সানাউল হক সানী ও জাফর আহমেদ
প্রকাশ : ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম
আপডেট : ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৭:২৭ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

প্রশিক্ষিতদের ছাঁটাই আর অযোগ্যদের নিয়োগ

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র
প্রশিক্ষিতদের ছাঁটাই আর অযোগ্যদের নিয়োগ

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের বাণিজ্যিক উৎপাদন নানা জটিলতায় তিন বছর পিছিয়ে গেলেও দেশের সবচেয়ে বড় এ মেগা প্রকল্প ঘিরে অনিয়মের উৎসব জমে উঠেছে আরও আগেই। বিদেশ সফর এবং নিয়োগবাণিজ্য ঘিরে কিছু কর্মকর্তা গড়ে তুলেছেন শক্তিশালী সিন্ডিকেট। আলোচিত এ প্রকল্পের গুরুত্বপূর্ণ পদগুলো শুরু থেকেই আঁকড়ে রেখেছেন সিন্ডিকেটের হোতারা। রূপপুরসহ দেশের সব পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিচালনার দায়িত্বে থাকা সংস্থা নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেডের (এনপিসিবিএল) সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শৌকত আকবরের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা সিন্ডিকেটের নাটাই এখন বর্তমান এমডি জাহেদুল হাছান, রূপপুরের প্রকল্প পরিচালক কবীর হোসেন, অলোক ভট্টাচার্য, মুশফিকা আহমেদ, হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা খালেদ মাহমুদ খানসহ কয়েকজনের হাতে।

সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, সিন্ডিকেটভুক্ত কর্মকর্তারা এতটাই ক্ষমতাধর যে, রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্র বাস্তবায়নকারী রাশিয়ান প্রতিষ্ঠান রোসাটমের পরামর্শ কিংবা মতামতও পাত্তা দেন না তারা। একটি পদে প্রার্থীর যোগ্যতা নিয়ে রোসাটম প্রশ্ন তোলার পরও সিন্ডিকেটের আগ্রহের কারণে সেই নিয়োগ আটকানো যায়নি। বরং সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কেউ আওয়াজ তুললে চাকরিচ্যুত হতে হয়। তাদের ক্ষমতার দাপটে এক দিনের মধ্যে ১৮৬ জনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। চাকরিচ্যুত করা হয়েছে ১৮ জনকে; যারা রাষ্ট্রের কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে রাশিয়া থেকে দীর্ঘ প্রশিক্ষণ নিয়ে এসেছিলেন। দৌরাত্ম্য এখানেই থেমে নেই—এনপিসিবিএলের এমডি ড. জাহেদুল হাছান সরকারি খরচে গত এক যুগে অন্তত ৬৫ বার বিদেশ সফর করেছেন। রাশিয়ায় নিজস্ব আবাসনের ব্যবস্থা থাকার পরও হোটেল ভাড়া দেখিয়ে কোটি কোটি টাকা লোপাটের অভিযোগও আছে জাহেদুলের বিরুদ্ধে। শুধু তা-ই নয়, পিআরএলে (অবসরোত্তর ছুটি) যাওয়ার পরও বিধি ভেঙে জাহেদুলকেই এমডি পদে বহাল রাখা হয়েছে।

কর্মকর্তাদের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য দক্ষ জনবল গড়ে তুলতে রাশিয়ায় প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নেয় বাংলাদেশ। এজন্য রাশিয়ার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে রাশিয়ান ফেডারেশনের সঙ্গে ১ হাজার ৮০০ কোটি টাকার চুক্তি হয়। চুক্তির অধীনে ১ হাজার ৪২৪ জনকে বিভিন্ন ধাপে রাশিয়ায় দীর্ঘমেয়াদি প্রশিক্ষণে পাঠানোর কথা। শুরুতে রূপপুরে রাশিয়ার দক্ষ কর্মীদের সঙ্গে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বাংলাদেশিরা কাজ করবেন। রাশিয়ার কর্মীরা ফিরে যাওয়ার পর প্রক্ষিণপ্রাপ্ত বাংলাদেশিরা রূপপুর প্রকল্প পরিচালনার দায়িত্ব নেবেন—এমনটাই উল্লেখ করা হয়েছে চুক্তির শর্তে।

