নিয়ামতপুর (নওগাঁ) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৫ জানুয়ারি ২০২৫, ০৩:০১ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

ধার-দেনা করে আলু চাষ, লাভের বদলে কাঁধে ঋণের চাপ

আলু তুলে বস্তাভর্তি করছেন কৃষকরা। ছবি : কালবেলা
আলু তুলে বস্তাভর্তি করছেন কৃষকরা। ছবি : কালবেলা

দু’মাস আগেই বাজারে প্রতি কেজি আলুর দাম উঠেছিল ৭৫-৮০ টাকা। নওগাঁর নিয়ামতপুরে লাভের আশায় এবার গত বছরের চেয়ে তিনগুণ বেশি জমিতে আলু চাষাবাদ করেছেন কৃষকরা। লাভের বদলে ধার দেনা ও এনজিওর কিস্তি পরিশোধ নিয়েই দুশ্চিন্তায় পড়েছেন চাষিরা। এখন বাজারে নতুন আলু আসতে শুরু হয়েছে। এতেই বাজারে আলুর দাম কমে ১৫-২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে আলু চাষিরা তাদের উৎপাদিত আলু কম দামেই বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন।

নিয়ামতপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, নিয়ামতপুর উপজেলায় গত বছর আলুর চাষাবাদ হয়েছে ১ হাজার ২৩০ হেক্টর জমিতে। চলতি মৌসুমে উপজেলায় আলুর আবাদ বেড়ে ৩ হাজার ১২০ হেক্টর জমিতে আলু চাষাবাদ হয়েছে। আলু আবাদে রোগ ও পোকামাকড় প্রতিরোধে কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছেন কৃষিবিভাগ।

নিয়ামতপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকার আলু চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, লাভের আশায় এবারও চাষিরা দেশি জাতের আগাম আলু চাষ করেছেন। প্রতি বছর অক্টোবরের শেষে আলু রোপণ করে জানুয়ারিতে বাজারে বিক্রি করা হয়। এবার গত বছরের চেয়ে আলুর বীজের দাম বেশি হওয়ায় আলু আবাদে খরচ দ্বিগুণ বেড়েছে। কিন্তু আগাম জাতের সেই আলু বিক্রি করে এখন লোকসানে পড়েছেন কৃষকরা।

উপজেলার শ্রীমন্তপুর এলাকার আলু চাষি আব্দুর রাজ্জাক কালবেলাকে বলেন, আমি ১ বিঘা জমিতে দেশি জাতের আলু চাষ করেছি। আলু তোলার পর বাজারে ৮০০ টাকা মণ দরে আলু পাইকারি বিক্রি করেছি। এতে আমার প্রায় ৫-৬ হাজার টাকা লোকসান গুনতে হয়েছে। নিজের পরিশ্রম তো বাদই দিলাম।

আরেক আলু চাষি মাইনুল ইসলাম বলেন, এক বিঘা জমি ২০ হাজার টাকায় কন্ট্রাক নিয়েছি। ৭৫ টাকা কেজি দরে আলুর বীজ কিনে আলু চাষ করেছি। জমি থেকে আলু তোলার পর ৬০০ টাকা মণ ধরে পাইকারি দিয়েছে। গত বছরের তুলনায় এবার আলুর বীজ, সার, কীটনাশক ও শ্রমিকের মূল্য বেড়েছে। আলু চাষ করে আমার অনেক লোকসান হয়েছে। সামনের বছর থেকে আলু চাষাবাদ ছেড়ে দেব।

ভাবিচা ইউনিয়নের আলুচাষি আব্দুল মতিন বলেন, এনজিও থেকে কিস্তির টাকা তুলে আগাম জাতের দুই বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছি। এখন বাজারে আলুর দাম কম। এখন ক্রেতার অভাবে আলু বিক্রি করতে পারছি না। প্রতিদিনই আলুর দাম কমছে। আলু বিক্রি করে উৎপাদনের খরচ তোলা যাবে না। এদিকে আবার আগাম আলু হিমাগারে সংরক্ষণ করা যায় না। এখন দুশ্চিন্তায় রয়েছি আলু বিক্রি করে তো আর এনজিওর ঋণ পরিশোধ করা সম্ভব নয়।

নিয়ামতপুর উপজেলা কৃষি অফিসার কামরুল হাসান কালবেলাকে বলেন, চলতি মৌসুমে আলুর বীজের দাম চওড়া হওয়ায় আলু উৎপাদনের খরচটাও একটু বেশি পড়ছে। এখন বাজারে নতুন আলুর দাম কম। এতে কৃষক ন্যায্যমূল্য পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন। তবে উৎপাদন ভালো হওয়ায় কৃষকদের লোকসান হবে না বলে জানান তিনি।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

সকালের যে ৫ অভ্যাস রাতের ঘুম নষ্ট করে

আজ বেগম রোকেয়া দিবস

জাপানে ভূমিকম্পের সর্বশেষ অবস্থা

বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় শীর্ষে ঢাকা

টানা ৪ দিন তেঁতুলিয়ায় তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির ঘরে

দক্ষিণ লেবাননে ইসরায়েলের ব্যাপক বোমা হামলা

বিএনপি কর্মীকে কুপিয়ে হত্যা, বাড়িতে আগুন-লুটপাট

যুক্তরাষ্ট্রের কাছে নিরাপত্তার ‘গ্যারান্টি’ চান জেলেনস্কি

ঢাকায় শীতের আমেজ, কমছে তাপমাত্রা 

গরম না ঠান্ডা পানি? শীতে গোসলের আগে যেগুলো মাথায় রাখবেন

১০

অ্যাকাউন্টসে নিয়োগ দিচ্ছে ইজি ফ্যাশন

১১

এপিবিএন সদস্যের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

১২

বিলিং বিভাগ অফিসার নেবে আকিজ বশির গ্রুপ

১৩

রাজধানীতে আজ কোথায় কী

১৪

মঙ্গলবার রাজধানীর যেসব এলাকার মার্কেট বন্ধ

১৫

৯ ডিসেম্বর : আজকের নামাজের সময়সূচি

১৬

জাপানে সুনামির সব সতর্কতা প্রত্যাহার

১৭

ফ্ল্যাটে ঢুকে সাংবাদিককে পুলিশ কনস্টেবলের হাতুড়ি পেটা

১৮

জানা গেল আর্জেন্টিনার ফুটবলারকে লাথি মারা সেই ফুটবলারের পরিচয়

১৯

হামজাকে দলে পেতে মরিয়া বিশ্বের অন্যতম সেরা ক্লাব

২০
X