‘আয়াতুল কুরসি’ হলো সুরা বাকারার ২৫৫ নম্বর আয়াত। এটি আল্লাহর একত্ব, জ্ঞান, শক্তি এবং সার্বভৌমত্বের অনন্য ঘোষণা। আল্লাহর গুণাবলি নিয়ে এত বিস্তৃত ও গভীর বর্ণনা আর কোনো একক আয়াতে পাওয়া যায় না। এজন্যই মহানবী (সা.) একে কোরআনের সর্বশ্রেষ্ঠ আয়াত বলেছেন।
যে কোনো সময়ই আয়াতুল কুরসি পাঠ করা অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ আমল। তবে হাদিসে বিশেষ তিন সময়ে আয়াতুল কুরসি পাঠ করার বিশেষ ফজিলত ও ফায়েদার কথা বর্ণিত হয়েছে।
১. প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর আয়াতুল কুরসি পাঠ করুন
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর আয়াতুল কুরসি পাঠ করবে, তার জান্নাতে প্রবেশের পথে মৃত্যু ছাড়া আর কোনো অন্তরায় থাকবে না। (সুনানে নাসাঈ : ১৪৪৩)
২. সকালে ও সন্ধ্যায় আয়াতুল কুরসি পাঠ করুন
উবাই ইবনে কাব (রা.) থেকে বর্ণিত, যে ব্যক্তি সকালে আয়াতুল কুরসি পাঠ করবে সে সন্ধ্যা পর্যন্ত জিনের ক্ষতি থেকে হেফাজতে থাকবে এবং যে ব্যক্তি সন্ধ্যায় আয়াতুল কুরসি পাঠ করবে, সে সকাল পর্যন্ত জিনের ক্ষতি থেকে হেফাজতে থাকবে। (মুসতাদরাকে হাকেম : ১/৭৪৯)
৩. রাতে ঘুমানোর আগে আয়াতুল কুরসি পাঠ করুন
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, কেউ যদি রাতে শোয়ার সময় আয়াতুল কুরসি পাঠ করে, তাহলে সকাল পর্যন্ত আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে তার জন্য একজন হেফাজতকারী থাকে এবং শয়তান তার কাছে যেতে পারে না। (বোখারি : ৫০১০)
আয়াতুল কুরসি আরবি
اللّهُ لاَ إِلَـهَ إِلاَّ هُوَ الْحَيُّ الْقَيُّومُ لاَ تَأْخُذُهُ سِنَةٌ وَلاَ نَوْمٌ لَّهُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الأَرْضِ مَن ذَا الَّذِي يَشْفَعُ عِنْدَهُ إِلاَّ بِإِذْنِهِ يَعْلَمُ مَا بَيْنَ أَيْدِيهِمْ وَمَا خَلْفَهُمْ وَلاَ يُحِيطُونَ بِشَيْءٍ مِّنْ عِلْمِهِ إِلاَّ بِمَا شَاء وَسِعَ كُرْسِيُّهُ السَّمَاوَاتِ وَالأَرْضَ وَلاَ يَؤُودُهُ حِفْظُهُمَا وَهُوَ الْعَلِيُّ الْعَظِيمُ
বাংলা উচ্চারণ : আল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা হুওয়াল হাইয়্যুল ক্বাইয়্যুম। লা তাঅ খুযুহু সিনাতুঁও ওয়া লা নাওম। লাহু মা ফিস্ সামাওয়াতি ওয়া মা ফিল আরদ্বি। মান যাল্লাজি ইয়াশফাউ ইনদাহু ইল্লা বিইযনিহি। ইয়া’লামু মা বাইনা আইদিহিম ওয়া মা খালফাহুম, ওয়া লা ইউহিতুনা বিশাইয়্যিম্ মিন ইলমিহি ইল্লা বিমা শাআ, ওয়াসিআ কুরসিইয়্যুহুস্ সামাওয়াতি ওয়াল আরদ্বি ওয়া লা ইয়াউদুহু হিফজুহুমা ওয়া হুওয়াল আলিয়্যুল আজিম।
অর্থ : আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই, তিনি চিরঞ্জীব ও চিরস্থায়ী। তাঁকে তন্দ্রা স্পর্শ করতে পারে না, নিদ্রাও নয়। আকাশ ও পৃথিবীতে যা কিছু রয়েছে, সবকিছু তাঁরই। কে আছে এমন যে তাঁর কাছে তাঁর অনুমতি ছাড়া সুপারিশ করবে? তাঁদের সামনে কী আছে ও পিছনে কী আছে সবই তিনি জানেন এবং তিনি যা ইচ্ছা করেন তা ছাড়া তারা তাঁর জ্ঞানের কিছুই আয়ত্ত করতে পারে না। তাঁর কুরসি আকাশ ও পৃথিবীকে পরিবেষ্টিত করেছে এবং সেগুলো সংরক্ষণ করতে তাঁর কষ্ট হয় না। তিনিই সর্বোচ্চ ও মহান।
মন্তব্য করুন