কলমাকান্দা (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৬:৫৭ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

পাঁচ সন্তান নিয়ে গরু-ছাগলের সঙ্গে রাত কাটে দম্পতির

নেত্রকোনার কলমাকান্দায় ঝপুড়ি ঘরে গবাদিপশু ও সন্তানসহ শম্পা রানী বিশ্বাস। ছবি : কালবেলা
নেত্রকোনার কলমাকান্দায় ঝপুড়ি ঘরে গবাদিপশু ও সন্তানসহ শম্পা রানী বিশ্বাস। ছবি : কালবেলা

পাঁচ সন্তান ও গরু-ছাগল নিয়ে পলিথিনে মোড়ানো ঝুপড়িতে বসবাস সঞ্জিত বিশ্বাস (৩৮) ও শম্পা রানী বিশ্বাস (৩৫) দম্পতির। অন্যের বাড়িতে ১৪ বছর কাটানোর পর অবশেষে একটি আশ্রয়ণ প্রকল্পে এক কোণে মাথা গোঁজার ঠাঁই হয়েছে তাদের। কিন্তু ঝড়-বৃষ্টি হলেই গবাদিপশুর সঙ্গে নির্ঘুম রাত কাটে ওই দম্পতির। এভাবেই বছর কেটে গেছে তাদের।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সঞ্জিত বিশ্বাস নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার খারনৈ ইউনিয়নের বড়দল গ্রামের বাসিন্দা। জায়গা জমি না থাকায় অন্যের বাড়িতে পরিবার নিয়ে এক যুগেরও বেশি সময় কাটিয়েছেন। সেখানেই মাথা গোঁজার ঠাঁই হয়েছিল তাদের। এক বছর আগে ওই দম্পতিকে সেখান থেকেও বের করে দিয়ে অন্যত্র কাজ খুঁজতে বলেন বাড়ির মালিক। তবে এ যেন আকাশ ভেঙে পড়ার মতো অবস্থা হয়েছিল ওই দম্পতির। সেখান থেকে বের হয়ে কোথায় যাবে ভেবে পাচ্ছিলেন না তারা। অবশেষে স্থানীয় মানুষের সহযোগিতায় আশ্রয়ণ প্রকল্পে জায়গা হয়। সেখানে ঝুপড়ি ঘর তৈরি করে পাঁচ সন্তান নিয়ে বসবাস করছেন এই দম্পতি।

সরেজমিন গজারমারী আশ্রয়ণ প্রকল্পে গিয়ে দেখা গেছে, ওই আশ্রয়ণ প্রকল্পে ১৪ পরিবার সরকারি ঘর পেয়েছে। বাসিন্দাদের পাশেই ফাঁকা জায়গায় পলিথিনে মোড়ানো ঝুপড়ি ঘর তৈরি করেছেন ওই দম্পতি। সেখানে পাঁচ সন্তান ও গরু-ছাগল নিয়ে বসবাস করছেন তারা। এ ছাড়া কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে ভিজে গেছে সবকিছু। ঝুপড়ি ঘরের এক কোণে রয়েছে একটি চৌকি। আরেক পাশে রাখা হয়েছে গরু-ছাগল রাখার জায়গা।

সঞ্জিত বিশ্বাস বলেন, এখন দিনমজুরের কাজ করছি। আগে অন্যের বাড়িতে ১৪ বছর কাটিয়েছি। সেখানে নানা কথা শুনতে হতো। একপর্যায়ে বের করে দেন বাড়ির মালিক। কোথাও জায়গা না পেয়ে সরকারি ঘরের পাশে আশ্রয় নিয়েছি।

সঞ্জিত বিশ্বাসের স্ত্রী শম্পা রানী বিশ্বাস বলেন, কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই। সরকার অনেককে ঘর দিয়েছে কিন্তু আমরা পাইনি। এত কষ্ট করে চলছি কারও সহযোগিতা পাই না। বৃষ্টি হলে ঘরে পানি পড়ে। সন্তানদের নিয়ে চলাফেরা খুবই কষ্ট।

গজারমারী আশ্রয়ণ প্রকল্প ঘরের বাসিন্দা লিমা আক্তার বলেন, জমি বা ঘর কিছুই নেই তাদের। তাই এখানে এসে ঝুপড়ি ঘর তৈরি করে থাকছেন। বৃষ্টি হলেই ওপর থেকে ঘরের ভেতর পানি পড়ে। সরকারি সহযোগিতা পেলে কিছুটা উপকার হবে সঞ্জিত-শম্পা দম্পতির।

ভারপ্রাপ্ত কলমাকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, কলমাকান্দা উপজেলাকে ভূমিহীন ও গৃহহীন মুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। ওই পরিবারের বিষয়ে আমার জানা নেই। তবে খোঁজ নিয়ে পরিবারকে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় বিদেশ নিতে দেরি হচ্ছে : ডা. জাহিদ

খালেদা জিয়াকে নিয়ে গুজব না ছড়ানোর আহ্বান ডা. জাহিদের

অপু-সজলের ‘দুর্বার’

বাংলাদেশে আমরা ভিন্নমতকে প্রতিষ্ঠা করতে চাই : উপদেষ্টা ফাওজুল কবির

শেখ হাসিনাকে ভারতে থাকার বিষয়ে সিদ্ধান্ত তাকেই নিতে হবে: জয়শঙ্কর

ঢাকাবাসী জাপান ওয়ার্ল্ডের উদ্যোগে রাজধানীতে বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা

খালেদা জিয়াকে দেখতে এভারকেয়ারে ডা. জুবাইদা

মেঘনা ব্যাংকের এমডি হলেন সৈয়দ মিজানুর রহমান 

বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটিতে প্রথম জাতীয় আইন সম্মেলন অনুষ্ঠিত

বিশ্বকাপের ফাইনালে ব্রাজিল

১০

নদীতে ডুবে প্রাণ গেল ২ ভাইয়ের

১১

নবম পে স্কেল বাস্তবায়নের দাবিতে সরকারি কর্মচারীদের মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত

১২

শিশুকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ, অভিযুক্তকে যে শাস্তি দিল এলাকাবাসী

১৩

কার্টনের ভেতর পলিথিনে মোড়ানো খণ্ডিত পা

১৪

‘আইনে অনুমোদিত টাকার বাইরে এক টাকা খরচ করব না’

১৫

ফিশিং বোটে মিলল ৩৭৫ বস্তা সিমেন্ট, গন্তব্য ছিল মিয়ানমার

১৬

ছাত্রদলের দুই নেতাকে শোকজ 

১৭

ফুটবল ও ক্রিকেট, দুই বিশ্বকাপেই খেলবে যেসব দেশ

১৮

চুল পড়া আর খুশকির সমস্যা বাড়াচ্ছেন নিজের ৬ অভ্যাসে

১৯

তাসফিনের হাত পুনঃসংযোজন এক বিরল সাফল্য : রিজভী

২০
X