উইম্বলডন গ্যালারিতে উপস্থিত দর্শকের একাংশের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নোভাক জোকোভিচ। প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালের শুরু থেকেই হোলগার রুনের পক্ষ নিয়ে ব্যাপক চিৎকার করছিলেন দর্শকদের একাংশ। সেটা বিদ্রুপ মনে করে ম্যাচ শেষে রাগ ঝেড়েছেন জোকোভিচ।
তবে তার আগে এমন আগ্রাসী টেনিস খেলেছেন যে, প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালের প্রতিপক্ষ দাঁড়াতেই পারেননি। হোলগার রুনেকে ৬-৩, ৬-৪, ৬-২ গেমে উড়িয়ে দিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছেন তিনি। প্রি-কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায় নিয়েছেন জার্মান তারকা আলেকজান্ডার ভেরেভও। তিন ঘণ্টা ২৯ মিনিটের ম্যারাথন লড়াই শেষে টেইলর ফ্রিতজের কাছে হেরেছেন তিনি।
উইম্বলডনে অষ্টম শিরোপা জয়ের জন্য খেলছেন জোকোভিচ। টুর্নামেন্ট শুরুর আগে তার হাঁটুর অপারেশন হয়েছিল। ফলে ভালো খেলতে পারবেন কি না, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়। প্রথম দুই রাউন্ড শেষে সে সংশয় টেমস নদীতে ছুড়ে ফেলেন জোকার। শুরুতে কয়েকটা সেট হারলেও সোমবার রাতে প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালে সেরা ফর্মের জোকোভিচকেই দেখা গেছে। দর্শকদের বিদ্রুপই কি তাকে তাতিয়ে দিয়েছিল। ম্যাচ শেষে সার্বিয়ান তারকা বলেন, ‘যে সমর্থকরা সম্মান জানিয়ে এখানে খেলা দেখতে এসেছিলেন, হৃদয় থেকে আমি তাদের ধন্যবাদ জানাই। আর যারা এসেছিলেন একজন খেলোয়াড়কে, এ ক্ষেত্রে সে খেলোয়াড়টি আমি, বিদ্রুপ করার জন্য, তাদের গুড নাইট (শুভরাত্রি)।’
সঞ্চালক বলার চেষ্টা করেন, ‘রুনের জন্য সমর্থকরা চিৎকার করছিলেন। আপনাকে অসম্মান করা হয়নি।’
জোকোভিচ তখন দৃঢতার সঙ্গে বলেন, ‘দর্শকরা বিদ্রুপ করছিলেন। এটা আমি মেনে নিতে পারব না। একদমই মানব না। আমি জানি তারা রুনের জন্য চিৎকার করছিলেন। কিন্তু সেটা অজুহাত মাত্র। আমি ২০ বছর ধরে খেলছি। এসব আমার জানা আছে। কীভাবে বিদ্রুপ করা হয় জানি। আমি সেসব দর্শককে সম্মান দিতে চাই, যারা টিকিট কেটে টেনিসকে ভালোবেসে খেলা দেখতে এসেছেন। আমি এর চেয়েও খারাপ পরিস্থিতিতে খেলেছি। আপনারা আমাকে ছুঁতেও পারবেন না। তবে উইম্বলডন কর্তৃপক্ষের এখানে কিছু করার আছে বলে মনে হয় না। কেউ খারাপ ব্যবহার করছে বলে তারা তো আর দর্শকদের গ্যালারি থেকে করে দিতে পারবেন না।’
ক্যারিয়ারে ২৪টি গ্র্যান্ডস্লাম জিতেছেন জোকোভিচ। এর মধ্যে উইম্বলডনে ৭ বার শিরোপা জিতেছেন। এবার জিতলে ৮টি উইম্বলডন নিয়ে তিনি কিংবদন্তি রজার ফেদেরারকে ছুঁয়ে ফেলবেন। ফরাসি ওপেনের মাঝপথে ইনজুরির কারণে সরে যাওয়া জোকোভিচ ঘাসের কোর্টে দারুণ টেনিস খেলছেন।
এদিকে পুরুষ এককের অন্য ম্যাচে ভেরেভকে ৪-৬, ৬-৭, ৬-৪, ৭-৬, ৬-৩ গেমে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছেন ফ্রিতজে। ম্যাচের সময় হাঁটুর ব্যথায় ভুগছিলেন জার্মান তারকা ভেরেভ। ম্যাচ শেষে দারুণ জয় পাওয়া ফ্রিতজে বলেন, ‘সেন্টার কোর্টে দুই সেটে পিছিয়ে পড়ার পর এমন জয় সত্যি স্বপ্নের মতো। তা ছাড়া প্রতিপক্ষের হয়ে দর্শকরা যা চিৎকার করছিল। প্রথম যে দুই সেটে আমি হেরেছি সেখানেও আমি ভালো খেলেছিলাম। তা সত্ত্বেও পিছিয়ে পড়ার পর তৃতীয় সেট যে কোনোভাবে জিতে ঘুরে দাঁড়াতে চেয়েছিলাম। শেষ পর্যন্ত তা করতে পেরেছি।’
মন্তব্য করুন