কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ২৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৫:৩১ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

‘প্রবীণবান্ধব বাংলাদেশ চাই’ স্লোগানে বিজয় উৎসব

২৩ ডিসেম্বর পালিত হলো ‘প্রবীণবান্ধব বিজয় উৎসব’। ছবি : সৌজন্য
২৩ ডিসেম্বর পালিত হলো ‘প্রবীণবান্ধব বিজয় উৎসব’। ছবি : সৌজন্য

কোনো দেশের মোট জনসংখ্যার ১৪ শতাংশের বয়স যদি ৬৫ বা তার বেশি হয়, তাহলে সেই দেশকে ‘প্রবীণের দেশ’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এই হিসেবে ২০৪৭ সালে বাংলাদেশ ‘প্রবীণের সমাজ’ বা ‘প্রবীণ দেশ’-এ রূপান্তরিত হবে। অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় প্রদত্ত তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের জনসংখ্যা ২০২৯ সালে প্রবীণমুখিতার পর্যায়ে পৌঁছাবে। অর্থাৎ এই প্রক্রিয়া শুরু হবে মাত্র সাত বছর পর।

সময়ের এই বাস্তবতাকে অনুধাবন করে বেশকিছুসংখ্যক সংগঠন এগিয়ে এসেছে ‘প্রবীণবান্ধব বাংলাদেশ চাই’ শীর্ষক স্লোগান নিয়ে। এই আন্দোলনকে সাধারণের মাঝে ছড়িয়ে দিতে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে ‘প্রবা’। সে সকল জনকল্যাণমুখী কাজের অংশ হিসেবে গত ২৩ ডিসেম্বর পালিত হলো ‘প্রবীণবান্ধব বিজয় উৎসব’।

এই উৎসবে অতিথি হিসেবে ছিলেন, মেজর জেনারেল জীবন কানাই দাস, কান্ট্রি ডিরেক্টর, স্যার উইলিয়াম বিভারিজ ফাউন্ডেশন, মফিদুল হক, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি এবং লেখক ও সমাজসেবক হাসান আলি। এই উৎসবে ৫ জন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে সম্মাননা প্রদান করা হয়। মুক্তিযোদ্ধা তোফায়েল আহমেদ, মুক্তিযোদ্ধা লুৎফা হাদিন রোজী, মুক্তিযোদ্ধা শ ম হারুন-উর-রশিদ, মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুর রশিদ মন্ডল এবং মুক্তিযোদ্ধা ইঞ্জিনিয়ার কলিমুল্লাহ। সম্মাননা গ্রহণের শেষে সকল বীর মুক্তিযোদ্ধারাই উনাদের অনুভূতি ব্যক্ত করেন এবং স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে যান। উনাদের কাছেই আমন্ত্রিত অতিথিরা শোনেন সে সময়ের বীর সেনাদের বীরত্বের গল্প।

বীর সেনাদের সম্মাননা প্রদানের পর আমন্ত্রিত সম্মানিত অতিথি মেজর জেনারেল জীবন কানাই দাস, জনাব মফিদুল হক এবং হাসান আলী শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন। উনারা উনাদের বক্তব্যে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে ৭১ সালের বীর সেনাদের আত্মত্যাগের কথা। সেই সাথে এই অভিমতও ব্যক্ত করেন যে দেশ, সমাজের জন্য কাজ করার কোনো বয়স নেই। দেশ গড়তে সকল বয়সের মানুষকেই এগিয়ে আসতে হবে। উনারা প্রবীণ বান্ধব বাংলাদেশ চাই কে এই চমৎকার উদ্যোগ নেওয়ার জন্য সাধুবাদ জানান এবং আশ্বাস দেন এমন যে প্রবার কোনো মহৎ উদ্যোগে উনারা প্রবার সাথেই থাকবেন।

আমরা চাই এই বাস্তবতা সমাজ ও রাষ্ট্র অনুধাবন করুক, সমস্যা নিরসনে এগিয়ে আসুক। প্রবীণরা যেন পরিবারের বোঝা না হয়। প্রবীণের জন্য নিশ্চিত হোক নিরাপদ ও স্বস্তিদায়ক জীবন। এতে করে উপকৃত হবে ব্যক্তি, পরিবার ও সমাজ। সর্বোপরি উপকৃত হবে রাষ্ট্র।

আজকে যারা নবীন, তারাই আগামী দিনের প্রবীণ। অন্যদিকে আজকে যারা প্রবীণ তারাই একদিন ছিলেন নবীন। দিন যত যাবে বাংলাদেশে এই তরুণ জনগোষ্টী বিপুল সংখ্যায় প্রবীণের কাতারে নাম লেখাবে। বলা হচ্ছে ২০২৯ সাল থেকে বাংলাদেশের একটি বিশালসংখ্যক মানুষ প্রবীণের খাতায় নাম লেখাবে। এই যে বিপুল পরিমাণ মানুষ শারীরিক ও মানসিক সমস্যা নিয়ে বাস করবে তাদের পাশে দাঁড়াবার জন্য পর্যাপ্ত সচেতনতা তৈরির কাজ এখন থেকেই শুরু করতে হবে। শপথ নিতে হবে প্রবীণবান্ধব বাংলাদেশ গড়ার।

