে ডিম অন্যতম। বর্তমানে বাংলাদেশে ডিমের বাৎসরিক প্রাপ্যতা মাথাপিছু ১৩৬টি।
ডিমকে বিশ্বে একটি উন্নতমানের ও সহজলভ্য আমিষজাতীয় খাদ্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে ১৯৬৪ সালে যুক্তরাজ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল এগ কমিশন (আইইসি) গঠিত হয়। সংস্থাটি প্রাণিজ আমিষের চাহিদা পূরণ, স্বাস্থ্যবান ও মেধাবী জাতি গঠন এবং সর্বোপরি ডিমের গুণাগুণ সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়ানোর লক্ষ্যে ১৯৯৬ সালে অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় প্রথম ‘বিশ্ব ডিম দিবস’ আয়োজন করে, যা পরবর্তী সময়ে প্রতি বছর অক্টোবর মাসের দ্বিতীয় শুক্রবার বিশ্বব্যাপী পালিত হয়ে আসছে।
ডিমের উপকারিতা
ডিম সুস্বাদু, পুষ্টিগুণে ভরা আর সহজলভ্য এক খাবার। ছোট এই খাবারে রয়েছে আমাদের শরীরের জন্য অতিপ্রয়োজনীয় ১৩টি পুষ্টিগুণ। আবার টেকসই প্রাণিজ প্রোটিনের মধ্যে এর স্থান সবার ওপরে। তাই ডিম সবার খাওয়া প্রয়োজন। রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধের জন্য অন্তঃসত্ত্বা মায়েদের প্রতিদিন ডিম খাওয়া প্রয়োজন। কারণ ডিমে আয়রন রয়েছে, যা শরীরে খুব সহজে শোষিত হয়, বিভিন্ন কোষে অক্সিজেন সরবরাহ করে এবং আয়রনের অভাবজনিত রোগ যেমন রক্তস্বল্পতা ইত্যাদি দূর করতে সহায়তা করে। ডিমে বিদ্যমান ভিটামিন এ, ডি, ই, কোলিন, ফোলিক এসিড এবং আয়রনসহ আরও অনেক পুষ্টি উপাদান থাকে, যা শিশুর দৈহিক ও মানসিক বিকাশে প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করে।
একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের হরমোনের ইমব্যালেন্স রোধে, বিভিন্ন এনজাইমের কার্যকারিতা সঠিক রাখতে এবং স্বল্প সময়ে এনার্জি পাওয়ার জন্য ডিম খুবই উপকারী। ডিমে টাইরোসিন এবং ট্রিপটোফেন নামক দুটি অ্যামাইনো এসিড রয়েছে, যা হৃদরোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে। দেশে মোট মৃত্যুর ৩৪ শতাংশের পেছনে আছে হৃদযন্ত্র ও রক্তনালির রোগ। দেশে প্রতি চারজনে একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ উচ্চ রক্তচাপে ভুগছে। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রতি বছর বাংলাদেশে প্রায় আড়াই লাখ মানুষের মৃত্যু হয়।
ক্যান্সার রোগীদের অবশ্যই ডিম খেতে হবে, কারণ ডিম রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং কোষের পুনর্বৃদ্ধিতে সহায়তা করে; কিন্তু ডিম অবশ্যই ভালোভাবে সিদ্ধ করে নিতে হবে। বর্তমানে দেশে বছরে ২ হাজার ৩৭৪ কোটি ৯৭ লাখ ডিম উৎপাদন হয়। বাংলাদেশে মাথাপিছু ডিমের বাৎসরিক প্রাপ্যতা ১৩৬টি। প্রায় সাড়ে ১৭ কোটি জনসংখ্যার এদেশে প্রতিদিন মাত্র সাড়ে ৬ কোটি ডিম উৎপাদন হয়।
মন্তব্য করুন