রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভাড়াটে যোদ্ধা ওয়াগনার গ্রুপের বিদ্রোহ থামাতে মধ্যস্থতা করেছেন বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজেন্ডার লুকাশেঙ্কো। প্রিগোজিনকে রাজি করাতে ফৌজদারি অভিযোগ তুলে নেওয়া ছাড়া আর কি প্রস্তাব দিয়েছিলেন তিনি?
গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, প্রিগোজিনের সাথে যখন আলাপ হয় তখন লুকাশেঙ্কো বলেছিলেন, রুশ বাহিনী তাকে পোকার মতো পিষে ফেলবে। মঙ্গলবার রাজধানী মিনস্কে প্যালেস অব ইন্ডিপেন্ডেন্সে এক অনুষ্ঠানে উপস্থিত কর্মকর্তাদের উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে এই তথ্য জানান বেলারুশের প্রেসিডেন্ট।
এ সময় ওয়াগনারের বিদ্রোহ নিয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও ইয়েভগেনি প্রিগোজিনের সঙ্গে কী কথা হয়েছিল, তাও তুলে ধরেন তিনি। লুকাশেঙ্কো বলেন, বিদ্রোহের সময় পুতিনকে ব্যস্ত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। এমনকি কীভাবে আলোচনা হতে পারে সেই পরিকল্পনাও তুলে ধরেছিলেন।
সেই আলোচনার পরই পুতিনের কাছে প্রিগোজিনের অবস্থান জানতে চান লুকাশেঙ্কো। জানতে পারেন, তিনি রাশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে রোস্তভ-অন-দন শহরে রয়েছেন। এরপরই যোগাযোগ শুরু করেন লুকাশেঙ্কো। প্যালেস অব ইন্ডিপেন্ডেন্সে অনুষ্ঠানে প্রিগোজিনকে একজন ‘বীর’ হিসেবে অভিহিত করেন লুকাশেঙ্কো।
লুকাশেঙ্কো বলেন, প্রিগোজিন রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু ও জেনারেল চিফ অব স্টাফ ভ্যালেরি গেরাসিমভকে তার হাতে তুলে দিতে বলেন। এমনকি পুতিনের সঙ্গেও দেখা করতে চান বলে জানান। জবাবে তার সব আবদার প্রত্যাখ্যান করেন লুকাশেঙ্কো।
বেলারুশের প্রেসিডেন্টের ভাষ্যমতে, তখন প্রিগোজিন তার কাছে ন্যায়বিচার চান। এমনকি মস্কো অভিমুখে যাত্রা করার কথাও তাকে জানিয়ে দেন প্রিগোজিন। ঠিক তখনই লুকাশেঙ্কো সতর্ক করে বলেন, এমন কিছু করলে মাঝপথেই রুশ সেনারা তাকে পোকার মতো পিষে মারবে।
গেল শুক্রবার বিদ্রোহ ঘোষণা করেন ওয়াগনারপ্রধান প্রিগোজিন। রুশ সামরিক নেতৃত্ব উৎখাতের দাবিতে পরদিন শনিবার ইউক্রেন সীমান্ত থেকে মস্কোর উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেন ওয়াগনার যোদ্ধারা। পরে লুকাশেঙ্কোর মধ্যস্থতায় বিদ্রোহ থেকে সরে আসেন প্রিগোজিন।
বিদ্রোহ থেকে সরে আসা নিয়ে প্রিগোজিনের সঙ্গে ক্রেমলিনের একটি সমঝোতা হয়। সমঝোতা অনুযায়ী, বিদ্রোহের জেরে প্রিগোজিনের বিরুদ্ধে করা মামলা তুলে নেওয়া হবে। ওয়াগনারের যোদ্ধাদের বিরুদ্ধেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। সেই প্রস্তাবের পরই বেলারুশে আশ্রয় নিয়েছেন ভাড়াটে যোদ্ধা ওয়াগনার গ্রুপের প্রধান।
মন্তব্য করুন