যশোর প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১১ অক্টোবর ২০২৪, ০৩:১৩ পিএম
আপডেট : ১১ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:০৫ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

ছোবল দেওয়া রাসেল ভাইপার নিয়েই হাসপাতালে কুদ্দুস

রাসেল ভাইপার। গ্রাফিক্স : কালবেলা
রাসেল ভাইপার। গ্রাফিক্স : কালবেলা

সাপের কামড়ে আক্রান্ত হয়ে কুদ্দুস খান যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। যে সাপ তাকে কামড় দেয় সেটি তিনি সঙ্গে নিয়ে আসেন। পরে ডাক্তার সাপটিকে রাসেল ভাইপার বলে চিহ্নিত করে অ্যান্টি ভেনম দিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার শ্যামকুড় গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

কুদ্দুস খান (৫৫) বলেন, সন্ধ্যায় বাড়ির পাশে ইছামতী নদীতে মাছ ধরছিলাম। এ সময় আমার বাম পায়ে সাপে কামড় দেয়। আমার হাতে থাকা মাছ ধরার চাবুক দিয়ে সাপটা মেরে ফেলি। পরে পাশের পটোল ক্ষেত থেকে দড়ি নিয়ে পা বেঁধে বাসায় ফিরে আসি। এরপর মহেশপুর ও জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগাযোগ করলে তাদের কাছে কোনো অ্যান্টি ভেনম নেই বলে জানান। রাত সাড়ে তিনটার দিকে যশোর হাসপাতালে ভর্তি হই। রাত চারটার দিকে অ্যান্টি ভেনম দেওয়া হয় আমাকে।

যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডের ডাক্তার সাজ্জাদুল করিম বলেন, গভীর রাতে সাপসহ এক ব্যক্তি হাসপাতালে আসেন। সাপটা দেখে রাসেল ভাইপার বলে চিহ্নিত করি। সে হিসেবে তাকে অ্যান্টি ভেনম দেওয়া হয়েছে। তারপরও আক্রান্ত স্থানে ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে। আমরা পর্যবেক্ষণে রেখেছি।

রাসেল ভাইপার সম্পর্কে তরুণ বন্যপ্রাণী গবেষক এবং বাংলাদেশ বন বিভাগের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা জোহরা মিলা জানান, রাসেলস ভাইপার (Russell's Viper) সাপটি ‘চন্দ্রবোড়া’ বা ‘উলুবোড়া’ নামেও পরিচিত। আইইউসিএনের ২০১৫ সালের লাল তালিকা অনুযায়ী রাসেলস ভাইপার বাংলাদেশে সংকটাপন্ন প্রাণীর তালিকায় রয়েছে। এটি ইঁদুর ও টিকিটিকি খায়। ফসলের ক্ষেত ও বসতবাড়ির আশেপাশে প্রাণীদুটির প্রাচুর্যতা বেশি থাকায় খাবারের খোঁজে রাসেলস ভাইপার অনেক সময় লোকালয়ে চলে আসে এবং মানুষকে দেখে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে কখনও কখনও আক্রমণও করে।

জোহরা মিলা বলেন, পদ্মার চরাঞ্চল, নদী অববাহিকা ও বরেন্দ্র এলাকায় উঁচু-নিচু ঘাস বা ফসলের জমিতে এই সাপটি বেশি দেখা যায়। সাধারণত জুন-জুলাই মাসে এর প্রজননকাল। সাপটি ডিম দেওয়ার বদলে সরাসরি ৬-৬৩টি বাচ্চা প্রসব করে। দেখতে মোটা, লম্বায় ২ থেকে ৩ ফুট দৈর্ঘ বিশিষ্ট এই সাপের গায়ে ছোপ-ছোপ গোলাকার কালো দাগ থাকে। ঘন ঘন জিহ্বা বের করে হিসহিস শব্দ করে। সাপটি সম্পর্কে যার ধারণা নেই তিনি এটিকে অজগর ভেবেই ভুল করবেন।

জোহরা মিলা বলেন, এই সাপের বিষ ‘হেমোটক্সিন’ হওয়ায় মাংস পঁচেই আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যু হয়। সাপটির কবল থেকে বাঁচতে সচেতনতাই কার্যকর পথ। বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন-২০১২ অনুযায়ী সাপটি সংরক্ষিত।

এটি দুর্লভ প্রজাতির একটি সাপ। পূর্বে শুধু বাংলাদেশের রাজশাহী অঞ্চলে এ সাপ পাওয়া গেলেও বর্তমানে এরা পদ্মা নদীর তীরবর্তী জেলা ও চরগুলোতেও বিস্তার লাভ করেছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

নারী প্রশিক্ষণার্থীদের ভাতা তুলে লাপাত্তা অফিস সহকারী

বিয়ের এক বছরে জীবন প্রদীপ নিভু নিভু তরুণীর

এবার হিরো আলমের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা

পররাষ্ট্র উপদেষ্টাকে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ফোন

প্রতিবন্ধকতা ছাড়াই সিলেটে ঢুকবে কোরবানির পশুর গাড়ি

সাভারে ৩১ দফা বাস্তবায়নে যুবদলের লিফলেট বিতরণ

মসজিদের নামকরণ নিয়ে সংঘর্ষ, আহত ১০

পরীক্ষা দিতে গিয়ে আটক জাবিপ্রবির ছাত্রলীগ নেতা

স্বাস্থ্য পরামর্শ / হাইপোসপেডিয়াস হলে ১৮ মাসের মধ্যে অপারেশন করা উচিত

বিএনপি নেতা প্রকৌশলী তুহিনের মুক্তির দাবিতে নিউইয়র্কে মানববন্ধন

১০

‘এটা আমার এলাকা’ বলেই ভাঙচুর শুরু করেন কলেজ ছাত্রদল সভাপতি

১১

অভিভাবকের আয়ের ভিত্তিতে টিউশন ফি নেবে ইউডা, থাকবে আরও সুবিধা

১২

বর্ধিত পল্লবী বাড়ি মালিক কল্যাণ সমিতি / আনীত অভিযোগ ‘উদ্দেশ্যমূলক ও বিভ্রান্তিকর’ দাবি

১৩

‘ভাইয়ার দিকে খেয়াল রেখো’ বললেন খালেদা জিয়া

১৪

কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় / নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ, শিক্ষক-কর্মকর্তাসহ ২১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা

১৫

জামিনে মুক্তি পেয়ে ৬ বিএনপি নেতাকর্মীকে কোপালেন যুবলীগ নেতা

১৬

পিরোজপুরে সমিতির পরিচালকের গ্রেপ্তার দাবিতে থানা ঘেরাও

১৭

দুই চিকিৎসক দিয়ে চলছে দেড় লাখ মানুষের সেবা

১৮

বিমানবন্দর সড়ক ব্যবহারে হাজযাত্রীদের জন্য বিশেষ নির্দেশনা

১৯

বরিশালের রাস্তায় উড়ছে টাকা আর টাকা

২০
X