অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার একটি হাসপাতালে ভয়াবহ ইসরায়েলি হামলার ঘটনায় শত শত মানুষ নিহতের ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। একই সঙ্গে তিনি গাজায় যুদ্ধ বন্ধে অবিলম্বে হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন। বুধবার চীনের বেইজিংয়ে বেল্ট অ্যান্ড রোড (বিআরআই) ফোরামে বক্তব্য দেওয়ার সময় এই আহ্বান জানান গুতেরেস। খবর আলজাজিরা ও সিএনএনের।
ফিলিস্তিনের গাজার আল-আহলি ব্যাপটিস্ট হাসপাতালে ইসরায়েলের বোমা হামলায় ৫০০ মানুষ নিহত হয়েছে। ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে রয়েছেন অনেকে। হামলার ঘটনায় নিহত মানুষের সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) রাতে এ হামলা চালানো হয়। এর আগে ইসরায়েলি হামলায় আহত শত শত রোগী ও গৃহহীন অসংখ্য মানুষ ‘নিরাপদ’ ভেবে ওই হাসপাতালে আশ্রয় নিয়েছিলেন।
গুতেরেস বলেছেন, গাজায় হাসপাতালে ভয়াবহ হামলায় আমি শঙ্কিত। ৫৬ বছরের (ইসরায়য়েলি) দখলদারি নিয়ে ফিলিস্তিনিদের ক্ষোভের বিষয়ে আমি পুরোপুরি সচেতন। তবে এই ক্ষোভ বেসামরিক মানুষের বিরুদ্ধে হামাসের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডকে ন্যায্যতা দিতে পারে না। গত ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার ঘটনার পরপরই আমি নিন্দা জানিয়েছি। তবে হামাসের হামলার কারণে ফিলিস্তিনি জনগণকে সম্মিলিতভাবে শাস্তির মুখোমুখি করা সেটাও ন্যায়সঙ্গত নয়। আমি এই অঞ্চলে অবিলম্বে মানবিক যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানাচ্ছি।
গাজার হাসপাতালে ইসরায়েলি ভয়াবহ হামলার ঘটনায় শুধু জাতিসংঘপ্রধান নয়, মানবাধিকার ও আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থাগুলোও তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। এ ছাড়া ইরান, তুরস্ক, জর্ডানসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সরকার-রাষ্ট্রপ্রধানরাও এই হামলার নিন্দা জানিয়েছে।
এই হামলার কারণে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জর্ডান সফর বাতিল করেছে আম্মান। ফলে এবারের মধ্যপ্রাচ্য সফরে আরব নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করতে পারছেন না মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
বুধবার জর্ডানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আয়মান সাফাদি বলেছেন, ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ এবং গণহত্যা বন্ধ করতে বিভিন্ন পক্ষ সম্মত হলে পরবর্তীতে এ বৈঠক হবে। একই সঙ্গে গাজায় হামলার মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যকে খাদের কিনারায় ঠেলে দেওয়ার জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করেছেন তিনি।
ইসরায়েল ও হামাসের যুদ্ধের মধ্যেই আজ বুধবার ইসরায়েল সফর করবেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এবারের এই মধ্যেপ্রাচ্য সফরে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর পাশাপাশি জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ, মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি ও ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গে বৈঠক করার কথা ছিল বাইডেনের।
মন্তব্য করুন