চুক্তি অনুযায়ী, ১৪২৪ জনের মধ্যে ৩০৫ জনকে রিজার্ভ হিসেবে রাখা হয়েছে। রাশিয়ার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষণে অংশ নিয়েছেন ৯৮৫ জন, তাদের মধ্যে ১৪ জন এখনো প্রশিক্ষণরত। বাকি ৯৭১ জন নিয়ে দেশে ফিরেছেন। এ ছাড়া ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রূপপুর এনপিপি ট্রেনিং সেন্টারে জেনারেল কন্ট্রাক্টের আওতায় ২৯৭ জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে আটজন এখনো প্রশিক্ষণরত। বাকি ২৮৯ জন প্রশিক্ষণসম্পন্ন করে প্রকল্পের কাজে যোগ দিয়েছেন। বাদ পড়েছেন ১৮ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী। বাদ পড়েছেন ১৮ জন এবং আরও ১৪২ জনকে ধাপে ধাপে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। কিন্তু প্রশিক্ষণ নিয়ে ফেরার পর রাশিয়ার কর্মীদের সঙ্গে কাজ করে যেভাবে বাংলাদেশি কর্মীদের দক্ষতা বাড়ানোর কথা ছিল, তা পুরোপুরি হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। চুক্তির শর্তানুযায়ী শুরুতে ৯০ শতাংশ কাজ রাশিয়ার প্রতিষ্ঠানের করার কথা, বাকি ১০ শতাংশ করবে বাংলাদেশ। তা না করে শতভাগ কাজই চলছে রাশিয়ার কর্মীদের মাধ্যমে। ফলে প্রশিক্ষণ নিয়ে এলেও হাতে-কলমে কাজ করে ব্যবহারিকভাবে দক্ষ হতে পারছেন না বাংলাদেশের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

অভিযোগ পাওয়া গেছে, রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রের দায়িত্বশীল কয়েকজন কর্মকর্তা নিজেদের সুবিধা নিশ্চিত করতে নানা অপকৌশলের আশ্রয় নিচ্ছেন। এতে রাষ্ট্রের কী ক্ষতি হচ্ছে, তা নিয়ে ভাবছেন না তারা। তাদের মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত ব্যক্তি হলেন রূপপুর প্রকল্পের পরিচালক এনপিসিবিএলের এমডি জাহেদুল হাছান। নিজের আধিপত্য ধরে রাখার পাশাপাশি কেউ যেন তার প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠতে না পারেন, সেজন্য একাই একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পদ কবজায় রেখেছেন তিনি। সিন্ডিকেটের বাইরের কেউ যেন প্রকল্পের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব আসতে পারেন, সেজন্য সম্ভাব্য কর্মকর্তাদের আগে থেকেই বদলি কিংবা কোণঠাসা করে রেখেছেন জাহেদুল। এসব কাজে বেপরোয়াভাবে নিজের ক্ষমতার অপব্যবহার করতেও পিছপা হননি তিনি। মতের পার্থক্য বা প্রতিদ্বন্দ্বী মনে হলে যে কাউকে কারণ দর্শানোর নোটিশ ধরিয়ে দেন তিনি। তার রোষানলে পড়ে হয়রানির শিকার কিংবা চাকরিচ্যুত হয়েছেন বহু কর্মকর্তা। দীর্ঘ প্রশিক্ষণ নিয়ে রূপপুর প্রকল্পে অনেকেই কোনো ভূমিকা রাখতে পারছেন না জাহেদুলের আস্থাভাজন না হওয়ায়। বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতনের সঙ্গে কথা বলতে গেলেও নেমে আসছে শাস্তির খড়গ। তাই বহু রাষ্ট্রের টাকায় প্রশিক্ষণ পেয়েও কর্মহীন অলস সময় কাটছে তাদের।

