ইতালির সান সিরো স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার রাতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের এক অবিশ্বাস্য সেমিফাইনাল ম্যাচে বার্সেলোনা ৪-৩ গোলে হেরে বিদায় নিয়েছে ইন্টার মিলানের কাছে। তবে ম্যাচের ফলাফলের চেয়েও বেশি আলোচনায় এখন ম্যাচ পরিচালনা নিয়ে বিতর্ক—যার কেন্দ্রে বার্সেলোনা কোচ হান্সি ফ্লিকের ক্ষোভ ও রেফারির একের পর এক সিদ্ধান্ত।
বার্সেলোনা ম্যাচে ২-০ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়েও অসাধারণভাবে ঘুরে দাঁড়ায়। ৮৭ মিনিটে রাফিনহার গোলে ৩-২ তে এগিয়ে যায় কাতালানরা। যখন মনে হচ্ছিল ১০ বছর পর আবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে ফিরছে বার্সা, তখনই অতিরিক্ত সময়ের অন্তিম মুহূর্তে ফ্রানচেসকো আচেরবির গোলে ম্যাচে ফিরে আসে ইন্টার। এরপর এক্সট্রা টাইমে বদলি খেলোয়াড় দাভিদে ফ্রাত্তেসির গোলে ৪-৩ ব্যবধানে জয় নিশ্চিত করে ইন্টার মিলান।
তবে ম্যাচ শেষে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় আসে রেফারির কিছু বিতর্কিত সিদ্ধান্ত। কোচ ফ্লিক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আমি রেফারি নিয়ে বেশি কিছু বলতে চাই না, কিন্তু যেকোনো ৫০-৫০ সিদ্ধান্তই ইন্টারের পক্ষে গেছে।’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘আমি আমার দল নিয়ে হতাশ নই। ওরা সব কিছু দিয়েছে। আমি শুধু দুঃখিত, কারণ এমন কিছু সিদ্ধান্ত আমাদের স্বপ্ন ভেঙে দিল।’
বিশেষ করে দুটি সিদ্ধান্তে ফ্লিক সবচেয়ে বেশি ক্ষুব্ধ। একটি ছিল পাউ কুবার্সির বিরুদ্ধে দেওয়া পেনাল্টি, আরেকটি ছিল লামিন ইয়ামালকে বক্সে ফাউল করার পরও শুধুমাত্র ফ্রি-কিক দেওয়া। এ ছাড়াও, আচেরবির একটি সম্ভাব্য হ্যান্ডবলের আবেদন এবং ডেনজেল ডুমফ্রিজের একটি ফাউল—যেটি থেকে ইন্টার গোল করে—সবই বার্সা খেলোয়াড়দের অসন্তোষের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
বার্সেলোনা কোচ বলেন, ‘আমরা শিখব এই হারের থেকে। এটা একটি যাত্রার অংশ। আমরা শিরোপা জিততে চাই, এবং এখন সামনে রয়েছে লা লিগা যেখানে একটি বড় ম্যাচ আমাদের অপেক্ষায়—এল ক্লাসিকো।’
রোববার ঘরের মাঠে রিয়াল মাদ্রিদের মুখোমুখি হবে বার্সেলোনা, যারা পয়েন্ট টেবিলে মাত্র চার পয়েন্ট পিছিয়ে। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে বিদায়ের ক্ষত এখন লা লিগায় সাফল্যের মাধ্যমে পূরণ করতে চায় কাতালানরা।
শেষ কথা হিসেবে, হান্সি ফ্লিক বলেন, ‘আমার খেলোয়াড়েরা যখন বাড়ি যাবে, আয়নায় তাকিয়ে নিজের ওপর গর্ব করতে পারবে। কারণ ওরা সাহসের সঙ্গে লড়েছে। আমরা ম্যাচ বিশ্লেষণ করব এবং দেখব কীভাবে আরও ভালো করা যায়।’
এমন হারের পর বার্সেলোনার সামনে এখন শুধুই ঘুরে দাঁড়ানোর চ্যালেঞ্জ। তবে একটুখানি ভাগ্য যদি তাদের পক্ষে থাকত, তাহলে হয়তো কাতালান শিবিরে এখন উদযাপনের রাত হতো।
মন্তব্য করুন