

বন্যা মানে শুধু জল, কাদা আর ধ্বংসস্তূপ নয় বরং অনেক ক্ষেত্রে একটি দীর্ঘশ্বাস। গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে এমনই এক নারকীয় পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দ্বীপরাষ্ট্রটিতে। চোখের পলকে ভেসে গেছে ঘরবাড়ি, চাষের উর্বর জমিগুলো চাপা পড়েছে পুরু কাদামাটির স্তূপের নিচে।
জীবন আর জীবিকা— দুটোই এখন রয়েছে চরম সংকটে। ড্রোন থেকে তোলা দৃশ্যে দেখা যায়, চারদিকে শুধু ধ্বংসের চিহ্ন।
কাদায় ডুবে থাকা বাড়িগুলো যেন মাটির সঙ্গে মিশিয়ে ফেলা হয়েছে। বড় বড় গাছের গুঁড়ি আর ভেঙে পড়া বিদ্যুতের খুঁটিগুলো ছড়িয়ে আছে মাঠ আর রাস্তার ওপর, যা পুরো যোগাযোগ ব্যবস্থাকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে।
অসহায় মানুষজন কোমর-সমান কাদার মধ্যে দিয়ে হেঁটে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ঘুরছে। এই আকস্মিক বন্যায় সবকিছু হারানো মানুষগুলো এখন ঠাঁই নিয়েছে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে। তাদের কাছে প্রয়োজনীয় ত্রাণ পৌঁছানো এখন কঠিন হয়ে পড়েছে।
বালি থেকে আসা নাতাশা নামের এক সাহায্যকারী জানান, দুর্ঘটনার কয়েক দিন পরও যখন সহায়তা পৌঁছায়নি, তখন তাঁরা ব্যক্তিগত উদ্যোগে একটি জরুরি রান্নাঘর চালু করেছেন। এই মহৎ উদ্যোগে তারা নিজেদের তহবিল এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অনুদান ব্যবহার করছেন।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াজুড়ে চলা এই দীর্ঘ ও প্রলম্বিত বর্ষণজনিত দুর্যোগে প্রাণ হারিয়েছে ১ হাজার ১০০ জনেরও বেশি মানুষ। এর মধ্যে শুধু ইন্দোনেশিয়াতেই মৃতের সংখ্যা ৬০০ ছাড়িয়ে গেছে। প্রতি বছর অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত ইন্দোনেশিয়ার ১৭ হাজার দ্বীপে মৌসুমি বৃষ্টিপাত হয়, যা বন্যা ও ভূমিধস ঘটায়।
এবারের বিপর্যয় আরও ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। এই ভয়াবহ ধ্বংসলীলাটির চিত্র সবচেয়ে বেশি চোখে পড়ছে পশ্চিম সুমাত্রার সোলোক এলাকায়।
মন্তব্য করুন