কোনো দেশের মোট জনসংখ্যার ১৪ শতাংশের বয়স যদি ৬৫ বা তার বেশি হয়, তাহলে সেই দেশকে ‘প্রবীণের দেশ’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এই হিসেবে ২০৪৭ সালে বাংলাদেশ ‘প্রবীণের সমাজ’ বা ‘প্রবীণ দেশ’-এ রূপান্তরিত হবে। এই প্রক্রিয়া শুরু হবে মাত্র সাত বছর পর।

অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় প্রদত্ত তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের জনসংখ্যা ২০২৯ সালে প্রবীণমুখিতার পর্যায়ে পৌঁছাবে। ‘বৃদ্ধ বা প্রবীণ’ পর্যায়ে রূপান্তরিত হতে বাংলাদেশের মাত্র ১৮ বছর লাগবে। এই সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ যে গতিতে ‘বয়স্ক’ থেকে ‘বার্ধক্য’ পর্যায়ে পৌঁছবে তা উন্নত এশীয় ও সমৃদ্ধ ইউরোপীয় দেশগুলোর গতির চেয়ে বেশি হবে। এই রূপান্তরে বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম দ্রুত রূপান্তরশীল সমাজ হবে। উন্নতির অনেক নিচের ধাপে থেকে জনসংখ্যা-রূপান্তরের এমন অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ।

এখন প্রবীণ হওয়া মানেই কি জীবন থেকে সকল আনন্দ, রং মুছে যাওয়া? অবশ্যই না। বরং প্রবীণবান্ধব সমাজ গড়তে দরকার একটু সচেতনতা। আর সেই সচেতনতা তৈরিতেই সকলের মিলিত উদ্যোগ জরুরি। কারণ, আমাদের দেশ এখনো প্রবীণবান্ধব নয়। এখানে তিনটি শ্রেণি সবসময় অবহেলিত। একটি শিশু অন্যটি প্রবীণ আর নারী। কিন্তু আমাদের দেশে নারীদের জন্য নানা উদ্যোগ লক্ষ্য করা যায়। কিন্তু শিশু এবং প্রবীণদের ক্ষেত্রে একেবারেই তা অনুপস্থিত। ঢাকায় প্রবীণদের জন্য একটি পার্ক নেই। শহরের ফুটপাত পর্যন্ত প্রবীণদের চলাচলে অনুপযোগী। আজো আমাদের দেশে প্রবীণ ব্যক্তিদের প্রাধান্য দিয়ে কোনো বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। প্রবীণবান্ধব রেস্টুরেন্ট নেই, বাসে, ট্রেনে, প্লেনে কোথাও তাদের জন্য বিশেষ লাইন নেই, হুইল চেয়ার নিয়ে সব জায়গায় যাওয়ার র‍্যাম্প নেই। এমন হাজারো সমস্যার সম্মুখীন হোন আমাদেরই আপনজনেরা যারা প্রবীণ।

অন্যদিকে বর্তমানে বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৪। গড় আয়ু বৃদ্ধির পেছনের কারন চিকিৎসাব্যবস্থার উন্নতি। আবার যৌথ পরিবারের বিলুপ্তিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে চলেছে দেশের প্রবীণজনগোষ্ঠী।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

এনসিপির সঙ্গে সম্পৃক্ত নিয়ে যা বললেন উমামা 

চরের কৃষকদের মুখে হাসি ফুটিয়েছে করলা 

গরমে বাইরে থেকে ফিরেই গোসল, শরীরে যে ক্ষতি ডেকে আনছেন

কানাডার সাধারণ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন লিবারেল পার্টির জয়

ভয়াল ২৯ এপ্রিল : দুঃসহ স্মৃতি আজও কাঁদায় উপকূলবাসীকে

পেঁয়াজ সংরক্ষণের ‘মডেল ঘর’ নির্মাণে নয়ছয়, বিপাকে কৃষক

‘দেবদুলাল বাঁচতে চায়’

আবারও কাশ্মীর সীমান্তে গোলাগুলি, চরম উত্তেজনা

সাতসকালে ঢাকায় বইছে ‘অস্বাস্থ্যকর’ বাতাস

ব্র্যাক ইউনিভার্সিটিতে চাকরির সুযোগ

১০

ট্রেন চালুর আশ্বাস, ৩৮ ঘণ্টা পর অবরোধ প্রত্যাহার

১১

এবার ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থার প্রধানের পদত্যাগ

১২

পাকিস্তানে ভয়াবহ বোমা বিস্ফোরণ, নিহত ৭

১৩

রেললাইনে মিলল ব্যবসায়ীর গলাকাটা মরদেহ

১৪

দুপুরের মধ্যে ঢাকাসহ ১৬ জেলায় ঝড়ের আশঙ্কা

১৫

২৯ এপ্রিল : কী ঘটেছিল ইতিহাসের এই দিনে

১৬

২৯ এপ্রিল : আজকের নামাজের সময়সূচি

১৭

মঙ্গলবার রাজধানীর যেসব মার্কেট বন্ধ

১৮

বজ্রপাতে কৃষক নিহত

১৯

১০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামি গ্রেপ্তার

২০
X