রাকিবুল ইসলাম রাকিব, গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৯ জুলাই ২০২৪, ০৪:২৫ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

সন্তানের মুখ দেখার আগেই রাকিবের চিরবিদায়

নূরে আলম সিদ্দিকী রাকিব। ছবি : সংগৃহীত
নূরে আলম সিদ্দিকী রাকিব। ছবি : সংগৃহীত

প্রায় সাত মাস আগে সাদিয়া আক্তারকে বিয়ে করেন নূরে আলম সিদ্দিকী রাকিব। স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা হওয়ায় আনন্দের সীমা ছিল না স্বামী রাকিবের। অনাগত সন্তানের মুখ দেখতে অপেক্ষার প্রহর গুনছিলেন তিনি। কিন্তু সেই সন্তানের মুখ দেখার আগেই গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারান রাকিব।

গত ২০ জুলাই কোটা আন্দোলনকে ঘিরে ময়মনসিংহের গৌরীপুরের কলতাপাড়া বাজারে পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষে রাকিব গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। ওইদিনই হাসপাতাল থেকে রাকিবের মরদেহ বাড়িতে নিয়ে দাফন করেন স্বজনরা।

রাকিবের বাড়ি উপজেলার রামগোপালপুর ইউনিয়নের দামগাঁও গ্রামে। তার বাবা আব্দুল হালিম শেখ। তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে রাকিব ছিলেন তৃতীয় সন্তান।

পরিবারের দাবি, ‘রাকিব কোনো রাজনীতি করত না। কোটা আন্দোলনেও সম্পৃক্ত ছিল না। ঘটনার দিন অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর জন্য ওষুধ আনতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান তিনি।

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার এমদাদুল উলুম নূরানিয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসা থেকে হেফজ সম্পন্ন করেন রাকিব। এরপর নিজ বাড়িতেই গড়ে ওঠা তালিমুল কুরআন মহিলা মাদ্রাসায় শিক্ষকতা শুরু করেন তিনি। পাশাপাশি ভর্তি হন ঈশ্বরগঞ্জের ভাসা আতহারিয়া দারুল উলুম মাদ্রাসায় কিতাব বিভাগে।

চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি রাকিব বিয়ে করেন ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার সাদিয়া আক্তারকে। তার স্ত্রী বর্তমানে চারমাসের অন্তঃসত্ত্বা।

রাকিবের চাচাতো ভাই আব্দুল মালেক বলেন, ‘ঘটনার দিন সকালে সাদিয়া শারীরিকভাবে অসুস্থতা বোধ করছিলেন। এসময় রাকিব তার স্ত্রীর জন্য ওষুধ আনতে কলতাপাড়া বাজারে যান। শুনেছি সেখানে সংঘর্ষের ঘটনা মোবাইলে ভিডিও করার সময়ই সে গুলিবিদ্ধ হয়। সেখান থেকে হাসপাতালের নেওয়ার পর তার মৃত্যু হয়।

রোববার বিকেলে দামগাঁও গ্রামে গিয়ে দেখা দেখা যায়, সুনশান নীরবতা রাকিবের বাড়িতে। তার বাবা আব্দুল হালিম শেখ বাড়িতে নেই। তিনি পুত্রবধূ সাদিয়াকে ডাক্তার দেখানোর জন্য ময়মনসিংহ নিয়ে গেছেন। ছেলে হারানোর শোকে স্তব্ধ মা নুরুন্নাহার বেগম। কারও সঙ্গে কথা বলছেন না।

ছেলের কথা বলতেই ডুকরে কেঁদে বললেন, ‘বিয়ের নিমন্ত্রণে আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়েছিলাম। গত শুক্রবার বিকালে ছেলে ফোন করে বলে তুমি চলে এসো। পরের দিন বাড়ি ফিরেই ছেলের মৃত্যুর সংবাদ পাই। আমার ছেলে কোনো রাজনীতি করত না। কেনো তাকে গুলি করে মারা হলো। সৃষ্টিকর্তার কাছে বিচার দিয়ে রাখলাম।’

রাকিবের ভগ্নিপতি ইলিয়াস মাহমুদ বলেন, ‘রাকিবের মরদেহের বুকের বাম পাশে গুলির ছিদ্র ছিল। ও ছিল আমার শ্বশুরের একমাত্র ছেলে। তার মৃত্যুতে পুরো পরিবার শোকে কাতর। আমরা এ ঘটনায় মামলা করব না। মামলা করলেই কি আর রাকিব ফিরে আসবে।’

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

ঘটনাপ্রবাহ: কোটা সংস্কার আন্দোলন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ইসরায়েলি প্রেসিডেন্টের বাসভবন ঘেরাও

প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ

‘ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করতে পিলখানার হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে শেখ হাসিনা’

শীত কখন জেঁকে বসতে পারে, যা জানাল আবহাওয়া অধিদপ্তর

কেন প্রকাশ্যে কেঁদেছিলেন অক্ষয়?

আর্জেন্টিনায় গুনে গুনে ৭ গোল দিল ব্রাজিল

১৯ মামলার আসামি শীর্ষ সন্ত্রাসী মিল্টন গ্রেপ্তার

টিউলিপের ২ বছরের কারাদণ্ড, যা বলা হচ্ছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে

স্বর্ণপদকজয়ী জাতীয় পর্যায়ের বডিবিল্ডারকে পিটিয়ে হত্যা

গাজীপুরে ঝুট গোডাউনে আগুন

১০

ক্ষমতায় গেলে সমৃদ্ধ অর্থনীতির দেশ গড়বে বিএনপি : ফখরুল

১১

বাড়ি ফেরা হলো না ফল ব্যবসায়ী মধুউল্লাহর

১২

বিভিন্ন থানায় পুলিশ টাকা ছাড়া কথা শোনে না : সারজিস

১৩

বার্ষিক পরীক্ষা বন্ধের ঘোষণা ধানমন্ডি গভর্নমেন্ট বয়েজের শিক্ষকদের

১৪

যে আসন থেকে নির্বাচন করতে চান রেজা কিবরিয়া

১৫

অস্তিত্ব সংকটে ষাটগম্বুজ মসজিদ, ক্ষয়ে গেছে ১০ মিহরাব

১৬

কম্পিউটার কেনার সময় যেসব বিষয় জানা জরুরি

১৭

রোহিত-কোহলির পরবর্তী বিশ্বকাপ খেলা নিয়ে যা জানাল টিম ম‍্যানেজমেন্ট

১৮

দেশের আদালতে প্রথম কোনো ব্রিটিশ এমপির সাজা 

১৯

সেন্টমার্টিনগামী জাহাজকে জরিমানা

২০
X