দক্ষিণ এশিয়ায় দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশের মধ্যকার সম্ভাব্য যুদ্ধ থামাতে হস্তক্ষেপ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
তিনি ভারত ও পাকিস্তানকে সরাসরি হুমকি দিয়েছিলেন—যদি সংঘাত অব্যাহত থাকে, তাহলে তাদের উভয়ের সাথেই যুক্তরাষ্ট্র সব ধরনের বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্ন করবে। খবর দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।
সোমবার (১২ মে) হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প বলেন, আমাদের প্রশাসন ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে তাৎক্ষণিক ও পূর্ণ যুদ্ধবিরতিতে মধ্যস্থতা করেছে। আমি মনে করি এটি একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতি।
তিনি আরও বলেন, এর ফলে দুটি পারমাণবিক শক্তিধর দেশের মধ্যে একটি বিপজ্জনক যুদ্ধের অবসান ঘটেছে।
দুই দেশের পাল্টাপাল্টি হামলা, কাশ্মীর ইস্যু এবং সীমান্ত উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে যখন পরিস্থিতি উদ্বেগজনক হয়ে ওঠে, তখন ট্রাম্প প্রশাসন হস্তক্ষেপ করে। ট্রাম্পের ভাষ্য অনুযায়ী, ভারত ও পাকিস্তান ‘সহজে থামতে যাচ্ছিল না।’ তখনই যুক্তরাষ্ট্র কৌশলে তাদের চাপে ফেলে।
ট্রাম্প বলেন, আমি বলেছিলাম—তোমাদের সঙ্গে আমরা অনেক ব্যবসা করি। যদি (লড়াই) বন্ধ করো, তাহলে আমরা ব্যবসা চালিয়ে যাব। না হলে আমরা আর তোমাদের সঙ্গে কোনো ব্যবসা করব না।
এই হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে দুই দেশই পিছু হটে এবং পরস্পরের প্রতি শান্ত বার্তা দেয়। ট্রাম্প দাবি করেন, বাণিজ্যের গুরুত্ব বুঝেই তারা যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্ত নেয়।
ট্রাম্প বলেন, আমরা ভারত ও পাকিস্তানের সঙ্গে অনেক বাণিজ্য করি। ভারতের সঙ্গে শুল্কসংক্রান্ত আলোচনা চলছে, পাকিস্তানের সাথেও শিগগিরই আলোচনা শুরু হবে। আরও বলেন, আমরা একটি ভয়াবহ পারমাণবিক যুদ্ধ বন্ধ করেছি। এতে লাখ লাখ মানুষ প্রাণ হারাতে পারত। আমি গর্বিত, আমেরিকা যুদ্ধ বন্ধ করেছে।
এর আগে শনিবার ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশ্যালে একটি পোস্ট দিয়ে জানান, ভারত ও পাকিস্তান পূর্ণাঙ্গ ও তাত্ক্ষণিক যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছেছে। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতার ভূমিকার বিষয়টি জোর দিয়ে তুলে ধরেন এবং দাবি করেন, দীর্ঘ আলোচনার পর এই সমঝোতা সম্ভব হয়েছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ট্রাম্পের এই কূটনৈতিক হুমকি একদিকে যেমন অর্থনৈতিক স্বার্থে টান পড়ার সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছিল, তেমনি দুই দেশের ওপর আন্তর্জাতিক চাপও বাড়ায়। ফলে, শেষ পর্যন্ত উত্তেজনার অবসান ঘটে।
মন্তব্য করুন