ব্যাংক সুদের হার, ডলারের দাম বৃদ্ধি ও উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়াসহ কয়েকটি কারণ উল্লেখ করে বাজারে চিনির দাম প্রতি কেজিতে ১৫ টাকা বাড়ানোর পরামর্শ দিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছে বাংলাদেশ ট্রেড ও ট্যারিফ কমিশন (বিটিটিসি)।
বিটিটিসি প্যাকেটজাত চিনির সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য বর্তমানের ১২৫ টাকা থেকে ১৪০ টাকা বৃদ্ধির সুপারিশ করেছে। আর খোলা চিনির দাম প্রতি কেজিতে ১২০ টাকা থেকে ১৩৫ টাকা করার প্রস্তাব দেওয়া হয়।
এ ছাড়া মিল গেটে পরিশোধিত খোলা ও প্যাকেটজাত চিনির দাম যথাক্রমে প্রতি কেজি ১৩০ টাকা ও প্রতি কেজি ১৩৫ টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে। পরিশোধিত খোলা ও প্যাকেটজাত চিনির দাম প্রতি কেজি ১৩২ টাকা ও পরিবেশক পর্যায়ে ১৩৭ টাকা করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
কমিশন ডলারের বিনিময় মূল্য ১১২ টাকা করে হিসেবে ১ থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত গড় এলসি, বন্ড ও গড় আমদানি মূল্যের ওপর দামের প্রস্তাব করে।
গত ৮ মে কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী, সরকার খোলা ও প্যাকেটজাত চিনির দাম সংশোধন করে ও যথাক্রমে প্রতি কেজি ১২০ টাকা এবং ১২৫ টাকা নির্ধারণ করে।
ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) দৈনিক বাজার মূল্যের তথ্য অনুযায়ী, ঢাকা শহরের বিভিন্ন খুচরা বাজারে চিনি প্রতি কেজি ১৩০-১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বিটিটিসির তথ্য অনুসারে, এ বছরের জুন মাসে আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত চিনির দাম প্রতি টন ৫৯৯.৮৬ ডলারে ছিল।
বাংলাদেশে গড়ে প্রতি মাসে ১১০,০০০ টন চিনির চাহিদা রয়েছে। চিনির বার্ষিক চাহিদা প্রায় ২২ মিলিয়ন টন। ট্যারিফ কমিশন অনুসারে, বছরে প্রায় ২.২-২.৪ মিলিয়ন টন অপরিশোধিত চিনি আমদানি করা হয়। চাহিদার শতকরা ১.৫ ভাগ চিনি স্থানীয়ভাবে উৎপাদন করা হয়। এ কারণে বাকিটা আমদানি করতে হয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র থেকে জানা যায়, চলতি বছরের মে মাসের প্রথম দিকে, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) একটি চিঠি পাঠায় যাতে পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় কাঁচা চিনি আমদানির জন্য তার হ্রাসকৃত শুল্ক সুবিধা অব্যাহত থাকে। এই সুবিধাটি গত ৩১ মে শেষ হওয়ার কথা ছিল।
সর্বশেষ, স্থানীয় শোধনকারীরা প্রতি কেজির দাম ২৫ টাকা বাড়ানোর জন্য সরকারকে অনুরোধ করেছিল।
বাংলাদেশ সুগার রিফাইনার অ্যাসোসিয়েশন (বিএসআরএ) প্যাকেটজাত চিনির সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য (এমআরপি) প্রতি কেজি ১৫০ টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব উত্থাপন করেছে, যার বর্তমান সরকার নির্ধারিত মূল্য প্রতি কেজি ১২৫ টাকা এবং আলগা চিনির এমআরপি প্রতি কেজি ১২০ টাকা থেকে ১৪০ টাকা।
অ্যাসোসিয়েশনটি গত ২২ জুন থেকে এই হার কার্যকর করতে চেয়েছিল। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে অনুরোধও করেছিল। তবে কোরবানির ঈদের আগে চিনির দাম পর্যালোচনার প্রস্তাব পিছিয়ে দেয় মন্ত্রণালয়।
মন্তব্য করুন