দ্বিমত পোষণকারী কর্মকর্তাদের শায়েস্তা করার মধ্যেই জাহেদুলের অনিয়ম আটকে নেই। সরকারি অর্থে একাই ৬৫ বার বিদেশ সফর করেছেন তিনি। এসব সফরে সর্বনিম্ন দুদিন থেকে সর্বোচ্চ ৭১ দিন পর্যন্ত বিদেশে অবস্থান করেছেন। আবার গড়ে শত দিন ভিনদেশে অবস্থানের রেকর্ড আছে তার। এমন বহু অভিযোগ থাকার পরও পিআরএলে যাওয়ার কিছুদিনের মধ্যে জাহেদুল হাছানকেই ফের এনপিসিবিএলের এমডি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। দক্ষতা বা পারদর্শিতা ছাড়াই তিনি এবং তার সিন্ডিকেটের লোকজন গুরুত্বপূর্ণ সব পদ এবং দায়িত্ব কুক্ষিগত করে রেখেছেন।

গত ২৫ মে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের জারি করা এক অফিস আদেশে বলা হয়েছে, নতুন এমডি নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত ড. জাহেদুল হাছান দায়িত্বে থাকবেন। চলতি বছর ৩১ মে তাকে পরমাণু শক্তি কমিশনের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের পরিচালক হিসেবে পিআরএলে পাঠানো হয়। তবে পিআরএল শুরুর আগেই ২৬ মে ২২৩তম বোর্ড সভায় পরিচালক পর্ষদ জাহেদুলকে ফের এমডি হিসেবে দায়িত্ব দেয়। ৩০ জুন আগের আদেশ স্থগিত করে ৭ জুলাই থেকে জাহেদুলকে ফের দায়িত্ব দেওয়া হয়।

পরমাণু শক্তি কমিশনের কর্মকর্তাদের অভিযোগ, সরকারি চাকরি আইন ২০১৮-এর ধারা ৪৯ এবং পরমাণু শক্তি কমিশন সার্ভিস বিধিমালা, ১৯৮৫-এর ধারা ৪৬ অনুযায়ী, পিআরএল অবস্থায় কোনো কর্মকর্তা নিয়োগের জন্য রাষ্ট্রপতির পূর্বানুমোদন প্রয়োজন। তবে এই নিয়োগে তা গ্রহণ করা হয়নি। জাহেদুল হাছান প্রকল্পে প্রথম থেকেই নেগোশিয়েটর ও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পরও তিনি ক্ষমতার বলয়ে বহাল।

গত বছরের এক অডিট প্রতিবেদনে দেখা গেছে, জাহেদুল হাছান উপ-প্রকল্প পরিচালক থাকাকালীন বিদেশ সফরের আড়ালে রাষ্ট্রীয় অর্থের ক্ষতি করেছেন। ২০১৬-১৭ থেকে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে অনুমোদন ছাড়াই রাশিয়ায় বাস ভাড়া দেখিয়ে প্রকল্প তহবিল থেকে ৭৭ লাখ ৩৪২৯ টাকা নগদ তুলে নিয়েছেন। ১২৫টি ভাউচারের মাধ্যমে ২০১৭-২৪ সালে ইন্সপেকশন টিমের হোটেল ভাড়া দেখিয়ে রাষ্ট্রের ২ কোটি ৮০ লাখ টাকা ক্ষতি করেছেন।

২০২৪ সালের ১৫ মে প্রকল্প পরিচালক এবং ২৩ ডিসেম্বর এনপিসিবিএলের এমডি পদে আসীন হন জাহেদুল। এরপর একদিনে ১৮৬ জনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন তিনি। চাকরিচ্যুত করেন রাশিয়ায় প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ১৮ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে। তাদের মধ্যে একেকজনের রাশিয়ায় প্রশিক্ষণ ব্যয় ছিল দিনে প্রায় ২৮ হাজার টাকা। এসব কর্মকর্তা-কর্মচারী সাড়ে তিন মাস থেকে শুরু করে ৪ বছর পর্যন্ত বিভিন্ন মেয়াদে রাশিয়ায় প্রশিক্ষণ নিয়েছেন।

