রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা চালানোর সাথে সাথে মস্কোর বিরুদ্ধে উঠেপড়ে লাগে পশ্চিমা বিশ্ব। পুতিন বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে কিয়েভে পাঠায় লাখ লাখ ডলারের অস্ত্র সহায়তা। কিন্তু ইসরায়েল যেভাবে গাজায় হামলা চালাচ্ছে তার বিরুদ্ধে কোনো আওয়াজ তুলছে না ইউরোপ-আমেরিকা। উল্টো সাফাই গাচ্ছে হামলার। এমনকি যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবের ভেটো দিচ্ছে আমেরিকা। এবার বার্লিনে পা রেখে জার্মান চ্যান্সেলরকে তুলাধুনা করলেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। বলেন, হাসপাতালে ঢুকে গুলি করা অথবা শিশুদের হত্যা করার নজির সভ্য সমাজে নেই। এ জন্য এই অঞ্চলে ইহুদি, খ্রিষ্টান ও মুসলমানদের মধ্যে কোনো বৈষম্য করা উচিত নয়। বলেন, তিনি সব ধর্মকেই সমানভাবে দেখেন। জার্মানিতে ইহুদি বিদ্বেষ অবৈধ। কারণ এ দেশটিতেই ইহুদিরা গণহত্যার শিকার হন। এরদোয়ান মনে করেন, এ জন্যই জার্মানি স্বাধীনভাবে ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ নিয়ে কথা বলতে পারছে না। জার্মানির চ্যান্সেলর শলৎজের উদ্দেশে এরদোয়ান বলেন, জার্মানি ইসরায়েলের কাছে দায়বদ্ধ। কারণ তারা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ইহুদিদের বিরুদ্ধে গণহত্যা চালিয়েছে। কিন্তু ইসরায়েলের প্রতি তুরস্কের কোনো দায় নেই। এ কারণে তারা প্রকাশ্যে যা খুশি তাই বলতে পারেন। শুক্রবার বার্লিনে জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজের সঙ্গে বৈঠকের পর এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। এর আগে গাজায় ইসরায়েলে যুদ্ধ নিয়ে সমালোচনা করায় এরদোয়ান জার্মানিতে পৌঁছানোর পর তোপের মুখে পড়েন। গেল ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালায় ফিলিস্তিনির স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এর পর থেকে নির্বিচারে বিমান হামলা চালিয়ে আসছে ইসরায়েল। গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে একের পর এক ভবন। টার্গেট করে হামলা চালানো হচ্ছে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার হাসপাতালে। শুরু থেকেই ইসরায়েলি বাহিনীর এই হামলার নিন্দা জানিয়ে আসছে তুরস্ক। সৌদি আরবে মুসলিম দেশগুলোর সম্মেলনে অংশ নিয়েও দিয়েছেন ইরাসয়েলের বিরুদ্ধে কড়া বার্তা। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের বিরোধের স্থায়ী সমাধানে আন্তর্জাতিক শান্তি সম্মেলনের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, গাজায় যা দরকার তা কয়েক ঘণ্টার বিরতি নয়, বরং স্থায়ী যুদ্ধবিরতি দরকার। এর আগে ইসরায়েলের প্রতি নিন্দা জানিয়ে তেলআবিব থেকে রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহারের মতো সিদ্ধান্ত নেয় আঙ্কারা। নেতানিয়াহু সরকারকে প্রতিহতের হুঁশিয়ারি পর্যন্ত দেওয়া হয়।
মন্তব্য করুন