কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ০৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:০২ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

‘ক্ষমা করে দিও’, মৃত্যুর আগে ফিলিস্তিনির শেষ কথা

রিফাত রাদওয়ান। ছবি : সংগৃহীত
রিফাত রাদওয়ান। ছবি : সংগৃহীত

‘মা ক্ষমা করে দিও। মানুষকে সাহায্য করার এই পথ আমি বেছে নিয়েছি। সেনাবাহিনী চলে এসেছে।’ মৃত্যুর আগে মায়ের সঙ্গে এগুলোই ছিল রিফাত রাদওয়ানের শেষ কয়েকটি কথা। এবড়ো-থেবড়ো রাস্তায় অ্যাম্বুলেন্সের ভেতর বসে ভাঙা ভাঙা শব্দে বলা রাদওয়ানের এই কথাগুলো এখন তার মায়ের বুকে শেল হয়ে বিঁধছে। রাদওয়ান ছিলেন সেই হতভাগ্য ১৪ ফিলিস্তিনি প্যারামেডিকদের একজন, যারা ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে নিহত হয়েছিলেন।

সাহায্যের আবেদন পেয়ে রাফার রাস্তায় রাতের অন্ধকারেই বেরিয়ে পড়েছিলেন রেড ক্রিসেন্টের কয়েকজন সদস্য। কিন্তু ওই প্যারামেডিকরা জানতেন না, এই অন্ধকার রাতই তাদের জীবনের শেষ হবে। গত ২৩ মার্চ গাজা উপত্যকার দক্ষিণাঞ্চলে রাফার তেল আল-সুলতান এলাকায় প্যারামেডিকবাহী কয়েকটি অ্যাম্বুলেন্স থামায় ইসরায়েলি বাহিনী। এরপর থেকেই তাদের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। তবে সম্প্রতি একটি গণকবরে তাদের খোঁজ মেলে। জানা যায়, ইসরায়েলি বাহিনী তাদের বিনা উসকানিতে হত্যা করেছে।

এরপরই সেই কবরে অন্যদের সঙ্গে রাদওয়ানের মরদেহও পাওয়া যায়। সেখানেই খোঁজ মেলে রাদওয়ানের মোবাইল ফোনের। ওই মোবাইল ফোনে প্যালেস্টিনিয়ান রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি ৬ মিনিটি ৪২ সেকেন্ডের একটি ভিডিও খুঁজে পায়। শনিবার (৫ এপ্রিল) প্রকাশ করা সেই ভিডিও দেখে নিখোঁজ ওই প্যারামেডিকদের ভাগ্যে কী ঘটেছিল তা জানতে পারে পুরো বিশ্ব। ভিডিওয়ের পুরোটাজুড়ে ছিল বন্দুক হামলার শব্দ। চেয়েও মেলেনি সাহায্য। কাউকে কাউকে কালিমা পড়তে শোনা যায়।

ভিডিওটি নিউইয়র্ক টাইমস শেয়ার করলে মুহূর্তে ভাইরাল হয়। তাতে দেখা যায়, ইসরায়েলি বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর পরও বেশ কয়েকজন প্যারামেডিক বেঁচে ছিলেন। কিন্তু তাদের ভাগ্য প্রসন্ন ছিল না। এ ঘটনার প্রকৃত সত্য সামনে আসার পর পুরো বিশ্বে নিন্দার ঝড় ওঠে। ইসরায়েলি বাহিনী ওই প্যারামেডিকদের নিহত হওয়া নিয়ে যে দাবি করেছিল, তা সত্য নয় বলেও প্রকাশ্যে আসে। ওই অ্যাম্বুলেন্সে বেশ কয়েকজন ফিলিস্তিনি যোদ্ধা ছিল বলে ঘটনার কয়েক দিন পর দাবি করেছিল ইসরায়েলি বাহিনী। কিন্তু পরে জানা গেল, তাদের সবাই চিকিৎসাকর্মী।

প্যারামেডিকদের গাড়ি চলতে শুরু করার কিছুক্ষণ পরই তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে ইসরায়েলি বাহিনী। কিছুক্ষণ পর রাদওয়ানকে কালিমা পড়তে শোনা যায়। আস্তে আস্তে তার কণ্ঠস্বর ক্ষীণ হয়ে আসে। ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে কান্না আর চিৎকারের শব্দ শোনা যায়। তখন অন্যরাও কালিমা পড়ছিলেন। এ সময় গুলিবিদ্ধ রাদওয়ান মায়ের কাছে ক্ষমা চান। তিনি তখন আল্লাহর কাছে শহীদ হিসেবে তাকে গ্রহণের আবেদন জানান।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

ঘটনাপ্রবাহ: ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংঘাত
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

৫ লাখ ‘ওয়ার্ক পারমিট ভিসা’ দেবে ইতালি

জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে খেলাফত মজলিসের কর্মসূচি ঘোষণা

সমুদ্রতীরবর্তী ক্যাফেতে বোমা হামলা, বহু নিহত

ছবিতে প্রথমে কী দেখতে পাচ্ছেন, উত্তরই বলে দেবে আপনার কাছে কিসের গুরুত্ব বেশি

হোয়াটসঅ্যাপ বার্তার মাধ্যমে খেলোয়াড়দের ছাঁটাই করল আয়াক্স

জাতীয় ঐক্য অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি খালেদা জিয়া

ডিএসইর ভারপ্রাপ্ত এমডি আসাদুর রহমান

বাংলাদেশে টয়োটার নতুন উদ্যোগ, বিক্রয়োত্তর সেবায় থাকবে নিরবচ্ছিন্ন সুবিধা

সিরিয়াকে বড় সুখবর দিলেন ট্রাম্প

গবেষণা / অকালমৃত্যুর ঝুঁকিতে দেড় কোটি মানুষ

১০

শহীদ আবু সাঈদের কবর থেকে ‘জুলাই পদযাত্রা’ শুরু

১১

৯ শিক্ষার্থী নিয়ে ব্রহ্মপুত্র নদে ডুবে গেল নৌকা

১২

স্বৈরাচারের লক্ষণ দেখামাত্রই যেন বিনাশ করতে পারি: প্রধান উপদেষ্টা

১৩

শতবর্ষী কড়ই গাছের ভেতরে জ্বলছে আগুন

১৪

ঢালাইয়ের সময় ছাদের কার্নিশ ভেঙে পড়ে ৩ জনের মৃত্যু

১৫

‘প্রমাণিত হলো, আ.লীগ কখনোই শোধরাবে না’

১৬

সিন্ধু চুক্তি কার্যকর করতে ভারতকে আহ্বান পাকিস্তানের

১৭

সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর সতর্কসংকেত

১৮

আম্পায়ারদের মানোন্নয়নে ‘বিশ্বসেরা’ আম্পায়ারকে আনছে বিসিবি

১৯

শাহরুখ-অজয়ের সম্পর্ক নিয়ে এবার মুখ খুললেন কাজল

২০
X