চাকরিচ্যুত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা হলেন—মো. হাসমত আলী, মো. পহিনুল ইসলাম, মো. আবু রায়হান, মো. রাকিবুল হাসান, মো. আয়নাল হোসেন, নাঈম আস সাকিব, মো. আবু সাইন, একেএম আবদুল্লাহ আল-আমিন, শাহ ইমতিয়ার আলম, আব্দুল্লাহ আল নোমান, আসিফ খান, মুহাম্মদ ইমামুল আরেফিন, মো. ইব্রাহীম খলিলুল্লাহ, মো. ইকরাম, মো. মুহুল আমীন, মো. ইসমাইল হোসেন, মো. মুবেল হোসেন ও ফিরোজ আহমেদ।

এদিকে গত বছরের আগস্টে রূপপুর থেকে ছয়জনকে ঢাকায় প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হয়। চলতি বছরের ৮ মে কারণ দর্শানো ছাড়াই চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয় তিনজনকে। গত ২৪ আগস্ট ২৩ জনের এক্সেস কার্ড ব্লক করা হয়। এর আগে ২৯ এপ্রিল ৯ জনের এবং ৮ মে আরও ৮ জনের প্রবেশাধিকার বাতিল করা হয়। এ ছাড়া ১৩ মে ৮ জন ও ১৮ মে একজনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, প্রকল্পে নিয়োগের ক্ষেত্রে স্বজনপ্রীতি এবং সিন্ডিকেটের লোকজনকে সুবিধা দিতে দক্ষ ও প্রশিক্ষিত জনবলকে পরিকল্পিতভাবে হয়রানি করা হয়।

আবার সিন্ডিকেটের পছন্দ অনুযায়ী লোকজন নিয়োগ দেওয়ার ক্ষেত্রে নিয়মকানুনের কোনো বালাই নেই। রূপপুরের চিফ সুপারিনটেনডেন্ট পদে মুশফিকা আহমেদ নামে যাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, তিনি আগে একটি ডেন্টাল হাসপাতালে চাকরি করতেন। তিনি যে পদে যোগ দিয়েছেন, সেখানে দায়িত্ব পালনের জন্য এক বছরের প্রশিক্ষণ, তাত্ত্বিক ১ হাজার ৭২ ঘণ্টা ও কার্যক্ষেত্রে ৩৪০ ঘণ্টা প্রশিক্ষণসহ বৈদ্যুতিক নিরাপত্তা ও উৎপাদন প্রক্রিয়া সম্পর্কে জ্ঞান থাকা আবশ্যক। অথচ মুশফিকা আহমেদের এসবের ন্যূনতম অভিজ্ঞতাও ছিল না। তার নিয়োগের বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও তিনি স্বপদে বহাল রয়েছেন।

একইভাবে ২০১৯ ও ২০২৩ সালে আরও কয়েকজনকে অভিজ্ঞতা ছাড়াই গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। সপ্তম গ্রেডে রয়েছেন মো. সোহেল রেজা, মেকানিক্যাল বিভাগের ঊর্ধ্বতন সহকারী ব্যবস্থাপক রবিউল আলম, উপসহকারী ব্যবস্থাপক আবু কায়সার, মেরাজ আল মামুনসহ আরও কয়েকজন। স্বজনপ্রীতি ও অনিয়মের কারণে সম্প্রতি বদলি করা হয়েছে হিসাবরক্ষক খালিদ মাহমুদ খানকেও। প্রকল্প পরিচালকের শ্যালক পরিচয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করে চাকরিসহ নানান তদবিরে যুক্ত ছিলেন তিনি। অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা ছাড়া নিয়োগ পাওয়া এসব কর্মকর্তা-কর্মচারীর কারণে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

খালিদ মাহমুদ খান তার বিরুদ্ধে থাকা অভিযোগ প্রসঙ্গে বলেন, আমি প্রকল্প পরিচালক কবির হোসেনের শ্যালক এটি সত্যি; কিন্তু কোনো অনিয়মের সঙ্গে জড়িত নই। তাদের ইচ্ছা অনুযায়ী আমাকে হিসাব বিভাগ থেকে সরানো হয়েছে।

