রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার চতরা ইউনিয়নের কুমারপুর এলাকার করতোয়া নদী থেকে অবাধে চলছে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন। নদীশাসনের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) ব্লক দিয়ে নির্মিত পাড় ঘেঁষে বালু উত্তোলন করছেন ব্যবসায়ীরা। এতে হুমকির মুখে পড়েছে কৃষিজমি, বাড়িঘর, রাস্তাঘাট, মসজিদসহ বিভিন্ন স্থাপনা।
চতরা ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম এ বালু কাটার সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
স্থানীয়দের অভিযোগ, শ্যালো মেশিন দিয়ে দিবালোকে অবৈধভাবে বালু কাটছেন সিরাজুল ইসলাম। তিনি গ্রামের রাস্তা নির্মাণকাজের বালু সরবরাহের চুক্তি নিয়েছেন। এ ছাড়াও কন্টাক্ট নিয়ে এলাকার লোকজনের বাড়িঘরেরও বালু ভরাট করে আসছেন দীর্ঘদিন। করতোয়া নদীর মোহনা থেকে এভাবে বালু উত্তোলনের ফলে নদী গভীর হচ্ছে। এতে পাশের বাড়িঘরসহ ব্লক ধসে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।
স্থানীয়রা বলেন, কুমারপুর গ্রামের করতোয়া নদীর তীরে বাড়ি সিরাজুল ইসলামের। শেখ হাসিনা সরকারের সময় থেকে এখন পর্যন্ত বালু বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা কামিয়েছেন তিনি। সবকিছু ম্যানেজ করে তিনি এখনো বালু উত্তোলন করছেন। নদীর পাড় ঘেঁষে বালু উত্তোলনে গভীর খাদের সৃষ্টি হয়েছে। গত বছর নদী পারাপারের সময় সেখানে ডুবে এক যুবকের মৃত্যু হয়। এ ছাড়া একই স্থানে গোসল করতে গিয়ে ডুবে মারা গেছে এক শিশু।
কুমারপুর গ্রামের মধ্যে দিয়ে বয়ে যাওয়া করতোয়া নদী দুই পাড়ের লোকজন স্কুল-কলেজ এবং কৃষিকাজের জন্য সবসময়ই পারাপার হয়ে থাকে। এখন ভয়ভীতি নিয়ে নদী পারাপার হতে হচ্ছে তাদের।
এ ছাড়া কুমারপুর গ্রামের মসজিদের পশ্চিম পাশে কোটি টাকা ব্যয়ে নদীর পাড়ে ব্লক স্থাপন করেছে পাউবো। সেই ব্লক ঘেঁষে বালু উত্তোলন করছে। এতে নদীর পাড় হুমকির মুখে পড়েছে। যে কোনো সময় ব্লকসহ পাড় ধসে যেতে পারে। হুমকির মুখে পড়েছে বিভিন্ন স্থাপনা।
স্থানীয়দের দাবি, এখান থেকে দ্রুত বালু উত্তোলন বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমি নদীর সাইড থেকে বালু উত্তোলন করছি। নদী থেকে নয়। এ ছাড়া উপজেলার করতোয়া নদীতে শতাধিক স্থানে বালু উত্তোলন চলছে।
জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খাদিজা বেগম বলেন, যারাই করতোয়া নদী থেকে বালু উত্তোলন করছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন