ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় টানা সাত মাসেরও বেশি সময় ধরে গণহত্যা ও আগ্রাসন চালাচ্ছে ইসরায়েল। দখলদার বাহিনীর অব্যাহত বিমান হামলায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে গাজা।
এখনো মৃত্যু আর আতঙ্কের নাম গাজা। এমন বাস্তবতায় ফিলিস্তিনিদের মাঝে এসেছে আরেকটি ঈদ।
মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বহু দেশের মতো রোববার গাজাতেও পালিত হচ্ছে ঈদুল আজহা। কিন্তু সেখানে নেই ঈদানন্দ। ঈদুল ফিতরের মতো ঈদুল আজহাও বিবর্ণ কাটছে গাজাবাসীর।
যদিও দক্ষিণ গাজায় বেশি পরিমাণে ত্রাণসামগ্রী প্রবেশের অনুমতি দিয়েছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। কিন্তু তাতেও ফেরেনি গাজার সেই চিরচেনা ঈদ।
কেমন কাটছে গাজাবাসীর ঈদুল আজহা? কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরাসহ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম তা তুলে ধরেছে সবিস্তারিত। যা অত্যান্ত করুণ।
সাধারণত ঈদের ছুটি ও আনন্দ ফিলিস্তিনিরা পরিবার ও আত্মীয় স্বজনদের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নেন। কিন্তু এবার ব্যাপক বাস্তুচ্যুতি আর তীব্র খাদ্যসংকটের মাঝেই কাটছে ফিলিস্তিনিদের ঈদ।
গত অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর আগ্রাসনে এ পর্যন্ত ৩৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। যাদের বড় একটি অংশ নারী ও শিশু। বেঁচে থাকা এতিম শিশুরা ঈদের দিনে খুঁজে ফিরছে নিহত বাবা-মাকে। আল জাজিরার প্রতিবেদনে এই তথ্য তুলে ধরা হয়।
এদিকে কঠোর নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করেই আল-আকসা প্রাঙ্গণে ঈদ জামায়াতে অংশ নিয়েছেন হাজারো মুসল্লি। আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, কঠোর নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও আল-আকসা মসজিদে ঈদ জামাতে শামিল হয়েছেন ফিলিস্তিনিরা।
ভোর থেকেই পূর্ব জেরুজালেমের আল-আকসা প্রাঙ্গণে জড়ো হতে থাকেন ফিলিস্তিনিরা। অনেকেই নিজ পরিবার ও এতিম শিশুদের নিয়ে আসেন নামাজে। এ সময় ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে অনেক ফিলিস্তিনি লাঞ্ছিত হওয়ার খবর এসেছে।
বার্তা সংস্থা আনাদোলু এর এক প্রতিবেদন বলছে, আল-আকসা মসজিদে প্রায় ৪০ হাজার মুসুল্লি রোববার ঈদ-উল-আজহার নামাজ আদায় করেছেন। তবে কয়েক হাজার মুসুল্লিকে সেখানে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি।
সেখানে ছিল না ঈদের কোনো আমেজ। বরং ইসরায়েলি নিষ্ঠুরতার জন্য শোক প্রকাশ করেছেন তারা।
ফিলিস্তিনি বার্তা সংস্থা ওয়াফা জানিয়েছে, আল-আকসা মসজিদে যাওয়ার পথে এবং সেখান থেকে বের হওয়ার সময় নামাজ পড়তে আসা মুসুল্লিদের ওপর হামলা চালায় দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী।
দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী আল-আকসা মসজিদের ভেতরে ঢুকে মুসুল্লিদের পরিচয়পত্র পরীক্ষা করে। অনেক যুবককে মসজিদের প্রবেশে বাধা দেয় এবং মসজিদের বাইরে নামাজ আদায় করতে বাধ্য করে।
মন্তব্য করুন