প্রকল্প পরিচালক ড. মো. কবীর হোসেনের কাছে এ বিষয়ে জানতে ১৫ দিন ধরে চেষ্টার পর তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। অসংখ্যবার ফোন কল এবং প্রশ্ন লিখে মোবাইলে বার্তা পাঠিয়েও জবাব মেলেনি।

সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলতে গত এক সপ্তাহে অসংখ্যবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও এনপিসিবিএলের এমডি ড. জাহেদুল হাছানের নাগাল মেলেনি। তার মোবাইল নম্বরে প্রশ্ন লিখে বার্তা পাঠানোর পরও সাড়া দেননি তিনি।

আগারগাঁওয়ের জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি কমপ্লেক্সে অবস্থিত রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের কার্যালয়ে গিয়েও কারও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

পরে বিষয়টি নিয়ে কথা হয় রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক তথ্য কর্মকর্তা এবং ফোকাল পয়েন্ট (গণমাধ্যম) সৈকত আহমেদের সঙ্গে। কালবেলাকে তিনি বলেন, সবকিছু সঠিক পদ্ধতিতেই হচ্ছে। বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ চলমান। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র একটি উচ্চপ্রযুক্তি ও সংবেদনশীল প্রকল্প। এ প্রকল্প সুষ্ঠু ও দক্ষভাবে পরিচালনার লক্ষ্যে দক্ষ জনবল গড়ে তোলার জন্য রিজার্ভসহ মোট ১ হাজার ৪২৪ জনকে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ৩০৫ জন রিজার্ভ সদস্য। রাশিয়ার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও রাশিয়ান ফেডারেশনে এ প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য উভয় দেশের মধ্যে চুক্তি হয়েছে। বর্তমানে প্রশিক্ষণ কার্যক্রমও চলমান।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বেড়িবাঁধের পাশে পড়ে ছিল বৃদ্ধের মরদেহ

স্বামী-স্ত্রী মিলে যাত্রী, সিগারেট খাইয়ে ইজিবাইক ছিনতাই

সাংবাদিকের কাছে চাঁদা দাবি, সন্ত্রাসী জনির বিরুদ্ধে মামলা 

সব সময় হাত-পা কেন ঘামে, কঠিন কোনো রোগের লক্ষণ নয় তো ?

ত্রিভুজ প্রেমের বলি ডা. আমিরুল

সেই আলী হুসেনকে ঢাবি থেকে বহিষ্কার

জাবি ছাত্রীকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়ায় ২৮ বাস আটক

সাগরে লঘুচাপ, সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত

অভিষেকের সঙ্গে প্রেম, বাগদান নিয়ে কারিশমার স্বীকারোক্তি

সন্ধ্যার মধ্যে ঝড়বৃষ্টির আভাস

১০

ভোটের আগে তদবিরের পাহাড়

১১

সঞ্জয় লীলার বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ

১২

মালয়েশিয়ায় নারীসহ ৩৯৬ বাংলাদেশি আটক

১৩

শরতের আকাশজুড়ে সাদা মেঘের ভেলা

১৪

বাংলাদেশে মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিযুক্ত হতে যাওয়া কে এই ব্রেন্ট

১৫

আ.লীগ নেতাকর্মীদের নিয়ে সভা, সিপিপির সেই উপপরিচালককে বদলি

১৬

ট্রেনের ধাক্কায় দুমড়ে-মুচড়ে গেল ট্রাক, নিহত ২

১৭

রুমায় কেএনএর প্রশিক্ষণ ঘাঁটিতে সেনাবাহিনীর অভিযান, অস্ত্র উদ্ধার

১৮

৩ মাসের শিশুকে নদীতে ফেলে দিয়ে বাসায় আসেন মা

১৯

গলার মাপেও লুকিয়ে থাকতে পারে হৃদরোগ ও ডায়াবেটিসের ইঙ্গিত

২০
X