কৃষ্ণসাগরে রাশিয়ার একটি তেলের ট্যাংকারে নৌ-ড্রোনের মাধ্যমে ইউক্রেন হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন রুশ কর্মকর্তারা। গতকাল শুক্রবার মধ্যরাতে কের্চ প্রণালিতে এ হামলা হয়েছে।
এই কের্চ প্রণালি কৃষ্ণসাগর ও আজভ সাগরকে সংযুক্ত করেছে। একই সঙ্গে এটি ক্রিমিয়াকে রাশিয়ার তামান উপদ্বীপ থেকে পৃথক করেছে। আজ শনিবার (৫ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, ইউক্রেনের এই হামলার সময় রুশ নৌযানে ১১ জন নাবিক ছিলেন। তারা কেউ হতাহত হয়নি। তবে হামলায় নৌযানের ইঞ্জিন রুম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
হামলার বিষয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করেনি কিয়েভ। তবে দেশটির নিরাপত্তা সংস্থার একটি সূত্র বিবিসিকে জানিয়েছে, হামলায় তারা নৌ-ড্রোন ব্যবহার করেছেন। এ সময় নৌ-ড্রোনে ৪৫০ কেজি টিএনটি বিস্ফোরক ছিল। আর ট্যাংকারে তেল লোড করা ছিল। এ জন্য এতে আগুন ধরে যায়।
আরও পড়ুন : এবার রুশ নৌ-ঘাঁটিতে ইউক্রেনের ড্রোন হামলা
নভোরোসিয়েস্ক বন্দর মেরিন রেসকিউ কোঅর্ডিনেশন সেন্টারের (এমআরসিসি) এক মুখপাত্র রুশ বার্তা সংস্থা তাসকে বলেন, নাবিকরা নিরাপদ আছেন। তাদের কেউ আহত হয়নি। ইঞ্জিন রুম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে বেশি নয়।
তিনি আরও জানান, দুটি টাগবোট এরই মধ্যে ঘটনাস্থলে গেছে। উদ্ধারকর্মীরা ক্ষতিগ্রস্ত ট্যাংকারের ক্ষয়ক্ষতি পর্যবেক্ষণ করে দেখছেন।
এর আগে গতকাল ভোরে কৃষ্ণসাগরের রাশিয়ার অন্যতম প্রধান বন্দর নভোরোসিস্কের কাছের একটি রুশ নৌঘাঁটিতে ড্রোন হামলা চালিয়েছিল ইউক্রেন। তবে হামলায় ব্যবহৃত সব ইউক্রেনীয় ড্রোন ভূপাতিত করা হয়েছে বলে দাবি করে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।
ক্যাস্পিয়ান পাইপলাইন কনসোর্টিয়ামের বরাতে রয়টার্স জানায়, এ হামলার পরপর বন্দরে সাময়িক সময়ের জন্য সব ধরনের জাহাজ চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়।
রাশিয়ার নেটিজেনরা বলছেন, শুক্রবার ভোরে তারা নভোরোসিস্ক বন্দরের কাছে বিস্ফোরণ ও গোলাগুলির শব্দ শুনতে পেয়েছেন। যদি এমনটা হয়ে থাকে তাহলে এটাই রাশিয়ার অন্যতম প্রধান বাণিজ্যিক বন্দরে ইউক্রেনের প্রথম হামলা।
গত মাসে শস্যচুক্তি থেকে রাশিয়া সরে যাওয়ার পর কৃষ্ণসাগর ও আশপাশের বন্দরে একের পর এক ড্রোন হামলার ঘটনা ঘটে চলেছে। ২০২২ সালের জুলাইয়ে রাশিয়া-ইউক্রেনের মাঝে জাতিসংঘ ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় কৃষ্ণসাগর শস্যচুক্তি হয়। এ চুক্তির আওতায় ইউক্রেন এতদিন কৃষ্ণসাগর দিয়ে বিনা বাধায় শস্য রপ্তানি করে আসছিল। তবে মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় ১৭ জুলাই এ চুক্তি থেকে বেরিয়ে যায় রাশিয়া।
মন্তব্য করুন