সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে ২৪ লাখ টাকা ব্যয়ের সেতুর কাজ শুরু করলেও স্থানীয় প্রভাবশালী মহলের বাধায় তিন মাস ধরে বন্ধ রয়েছে সেতুর কাজ। এতে সড়ক সংলগ্ন বোরো, আমন জমিনের ফসলাদি আনা-নেওয়া ও স্কুলের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে ভোগান্তির শেষ হচ্ছে না।
জানা যায়, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস কর্তৃক বালিজুরী ইউনিয়নের মাহতাবপুর গ্রামে ২৪ লাখ টাকা প্রাক্কলন ব্যয়ে কাজটি পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স সোনা মিয়া ট্রেডিং। তাদের ৮টি প্যাকেজের ৭টি প্যাকেজের কাজ সমাপ্ত করতে পারলেও মাহতাবপুর গ্রামের সেতুর কাজটি মাটির কাজ শুরু করার পরই প্রভাবশালী একটি মহলের বাধার মুখে বন্ধ হয়ে যায়।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স সোনা মিয়া ট্রেডিংয়ের স্বত্বাধিকারী জুনায়েদ আহমদ জানান, মার্চ মাসের শুরুতে তিনি সেতু নির্মাণের উদ্দেশ্যে মাটির কাজ শেষ করেন। নির্মাণের দ্বিতীয় ধাপ শুরু করতে গেলে গ্রামের একটি পক্ষের বাধায় বন্ধ করতে হয় কাজটি।
সম্প্রতি সেতুর কাজ দ্রুত শুরু করার জন্য তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে মাহতাবপুর গ্রামের ১২ জনের স্বাক্ষরিত একটি লিখিত আবেদন জমা দেন।
আবেদনে উল্লেখ করা হয়, মাহতাবপুর গ্রামের কবরস্থান থেকে মাহতাবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যাওয়া-আসার রাস্তার মধ্যবর্তী স্থানে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস কর্তৃক নদী ও বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের জন্য একটি সেতুর কাজ চলমান ছিল। হঠাৎ করে একটি প্রভাবশালী মহল তাদের ব্যক্তি স্বার্থ হাসিলের জন্য কাজটি বন্ধ রাখতে তৎপর হয়ে ওঠে। এমতাবস্থায় স্কুলের কোমলমতি শিক্ষার্থী ও গ্রামের সাধারণ জনগণ তথা এলাকাবাসী যাতায়াত করতে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। তাছাড়া এই সড়ক সংলগ্ন বোরো, আমন জমিনের ফসলাদি আনা-নেওয়া করতে এলাকাবাসী কষ্ট করেছেন। দ্রুত সময়ের মধ্যে সেতুর কাজ সম্পন্ন হলে নদী ও বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের দাবি জানানো হয় ওই আবেদনে।
মাহতাবপুর গ্রামের ফরিদ উদ্দিন বলেন, মাহতাবপুর গ্রামবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি ছিল এই রাস্তার উপর সেতু নির্মাণ করা। সেতু নির্মাণ কাজ যেন দ্রুত সময়ের মধ্যে শুরু করা হয় সেজন্য তিনি গ্রামবাসীর পক্ষ থেকে প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানান।
তাহিরপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মুহিবুল ইসলাম বলেন, মাহতাবপুর গ্রামের সড়কের উপর সেতুটির কাজ ঠিকাদার শুরু করেছিল কিন্তু কয়েকজনের অভিযোগের কারণে কাজটি বন্ধ করতে হয়। গ্রামবাসী আবার কাজটি শুরু করতে আবেদন করেছে। ইউএনও বিষয়টি দেখে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলেছেন।
তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আবুল হাসেম বলেন, মাহতাবপুর গ্রামবাসীর একটি আবেদন পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন