বগুড়ার মহাস্থান হাটে জাতীয় ফল কাঁঠালের ব্যবসা জমে উঠেছে। বাংলা সনের আষাঢ় মাস শুরু হলেই বেড়ে যায় কাঁঠালের ব্যবসা। দূর-দূরান্ত থেকে পাইকাররা এসে এ হাট থেকে কাঁঠাল কিনে ট্রাকে করে নিয়ে যান। প্রতিদিন এই হাট থেকে কমপক্ষে ৮ থেকে ১০ ট্রাক কাঁঠাল দেশের বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছে, যা সংখ্যায় দাঁড়ায় ১০ থেকে ১২ হাজার। সারা দেশে কাঁঠালের যে চাহিদা, তার অনেকটাই জোগান দেয় বগুড়ার এ ঐতিহ্যবাহী মহাস্থান হাট।
শিবগঞ্জ কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এ হাটে বগুড়া ছাড়াও আশপাশের জেলা জয়পুহাট, নওগাঁ ও গাইবান্ধা থেকে কাঁঠাল ব্যবসায়ীরা কাঁঠাল আমদানি করেন। চড়া দামে কাঁঠাল কেনাবেচা হয় মূলত ফল মৌসুমের শুরুতে এবং শেষে। তবে এবার আমদানি বেশি হওয়ায় অনেকটা স্বাভাবিক দামে বিক্রি হচ্ছে এ হাটের কাঁঠাল।
বাংলা সনের দ্বিতীয় মাস হলো জ্যৈষ্ঠ মাস। জ্যৈষ্ঠ মাসে আতিথেয়তায় বাঙালিরা ফলের পরসা সাজিয়ে বসে। আর এই জ্যৈষ্ঠ শেষে আষাঢ়ে জাতীয় ফল কাঁঠাল বেচাকেনার ধুম পড়ে বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার ঐতিহাসিক মহাস্থান হাটে।
সূত্র বলছে, গত বছর মহাস্থানের আমদানিকৃত কাঁঠাল প্রতিদিন ১২ থেকে ১৫ ট্রাক ঢাকাসহ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় রপ্তানি করা হতো। সে হিসেবে এবার কাঁঠালের আমদানি কম বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তারপরও আশানুরূপভাবে প্রতিদিনই মহাস্থান হাটে কাঁঠালের আমদানি হচ্ছে জেলায় জেলায়।
বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ উপজেলা ও পার্শ্ববর্তী উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকা থেকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে কাঁঠাল সংগ্রহ করে থাকেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। তারপর ভ্যানে করে নিয়ে আসেন এ হাটে। তাদের কাছ থেকে আড়তদাররা কাঁঠাল কিনে কমিশনে সারা দেশে সরবরাহ করে থাকেন। এবার প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ ট্রাকে ১০ থেকে ১২ হাজার পিস ছোট, মাঝারি ও বড় কাঁঠাল যাচ্ছে সারা দেশে।
শিবগঞ্জ উপজেলার অনন্তবালা গ্রামের ব্যবসায়ী মমিন মিয়া বলেন, মহাস্থান হাটে কাঁঠালের ব্যবসা হয় তিন মাস। এবারের ব্যবসা স্বাভাবিক।
ব্যবসায়ীরা জানান, মহাস্থান হাটের কাঁঠাল যাচ্ছে ঢাকা, কুমিল্লা, সিলেট, চট্টগ্রাম, লাকসাম, নোয়াখালী, সাতক্ষীরাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। সিলেট থেকে আসা পাইকাররা জানান, এ এলাকায় প্রচুর পরিমাণে কাঁঠালের চাষ হয়। তাই মৌসুমজুড়ে অনেক কাঁঠাল পাওয়া যায় বলে সিলেট থেকে এসেছি মহাস্থানের বিভিন্ন আড়ত থেকে কাঁঠাল কিনে ট্রাকভর্তি করে নিয়ে যাই।
শিবগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল হান্নান বলেন, বগুড়ার শস্য ভান্ডার হিসেবে খ্যাত শিবগঞ্জ উপজেলায় কাঁঠালের বাণিজ্যিক বাগান না থাকলেও বাড়ির আশপাশে কাঁঠালের কাঙ্ক্ষিত উৎপাদন হয়। পাশাপাশি আশপাশের জেলা থেকে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও পাইকাররা এ হাটে কাঁঠাল বিক্রি করে লাভবান হচ্ছেন।
মন্তব্য করুন