আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, এমপি
জাতীয় সংসদের হুইপ এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন-পূর্ববর্তী রাজনৈতিক পরিস্থিতি, আগামী নির্বাচন, বিএনপি ও আওয়ামী লীগের সমাবেশ নিয়ে কালবেলার সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন এম এম মুসা।
কালবেলা: বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ প্রায় এক মাস ধরে শান্তি সমাবেশ করছে। এ সমাবেশের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য কী?
আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন: বর্তমান টালমাটাল বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে দেশে শান্তি ও সংহতি অনেক বেশি প্রয়োজন। করোনা, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ, স্যাংকশন-পাল্টা স্যাংকশনের বিরূপ প্রতিক্রিয়ার চাপ সামলাতে জাতিকে অনেক দুঃসময় পার করতে হচ্ছে। বর্তমান অবস্থায় নতুন চাপ সহ্য করা সম্ভব নয়। এই মুহূর্তে অরাজকতা, নৈরাজ্য, নাশকতা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির চাপ নেওয়ার মতো অবস্থা বাংলাদেশের নেই। শান্তি রক্ষার স্বার্থে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থার পাশাপাশি রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে আওয়ামী লীগ মাঠে থাকছে।
কালবেলা: ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশের দিনে আপনারা শান্তি সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছেন বলে অভিযোগ করছে বিএনপি। এতে সাংঘর্ষিক রাজনীতির শঙ্কা আরও বাড়বে না?
আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন: ঘর পোড়া গরু সিঁদুর দেখলেও ভয় পায়। গণতান্ত্রিক অধিকার ও রাজনীতির নামে বিএনপি-জামায়াত অতীতে যা করেছে সে অভিজ্ঞতা অতীব আতঙ্কজনক। জনজীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্যই বিএনপির সমাবেশের দিন আওয়ামী লীগ আলাদা শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশ করছে। এটি প্রতিরক্ষামূলক, আক্রমণাত্মক নয়। মাঠে আওয়ামী লীগ উপস্থিত না থাকলে আপনারা ওদের হিংস্রতা দেখতে পেতেন। কিন্তু তাদের হায়েনা অবয়ব উন্মোচন করার রাজনীতি করতে গেলে দেশের সর্বনাশ হয়ে যাবে।
কালবেলা: আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে যে সাংঘর্ষিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে সেখান থেকে উত্তরণে আপনারা কি উদ্যোগ নিচ্ছেন? আলোচনার কোনো সম্ভাবনা কী আছে?
আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন: রাজনীতিতে শেষ কথা বলতে কিছু নেই। বিএনপির প্রভুরা বেশ দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। রাজনীতিতে সব সময় প্রকাশ্য বিষয়বস্তুর বাইরে অনানুষ্ঠানিক কিছু কার্যক্রম সংঘটিত হয়। চূড়ান্ত রূপ পেলে তা আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে প্রকাশ হয়। কিছুটা ধৈর্য ধরতে হবে। এবারের নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণের নিশ্চিত হবে, একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে এটি আমি বলতে পারি।
কালবেলা: সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে আপনি নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে কিছু কথা বলেছেন? আপনার দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অবস্থান কী?
আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন: আমি সংসদ সদস্য, সুতরাং আমি সংবিধানের ছাত্র। সংবিধান বিশেষজ্ঞ নই। প্রতিবার নির্বাচন নিয়ে সংকটের স্থায়ী সমাধান আমি সংবিধানের মাঝে খুঁজে পেয়েছি। তা জাতির সামনে তুলে ধরেছি। আমাদের দল সংবিধানের কোনো কিছুর বিরুদ্ধে নয় এবং নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণের পরিবেশ নিশ্চিত করতে আন্তরিক।
কালবেলা: বিএনপির সঙ্গে আলোচনার কোনো উদ্যোগ কি আপনারা সহসা নেবেন?
আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন: আমাদের পক্ষ থেকে আগ বাড়িয়ে আনুষ্ঠানিক আলোচনার উদ্যোগ নেওয়া সম্ভব নয়। তারা সব পথ বন্ধ করে দিয়েছেন। তবে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা চলছে। ইতিমধ্যে বিএনপির প্রভু সাহেবরা এই প্রক্রিয়ায় যুক্ত হয়েছেন। হয়তো ইতিবাচক কিছু হবে।
কালবেলা: বিএনপির সঙ্গে আন্দোলনকারী অন্যান্য দল অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ছাড়া নির্বাচনে যাবে না বলে ঘোষণা দিয়েছে, তারা বর্তমান সরকারপ্রধানের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলন করছে। বিষয়টিকে আপনারা কীভাবে দেখছেন?
আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন: বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত যে ব্যবস্থাকে মন্দ বলেছে, অসাংবিধানিক বলেছে এবং যে পদ্ধতি গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতার জন্য হুমকিস্বরূপ, তেমন একটি বিষয় সংবিধানে সন্নিবেশন করার আত্মঘাতী ও জনবিরোধী দাবি মেনে নেওয়া সম্ভব নয়।
মন্তব্য করুন