যুক্তরাজ্যের সরকারি মানচিত্রে এবার প্রথমবারের মতো স্থান পেল ‘স্টেট অব প্যালেস্টাইন’ বা ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের নাম। প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতির ঘোষণা আসার পরপরই এই উদ্যোগ গ্রহণ করেছে দেশটি। খবর স্কাই নিউজের।
ব্রিটিশ পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইটে এরই মধ্যে মানচিত্র হালনাগাদ করা হয়েছে। শুধু মানচিত্র নয়—ভ্রমণ নির্দেশিকা, দূতাবাসের তালিকা ও মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক নথিতেও এখন স্পষ্টভাবে লেখা আছে ‘স্টেট অব প্যালেস্টাইন’। আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে এটি যুক্তরাজ্যের অবস্থানের এক নতুন অধ্যায় হিসেবে দেখা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী স্টারমার এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যের চলমান দুঃসহ পরিস্থিতির মধ্যে আমরা শান্তি প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছি। দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের সম্ভাবনাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্যই এই পদক্ষেপ।’
ফিলিস্তিন স্বীকৃতির দৌড়ে যুক্তরাজ্য একা নয়। এর আগে কানাডা ও অস্ট্রেলিয়া ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। চলতি বছরের শুরুতেই স্পেন, আয়ারল্যান্ড ও নরওয়েও একই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কূটনৈতিক মহলে ধারণা করা হচ্ছে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের আরও কয়েকটি দেশ শিগগিরই একই পথে হাঁটবে।
তবে যুক্তরাষ্ট্র এখনো এ স্বীকৃতির বিপক্ষে অবস্থান করছে। ওয়াশিংটনের যুক্তি হলো—ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি কেবলমাত্র ইসরায়েলের সঙ্গে সরাসরি আলোচনার মাধ্যমেই হওয়া উচিত। ফলে পশ্চিমা ব্লকের ভেতরে এ বিষয়ে বিভাজন স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
অন্যদিকে, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের আগে সৌদি আরব ও ফ্রান্সের নেতৃত্বে একটি গুরুত্বপূর্ণ সম্মেলনের আয়োজন করা হচ্ছে। সেখানে আরও কয়েকটি দেশ ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা দিতে পারে বলে কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে।
ইতোমধ্যে বেলজিয়ামও একই সিদ্ধান্তের প্রস্তুতি নিচ্ছে। শুধু তাই নয়, দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ম্যাক্সিম প্রেভো ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সম্ভাব্য নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার হুঁশিয়ারিও উচ্চারণ করেছেন।
এই পদক্ষেপগুলো আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবিকে আরও জোরালো করছে। মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘস্থায়ী সংঘাত ও উত্তেজনার মাঝে নতুন এই কূটনৈতিক বাস্তবতা ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সমীকরণে বড় প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
মন্তব্য করুন