কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৪ মার্চ ২০২৫, ০২:৩০ এএম
আপডেট : ২৪ মার্চ ২০২৫, ০৯:৩৯ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
সেই দিনটি

লে. কর্নেল কাজী নূরুজ্জামান

জন্মদিন
লে. কর্নেল কাজী নূরুজ্জামান

লে. কর্নেল কাজী নূরুজ্জামান সামরিক কর্মকর্তা, মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার। তিনি ১৯২৫ সালের ২৪ মার্চ যশোরে জন্মগ্রহণ করেন। নূরুজ্জামান কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে ১৯৪৩ সালে কেমিস্ট্রিতে অনার্স ক্লাসে অধ্যয়নকালে রয়্যাল ইন্ডিয়ান নেভিতে যোগ দেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে তিনি বার্মা এবং সুমাত্রায় মিত্রশক্তির পক্ষে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তানি বাহিনী গণহত্যা শুরু করলে কাজী নূরুজ্জামান ২৮ মার্চ দ্বিতীয় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক কাজী সফিউল্লাহর ব্যাটালিয়নে (ময়মনসিংহ) যোগ দেন। ৪ এপ্রিল হবিগঞ্জের তেলিয়াপাড়ায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মেজর ও তদূর্ধ্ব পদবির কর্মকর্তাদের প্রথম সভায় কাজী নূরুজ্জামান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। মে মাসে তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রথম ব্যাচ ক্যাডেট নির্বাচনের জন্য গঠিত পর্ষদের সভাপতি নির্বাচিত হন। এ সময়ে মুক্তিযুদ্ধে সেনাবাহিনীর সর্বাধিনায়ক এমএজি ওসমানীর সরাসরি নির্দেশে বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭১ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর ৭ নম্বর সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার মেজর নাজমুল হক ভারতে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হলে তিনি কমান্ডারের দায়িত্ব লাভ করেন। দিনাজপুর জেলার দক্ষিণাঞ্চল, বগুড়া, রাজশাহী এবং পাবনা জেলা এই সেক্টরের অন্তর্ভুক্ত ছিল। ১৯৭১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত এ দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন। কাজী নূরুজ্জামান মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে প্রগতিশীল রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর সমন্বয়ক ও আহ্বায়ক হিসেবে গঠন করেন ফ্যাসিবাদবিরোধী গণতান্ত্রিক কমিটি। তিনি স্বদেশ চিন্তা সংঘ, লেখক শিবির ও গণসংস্কৃতি ফ্রন্টের সদস্য ছিলেন। স্বাধীনতা লাভের পরপরই যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে আন্দোলন গড়ে তোলেন। আশির দশকে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সভাপতি ছিলেন। এ ছাড়া ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলোর কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার দাবি জানান। ১৯৮৫ সালে গঠিত মুক্তিযুদ্ধ চেতনা বিকাশ কেন্দ্রের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন কাজী নূরুজ্জামান। জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে রাজপথের আন্দোলনে তিনি সরাসরি অংশগ্রহণ করেন। পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন ও একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল জাতীয় কমিটি আয়োজিত গণআদালতের অন্যতম বিচারকের দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৭ সালে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম গঠনে তার অগ্রণী ভূমিকা ছিল। কাজী নূরুজ্জামান প্রতিক্রিয়াশীলতা বিরোধী সব আন্দোলনে প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ করেন। তিনি পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে তাদের সপক্ষে সোচ্চার ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে তার বীরত্ব ও অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার তাকে ‘বীরউত্তম’ খেতাবে ভূষিত করে। তিনি সাপ্তাহিক নয়া পদধ্বনি পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন। তার রচিত গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে স্বদেশ চিন্তা, মুক্তিযুদ্ধ ও রাজনীতি, বাংলাদেশের সমাজ ও রাজনীতি, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ: একজন সেক্টর কমান্ডারের স্মৃতিকথা। তিনি একাত্তরের ঘাতক ও দালালরা কে কোথায় গ্রন্থের অন্যতম সম্পাদক। ঢাকা সিটি করপোরেশন তার নামে ঢাকার পান্থপথে একটি সড়কের নামকরণ করেছে বীরউত্তম কাজী নূরুজ্জামান সড়ক। ২০১১ সালের ৬ মে ঢাকায় মারা যান তিনি।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আজ ১১ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না যেসব এলাকায় 

দুই শিক্ষার্থীসহ ৪ প্রাণ কাড়া দুই যানে ছিল না ফিটনেস

১৪ আগস্ট : টিভিতে আজকের খেলা

১৪ আগস্ট : আজকের নামাজের সময়সূচি

বৃহস্পতিবার রাজধানীর যেসব মার্কেট বন্ধ

ক্ষমতায় থাকাকালীন আ.লীগ দেশকে দুর্নীতির স্বর্গরাজ্যে বানিয়েছিল : নীরব

রংপুরে ক্ষতিগ্রস্ত হিন্দু পরিবারগুলোর পাশে ইসকন

স্বপ্ন পূরণের পথে দাবাড়ু মুনতাহা, পাশে দাঁড়ালেন আমিনুল হক

কেশবপুরে বিএনপির উঠান বৈঠক অনুষ্ঠিত

পাথর উদ্ধারে যৌথ বাহিনীর বিশেষ অভিযান

১০

নাটকীয় কামব্যাকের পর টাইব্রেকারে পিএসজির সুপার কাপ জয়

১১

জন্মাষ্টমী : সাংবাদিকদের সাথে পূজা পরিষদের মতবিনিময় বৃহস্পতিবার

১২

রাহুল গান্ধীকে হত্যার হুমকি

১৩

সাদা পাথর উদ্ধারে যৌথ বাহিনীর অভিযান শুরু

১৪

বড় ধরনের পরিবর্তন আসছে উয়েফা সুপার কাপে

১৫

স্বর্ণ পাচারে জড়িত সেই কেবিন ক্রু রুদাবা সাসপেন্ড

১৬

ইতালি উপকূলে অভিবাসীবাহী নৌকা ডুবে ২৬ জনের মৃত্যু

১৭

অফিসে হঠাৎ অসুস্থ বোধ করলে কী করবেন 

১৮

ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালককে গুলির পর কুপিয়ে হত্যা

১৯

হাজার কোটি টাকার মাদকদ্রব্য ধ্বংস 

২০
X