রাষ্ট্রের সম্পদ ও জনগণের জান-মালের নিরাপত্তা বিধানে সবাইকে সচেতন হওয়া এবং অবিলম্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করার আহ্বান জানিয়েছে খেলাফত মজলিস। পাশাপাশি উদ্ভূত সংকট সমাধানে ১৪ দফা ঘোষণা করেছে দলটি।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) বিকেলে পল্টনস্থ মজলিস মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানায় দলটি।
দলের মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের লিখিত বক্তব্যে বলেন, আল্লাহর রহমতে এ দেশের ছাত্র-জনতার রক্ত দান আর ত্যাগের বিনিময়ে এক অভূতপূর্ব অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে স্বৈরাচারী হাসিনার কবল থেকে বাংলাদেশের মানুষ মুক্তি পেয়েছে। এ অভ্যুত্থান দেশের হাজারো শহীদ, আর লাখো ছাত্র-জনতার ত্যাগের ফসল।
তিনি বলেন, দুঃখের বিষয় কিছু কিছু জায়গায় লুটপাট-অগ্নিসংযাগ করা হচ্ছে। বিশেষ করে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ঘরবাড়ি, উপসনালয় ও ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে হামলা-অগ্নিসংযোগের খবর পাওয়া যাচ্ছে- যা অত্যন্ত আপত্তিকর বিষয়। বিশেষ কোনো মহল এ বিজয়কে কলঙ্কিত করার জন্য এহেন ঘটনা ঘটাতে পারে। তাই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর কেউ কোনো হামলার ঘটনা যাতে না ঘটে সে বিষয়ে দেশবাসীকে সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে।
খেলাফত মজলিসের ১৪ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে- ১. দ্রুত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা। ২. শিক্ষার্থীদের সব দাবি মানা। ৩. সব ছাত্র-শিক্ষক-রাজনীতিবিদ, আলেম-উলামা ও সাধারণ মানুষকে দ্রুত নিঃশর্ত মুক্তি দেওয়া। ৪. আন্দোলনে নিহত সব শহিদ পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া।
৫. আহতদের জরুরি ভিত্তিতে সুচিকিৎসা দেওয়া। ৬. সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করা। ৭. খুনের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার এবং সব খুনের বিচার করা ও গুম ব্যক্তিদের সন্ধান দেওয়া। ৮. তিন মাসের মধ্যে সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে ইসি পুনর্গঠন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, প্রশাসনসহ সবকিছু ঢেলে সাজাতে হবে।
৯. বিতর্কিত পুলিশ কর্মকর্তাদের প্রত্যাহার করা। ১০. হেফাজতে ইসলামের সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করা। ১১. সরকারের সুবিধাভোগী রাজনৈতিক দলগুলোকে বয়কট করা। ১২. সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর, উপাসনালয়, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ পেশাগত কাজে হামলার ঘটনা ঠেকাতে সবাইকে সজাগ থাকা। ১৩. আরব আমিরাত, সৌদি আরবসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে আটক বাংলাদেশি রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের মুক্তির উদ্যোগ নিতে হবে। ১৪. আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতিকল্পে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হাত থেকে অস্ত্র উদ্ধার অভিযান শুরু করতে হবে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন খেলাফত মজলিসের নেতা আহমদ আলী কাসেমী, আবদুল্লাহ ফরিদ, জাহাঙ্গীর হোসাইন, মুহাম্মদ মুনতাসির আলী, ড. মোস্তাফিজুর রহমান ফয়সল, অধ্যাপক মো. আবদুল জলিল, মো. মিজানুর রহমান, মুহাম্মদ শায়খুল ইসলাম, হাজী নূর হোসেন, মাওলানা আজীজুল হক, ঢাকা মহানগরী উত্তর সভাপতি মাওলানা সাইফ উদ্দিন আহমদ খন্দকার, মো. আবুল হোসেন, মাওলানা মুহাম্মদ আজীজুল হক প্রমুখ।