সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে পশ্চিম আফ্রিকার দেশ নাইজারের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বাজুমকে উৎখাতের পর নিজেকে রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে ঘোষণা করেছেন প্রেসিডেন্সিয়াল গার্ডের প্রধান জেনারেল আবদোরাহমানে চিয়ানি।
ফরাসি সংবাদমাধ্যম এএফপির খবরে বলা হয়েছে, গতকাল শুক্রবার (২৮ জুলাই) সরকারি টেলিভিশনে দেওয়া এক বক্তব্যে নিজেকে দেশের জাতীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ঘোষণা করেন জেনারেল আবদোরাহমানে। গতকাল বৃহস্পতিবারের সামরিক অভ্যুত্থানের প্রেসিডেন্ট বাজুমকে উৎখাতের একদিনের মাথায় এ ঘোষণা দিলেন তিনি।
দেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতির কারণে তারা এ অভ্যুত্থান করেন বলেও দাবি করেছেন এই জেনারেল। এমনকি তাদের অভ্যুত্থানকে সেনাবাহিনীও সমর্থন দিয়েছে।
আরও পড়ুন : নাইজারে প্রেসিডেন্টকে উৎখাতের পর দলীয় কার্যালয়ে আগুন
এ সময় দেশের ভেতরে বিদেশি সামরিক বাহিনীর হস্তক্ষেপের বিষয়েও সতর্ক করেন তিনি। তিনি বলেন, ‘কয়েকজন ব্যক্তি পাল্টা সংঘাতের কথা ভাবছেন। এগুলো গণহত্যা ও বিশৃঙ্খলা ছাড়া অন্য কিছু বয়ে আনবে না।’
গত বুধবার (২৬ জুলাই) প্রেসিডেন্ট বাজুমকে তার বাসভবনে অবরোধ করে রাখেন প্রেসিডেন্সিয়াল গার্ডের বিদ্রোহী সদস্যরা। আটকের পরের দিন বৃহস্পতিবার সামরিক অভ্যুত্থানের ঘোষণা দেন তারা। এরপরই দেশটিতে সেনা অভ্যুত্থানের পক্ষে-বিপক্ষে সমাবেশ করতে থাকেন সাধারণ মানুষ। এমনকি সমাবেশ থেকে প্রেসিডেন্টের দলের প্রধান কার্যালয়ে আগুন দিয়েছে সামরিক অভ্যুত্থানের সমর্থকরা।
অভ্যুত্থানের তিন দিন হয়ে গেলেও এখনো প্রেসিডেন্টের বাসভবনে বন্দি আছেন বাজুম। প্রেসিডেন্সিয়াল গার্ডের সেনাশিবিরে প্রেসিডেন্টের বাসভবন অবস্থিত।
সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হচ্ছে, তিনি এখনো সুস্থ আছেন। এমনকি টেলিফোনে বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন।
৬৪ বছর বয়সি বাজুম দুই বছর আগে নাইজারের প্রসিডেন্ট নির্বাচিত হন। তিনি পশ্চিম আফ্রিকায় জঙ্গিদের বিরুদ্ধে পশ্চিমা মিত্রদের লড়াইয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছিলেন।
এর আগে ২০২১ সালের মার্চে দেশটিতে সেনাবাহিনী অভ্যুত্থানের চেষ্টা করে। প্রেসিডেন্ট হিসেবে বাজুমের শপথ নেওয়ার কয়েকদিন আগেই সেনাবাহিনীর একটি অংশ অভ্যুত্থানের এ ব্যর্থ চেষ্টা করে।
এদিকে সেনা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বাজুমকে ক্ষমতাচ্যুতের ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্সসহ আরও বেশ কয়েকটি দেশ। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেন বলেন, বাজুমের পাশে যুক্তরাষ্ট্র থাকবে।
অন্যদিকে জাতিসংঘ দেশটি থেকে তাদের মানবিক সহায়তা কার্যক্রম স্থগিত করেছে। তবে অভ্যুত্থানের কারণে এটি স্থগিত করা হয়েছে কি না, তা এখনো অস্পষ্ট রয়েছে। যদিও জাতিসংঘ এর আগে জানিয়েছিল, নাইজারে ৪০ লাখের বেশি মানুষের মানবিক সহায়তা প্রয়োজন।
মন্তব্য করুন