এশিয়ান গেমসের অফিসিয়াল সংবাদ সম্মেলনে প্রত্যাশা-প্রাপ্তির প্রশ্নে বারবার উচ্চারিত হয়েছে ‘কাবাডি’। জাতীয় খেলার দুই বিভাগে পদকের প্রত্যাশার কথা জানানো হয়েছিল। শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে ব্রোঞ্জ জয়ের মাধ্যমে মেয়েরা সেই প্রত্যাশা পূরণ করেছে। এটিই এশিয়ান গেমসের ইতিহাসে বাংলাদেশের প্রথম পদক।
বাহরাইনের মানামা শহরের ঈসা স্পোর্টস সিটিতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে গেমসের কাবাডি। অনূর্ধ্ব-১৮ বয়স বিভাগের নারী কাবাডির আগের ম্যাচগুলোতে প্রবল প্রতিরোধের মুখে পড়তে হয়েছিল বাংলাদেশকে। ভারত, ইরান ও থাইল্যান্ডের কাছে হারের কারণে পদক হাতছাড়া হওয়ার ঝুঁকিতে ছিল লাল-সবুজরা। সে ঝুঁকি এড়াতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয়ের বিকল্প ছিল না। দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া অবস্থায় লঙ্কানদের বিপক্ষে শুরু থেকেই বাংলাদেশ ছিল মরিয়া, ছেড়ে কথা বলেনি প্রতিপক্ষ দলও। প্রথমার্ধে বাংলাদেশ ২৫-১৮ পয়েন্টে এগিয়ে ছিল। বিরতির পর শ্রীলঙ্কা শক্তিশালী রূপে ফিরে আসে। তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ লড়াইয়ে এ অর্ধের স্কোরলাইন ছিল ২২-২২। ম্যাচের চূড়ান্ত স্কোরলাইন ছিল ৪৭-৪০।
পদক জয়ের পর বাংলাদেশ কাবাডি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক এস এম নেওয়াজ সোহাগ বাহরাইন থেকে কালবেলাকে বলেন, ‘এশিয়ার অন্যান্য দেশ কাবাডিতে গুরুত্ব দিচ্ছে, বিশাল বিনিয়োগও করছে। এ কারণে খেলাটিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতাও বাড়ছে। মেয়েদের কৃতিত্ব দিতে হয় যে তারা প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশে দেশকে প্রথম পদক এনে দিয়েছে।’
কাবাডির সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, ‘আমি বরাবরই বলে আসছি—বৈশ্বিক কাবাডি দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। তার সঙ্গে তাল মেলাতে হলে সবকিছু ঢেলে সাজানোর বিকল্প নেই। দেশের কাবাডির নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে আমরা সে চেষ্টাই করে যাচ্ছি। তৃণমূল কার্যক্রমে গতিশীলতা আনতে না পারলে প্রতিযোগিতামূলক বিশ্ব কাবাডিতে টিকে থাকা কঠিন। বাংলাদেশের কাবাডিতে সম্ভাবনা আছে। প্রয়োজন সরকারি সহযোগিতা।’
২০০৯ সালে সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত প্রথম যুব এশিয়ান গেমসে ৪ ডিসিপ্লিনে ১২ ক্রীড়াবিদ এবং ২০১৩ সালে চীনের নানজিংয়ে ৮ ডিসিপ্লিনে ১৯ জনের কন্টিনজেন্ট অংশগ্রহণ করেছে। দুই আসর থেকেই ফিরতে হয়েছে শূন্য হাতে। এবারের গেমসে ২৬ ডিসিপ্লিনের ১৩টিতে খেলছে বাংলাদেশ, কন্টিনজেন্টের আকার ৮১ জনের। বড় বহরের মধ্যে কাবাডি, কুস্তি ও গলফে পদকের আশা করা হচ্ছে; ভারোত্তোলনেও ভালো কিছু হতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।
মেয়েদের কাবাডিতে পদকের প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে। ছেলেদের বিভাগে আরও ভালো কিছুর প্রত্যাশা করা হচ্ছে। কারণ এরই মধ্যে বাংলাদেশ এশিয়ার অন্যতম সেরা দল ইরানকে হারিয়ে দিয়েছে। মেয়েদের বিভাগে শ্রীলঙ্কাকে হারানোর আগে বাংলাদেশ ভারতের কাছে ৪৬-১৮, থাইল্যান্ডের কাছে ৩৮-৩০ এবং ইরানের কাছে ৩৩-১৯ পয়েন্টে হেরেছে।
মন্তব্য করুন