বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘ফিনজাল’ ভারতের তামিলনাড়ুর উপকূলের কাছাকাছি চলে এসেছে। যেকোনো সময় তা উপকূলে আঘাত হানতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এরই মধ্যে উপকূলবর্তী জেলাগুলো বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এ কারণে চেন্নাই বিমানবন্দরসহ আরও কয়েকটি বিমান সংস্থার কার্যক্রম বন্ধ করা হয়েছে।
শনিবার (৩০ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে আনন্দবাজার পত্রিকা।
এদিকে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় ফিনজাল কারইকাল ও মামাল্লাপুরম দিয়ে তামিলনাড়ু উপকূল অতিক্রম করবে। এ সময় বাতাসের গতিবেগ ৭০ থেকে ৮০ কিলোমিটার এবং ঝোড়ো হাওয়া ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার পর্যন্ত বেগে হতে পারে।
আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উপকূলের দিকে যত এগিয়ে আসছে, রাজ্যের উপকূলবর্তী জেলাগুলোতে বৃষ্টির পরিমাণ বাড়ছে। এরই মধ্যে ছয়টি জেলায় চূড়ান্ত সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
চেন্নাই বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রবল বৃষ্টি আর ঝোড়ো হাওয়া শুরু হওয়ায় সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত চেন্নাই বিমানবন্দর বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। চেন্নাইগামী বেশ কয়েকটি বিমানকে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ আরও জানিয়েছেন, শনিবার সকাল থেকে ২২টি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। ইন্ডিগো বিমান সংস্থা সাময়িকভাবে পরিষেবা বন্ধ করেছে বলে জানিয়েছে।
ফিনজালের প্রভাবে সোমবার পর্যন্ত তামিলনাড়ু, পদুচেরি, অন্ধ্রপ্রদেশ ও কর্নাটকের বেশ কিছু এলাকায় ভারী বৃষ্টির আশঙ্কায় সতর্কতা জারি করা হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে স্কুল-কলেজ ও অফিস-আদালত বন্ধ ঘোষণা করেছে তামিলনাড়ু সরকার। এ ছাড়া ট্রেন চলাচল ও বিমান ওঠানামা বন্ধ রয়েছে। দুর্যোগ মোকাবিলায় বিভিন্ন এলাকায় খোলা হয়েছে দুই হাজারের বেশি ত্রাণশিবির।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে শুধু বিমান পরিষেবাই নয়, লোকাল ট্রেন পরিষেবাও কিছুটা নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে বলে রেল সূত্র জানিয়েছে।
শুক্রবার থেকেই বৃষ্টি হচ্ছে চেন্নাইতে। শহরের ১৩৪টি এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। রোববার পর্যন্ত ৬২২ মিলিমিটার বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিস। শনিবার ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়ার সময় সর্বাধিক গতিবেগ হতে পারে ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার। তামিলনাড়ু ছাড়াও দক্ষিণ অন্ধ্রপ্রদেশ, কেরালা এবং অভ্যন্তরীণ কর্নাটকে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে সরকারি কর্মী ও তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার কর্মীদের শনিবার বাড়ি থেকে কাজ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া নিরাপত্তার স্বার্থে সরকারি পরিবহন স্থগিত রাখা হয়েছে। পদুচেরিতে সমুদ্রসৈকত আপাতত খালি করা হয়েছে এবং পর্যটকদের নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে ঘোষণা করা হচ্ছে।
মন্তব্য করুন