চলমান ফিলিস্তিন-ইসরায়েল যুদ্ধ নিয়ে উত্তপ্ত হয়ে আছে বিশ্ব রাজনীতি। বিশেষ করে মুসলিম দেশগুলোতে তুঙ্গে উঠেছে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী মনোভাব। এমনকি ইসরায়েলকে সমর্থন দিয়ে বিপুল লোকসানের মুখও দেখেছে পশ্চিমা বড় বড় কোম্পানিগুলো। এমন পরিস্থিতি ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ যোদ্ধাদের নিয়ে এক বিতর্কিত টুইট করে বিপাকে পড়েছে বাংলাদেশের জনপ্রিয় ইসলামী বক্তা মিজানুর রহমান আল আজহারী।
মাইক্রোব্লগিং সাইট এক্স-এ গত বুধবার এক টুইট করেন মালয়েশিয়াপ্রবাসী জনপ্রিয় বক্তা মিজানুর রহমান আল আজহারী। সেখানে গেল ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের অভ্যন্তরে ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের পরিচালিত অপারেশন আল আকসা ফ্লাডের সমালোচনা করেন তিনি।
বিতর্কিত সেই টুইটে আজহারী ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের সাম্প্রতিক হামলার নিন্দা জানিয়ে নিরপরাধ জীবনকে হুমকিতে ফেলে এমন সহিংসতার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান। এ সময় অবিলম্বে ইসরায়েলি বন্দিদের মুক্তির দাবিসহ মুসলিম ও ইহুদিদের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের গুরুত্বের উপর জোর দেন তিনি। মিজানুর রহমান দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধানের ওপর জোর দিয়ে উভয়পক্ষের বেসামরিক নাগরিকদের হত্যা বন্ধ করার কথা বলেন। জানান, ভবিষ্যতে মুসলিম ও ইহুদিদের মধ্যে বোঝাপড়া এবং সহানুভূতি প্রচার করে সম্প্রীতি বজায় রাখার কথা।
এ টুইটের পরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার সমালোচনায় মুখর হয়ে উঠে ফিলিস্তিনপন্থীরা। তারা এ টুইটকে ইসরায়েলের মতবাদ প্রচারের ইঙ্গিত হিসেবে গণ্য করে যেখানে স্বাধীন ফিলিস্তিন ও স্বাধীনতার দাবিকে ছোট করা হয়। সমালোচকরা আজহারীর এই টুইট প্রসঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন ধরণের মন্তব্য করতে থাকেন।
জনপ্রিয় এক লেখক তার টুইট প্রসঙ্গে লিখেন ‘আজহারি সাহেব কি মাদখালিজমে দীক্ষা নিছেন, নাকি ইসরায়েলি লবির কাছে আত্মসমর্পণ করছেন?’ আরেক ফেসবুক ব্যবহারকারী তার টুইট ও পরবর্তীতে ক্ষমা চাওয়া স্ট্যাটাস নিয়ে লিখেছেন, খোদা ভি খুশ রাহে, শয়তান ভি নারাজ না রাহে। আজহারি ইসরায়েলকেও কেও খুশি রাখলেন, ভক্তবৃন্দকেও বশে রাখলেন। ফেসবুকে আরেক ব্যবহারকারী বলেন, একজন ব্যক্তি তার আসল পরিচয় মানে ভিতরকার সত্যিকার চরিত্র-ব্যক্তিত্ব কোন না কোন সময়ে প্রকাশ করবেই। সাধারণত এটা হয়ে থাকে সংকটকালীন আর চ্যালেঞ্জিং সময়ে। যেমন ইসরায়েল ইস্যুতে অত্যন্ত অগভীর জ্ঞানের অধিকারী মৌলভি আজহারী তার সত্যিকার পরিচয় প্রকাশ করেছেন।
এমন সমালোচনার মুখে এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে মিজানুর রহমান আল আজহারী জানান, ব্যক্তিগতভাবে তিনি কখনো টুইটার চালাইনি। তিনি শুধু তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজটি চালান। কয়েকদিন আগে অপর ব্যক্তিকে তার টুইটার ভেরিফাই করার দায়িত্ব দেওয়া হলে ওই ব্যক্তি এসব টুইট করে। বিতর্কিত ওই টুইটকে মিসলিডিং টুইট দাবি করে দেখা মাত্রই সেটি ডিলিট করতে বলেন তিনি। এ সময় অনাকাঙ্ক্ষিত ভুল বোঝাবুঝির জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন মিজানুর রহমান আল আজহারী। বলেন, প্রশ্নাতীতভাবে ফিলিস্তিন ইস্যু আমাদের হৃদয়ের ইস্যু, ইমানের ইস্যু। আমরণ আমরা হৃদয়ে আক্বসাকে ধারণ করে যাব ইনশাআল্লাহ।
মন্তব্য করুন