নির্বাচনকে এখন ইলেকশন না বলে সিলেকশন বলা যায় এমন মন্তব্য করে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেছেন, নির্বাচনের নামে যা চলছে তাকে কোনোভাবেই নির্বাচন বলা যায় না।
মঙ্গলবার (১ আগস্ট) বনানী চেয়ারম্যান কার্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, যেহেতু নির্বাচন কমিশন সিলেকশন করবে না তাই নির্বাচন কমিশনকে আর সিলেকশন কমিশনও বলা যাবে না। সিলেকশন করা হবে সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে, ইলেকশন কমিশনের কাজ হবে সিলেকশনকে বৈধতা দেওয়া। তাই ইলেকশন কমিশনকে বলা যায় ইলেকশন ভেলিডেশন কমিশন। দলীয় লোকজন নিয়োগ দিয়ে নির্বাচন কমিশন করায়ত্ত করা হয়েছে- এমন অভিযোগ করে জি এম কাদের বলেন, সরকারের নির্দেশ শতভাগ বাস্তবায়ন করবে এমন লোকজন নিয়োগ দেওয়া হয়েছে নির্বাচন কমিশনে।
সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে নানা অনিয়মের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে ছিল দেশি ও বিদেশিরা। আগামীতে নির্বাচনের নামে এমন সিলেকশনে গেলে লাভ কী? বর্তমান সরকার তো তাদের অধীনের নির্বাচনের মডেল দেখিয়েছে। আওয়ামী লীগ নির্বাচন ব্যবস্থা সাজিয়েছে, যাতে তারাই নির্বাচিত হতে পারে। ইচ্ছামতো নির্বাচন ব্যবস্থা কায়েম রাখতে সরকার দমন পীড়ন চালু করেছে। দেশে এমন দমন-পীড়ন ও নির্মমতা কোনো সরকার করেনি।
ঋণের দায়ে জর্জরিত অর্থনীতি পঙ্গু করে, জোড়াতালি দিয়ে তারা আবারও ক্ষমতায় আসতে চাচ্ছে মন্তব্য করে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, মাদক বিক্রির সঙ্গে ক্ষমতাসীনরা জড়িত আছে। শিক্ষা ও সংস্কৃতি ধ্বংস করা হচ্ছে, ইতিহাস বিবৃত করা হচ্ছে। দেশের মানুষ অত্যন্ত বিক্ষুব্ধ। বিশ্ববাসী বর্তমান পরিস্থিতির দিকে কড়া নজর রাখছে।
আমরা মানুষের ভোটাধিকার চাই- এ কথা উল্লেখ করে জি এম কাদের বলেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত হলেই শাসক গোষ্ঠী জনগণের কাছে জবাবদিহিতা করতে বাধ্য হবে।
১৯৯১ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত ৫টি নির্বাচন হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এরমধ্যে পঞ্চম ও নবম নির্বাচন হয়েছে অনির্বাচিত ও অসাংবিধানিক সরকারের অধীনে। কিন্তু সেই নির্বাচন জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়েছে।
এখন আওয়ামী লীগের লাইনের লোক হলেই স্বাধীনতার পক্ষ আর আওয়ামী লীগের লাইনের বাইরে হলেই স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটা এক ধরনের প্রতারণা।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন পার্টির মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মুজিবুল হক চুন্নু এমপি। উপস্থিত ছিলেন প্রেসিডিয়াম সদস্য সাহিদুর রহমান টেপা, মীর আব্দুস সবুর আসুদ, হাজী সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন, রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, নাজমা আক্তার, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা শেরিফা কাদের প্রমুখ।
মন্তব্য করুন