চার বছর আগে নিউজিল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে পরপর দুটি সিরিজ জিতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলেছিল বাংলাদেশ। মিরপুরের সেই স্পিনবান্ধব উইকেটেই মিলেছিল অস্ট্রেলিয়ায় হওয়া বিশ্বকাপের টিকিট। কিন্তু দলের লাভের চেয়ে ক্রিকেটারদের বড় ক্ষতি করে দিয়েছিল সে দুটি সিরিজ। বিশেষ করে ব্যাটারদের ক্যারিয়ারকে অনেক বেশি প্রভাবিত করেছিল তা। বিষয়টি নিয়ে তখন সমালোচনা করেছিলেন দলের অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানও। চার বছর পর আবারও সেই প্রসঙ্গ টানলেন টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক লিটন দাস। সামনে এশিয়া কাপ। তার আগে পাকিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচের সিরিজ খেলতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। ঘরের মাঠে সে সিরিজ ঘিরে গতকাল সংবাদ সম্মেলনে ট্রিপিকাল মিরপুর ক্যারিয়ারের ক্ষতির কারণ বলে জানিয়েছেন লিটন।
২০২১ সালে আগস্ট-সেপ্টেম্বরে কিউই ও অজিদের নাকানিচুবানির দেখা মিলেছিল মিরপুরে। ১২০ রানও যেন পাহাড়সম হয়ে দাঁড়াত ম্যাচগুলোতে। সিরিজ জিতে র্যাঙ্কিংয়ে উন্নতি করে বিশ্বকাপে সরাসরি জায়গা করে নেয় বাংলাদেশ। কিন্তু ওই সিরিজে রীতিমতো ব্যর্থ হয়েছিলেন লিটন, মোহাম্মদ নাঈমরা। তাদের ব্যাটিং স্ট্রাইক রেটের পাশাপাশি মানসিকতাতেও বড় ছাপ ফেলে তা। সাকিব তখন সমালোচনার সুরে বলেছিলেন, এ ধরনের উইকেটে ১০-১৫ ম্যাচ খেললে যে কোনো ব্যাটসম্যানের ক্যারিয়ার শেষ হয়ে যাবে। লিটন সেটা অনুধাবন করছেন এখন। ক্যারিয়ারের এমন পর্যায়ে এসেও যখন নিজের সেরা ছন্দ খুঁজে পাচ্ছেন না, তখন ট্রিপিকাল মিরপুরের ক্ষতির কথা বললেন তিনি, ‘আমিও একমত। অনেক ক্রিকেটারেরই ক্যারিয়ার নিচু হয়ে গেছে—ব্যাটসম্যান হিসেবে। আমি যদি বোলার হতাম, হয়তো আমার ক্যারিয়ারও বিল্ড-আপ হতো ওই (স্লো টার্ন ঘূর্ণি) উইকেটে খেললে (হাসি)। অবশ্যই দল হিসেবে বাংলাদেশ ডেভেলপ করেছে, সিরিজ জিতেছিল। বিশাল প্লাস পয়েন্ট। তবে একই সময়ে ব্যটসম্যানদের জন্য আবার খারাপ ছিল।’ পাকিস্তানের বিপক্ষে একই ধরনের উইকেট হওয়ার আশঙ্কা করছে অনেকেই। প্রচুর বৃষ্টির কারণে শঙ্কার জায়গাটা বেশি গুরুতরও বটে। তবে লিটনের বিশ্বাস সেরকম কিছু হবে না, ‘আমার মনে হয় না, ওই জিনিসের পুনরাবৃত্তি হবে। উইকেট দেখে ভালো মনে হয়েছে। একটা ইভেন গেম হবে।’
লড়াইয়ের আভাস দিলেও লিটনদের ছন্দ ধারাবাহিক নয়। সম্প্রতি খেলা বেশ কয়েকটি সিরিজে সেটা স্পষ্ট। শ্রীলঙ্কায় ভালো করলেও তার আগে আমিরাত ও পাকিস্তানে ব্যর্থ হয়েছিলেন তারা। নিজের ছন্দপতন নিয়ে অধিনায়ক জানিয়েছেন চেষ্টার কমতি নেই, ‘১০ বছর ধরে তো এভাবেই খেলতেছি। আর কত সেট করব? পারফর্ম করতে পারছি না, এটা একটা জায়গা আছে, যে না কনটিনিউ পারফর্ম করি না। এটা আমি সবসময় চেষ্টা করতেছি। কিন্তু প্র্যাকটিসে কখনো কমতি ছিল না এবং ভবিষ্যতেও থাকবে না।’
শ্রীলঙ্কার মাটিতে প্রথম কোনো সিরিজ জয়, সেটাও যখন টি-টোয়েন্টি; তখন দল হিসেবে ফুরফুরেই থাকার কথা লিটনদের। ৯ বছর ধরে পাকিস্তানকে সিরিজ হারাতে না পারার আক্ষেপ এবার মিটবে তো! অধিনায়ক আশার কথাই বললেন, ‘আমাদের সেরা ক্রিকেটটা খেলতে হবে। সব কিছু তৈরি হয় ইতিহাস হওয়ার জন্য। আর রেকর্ড কিন্তু ভাঙাও হয়। আমরা যদি ভালো ক্রিকেট খেলি, রেকর্ড ভাঙতে সময় লাগবে না। ওই রেকর্ডের চিন্তা না করে আমরা কী করতে পারি, আমাদের কতখানি সামর্থ্য আছে; কতটা ভালো ক্রিকেট খেলতে পারি, সেসব ভাবলে ওই সব জিনিসই বদলে যাবে।’
মন্তব্য করুন