পর্যটন নগরী কুয়াকাটায় অর্ধশত আবাসিক হোটেল ও রিসোর্টে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির থ্রি-ফেজ সংযোগ থাকলেও অধিকাংশ হোটেলে নেই সরকার নির্দেশিত বাধ্যতামূলক সৌরবিদ্যুৎ (রুফটপ সোলার) সিস্টেম। ফলে উপেক্ষিত হচ্ছে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারের জাতীয় নীতি, বাড়ছে জাতীয় গ্রিডের ওপর অপ্রয়োজনীয় চাপ।
বিদ্যুৎ বিভাগের ২০১৮ সালের (সংশোধিত ২০১৯) ‘নেট মিটারিং গাইডলাইন’-এর আওতায় ১০ কিলোওয়াট বা তদূর্ধ্ব লোডবিশিষ্ট আবাসিক, বাণিজ্যিক ও শিল্প ভবনে সৌরবিদ্যুৎ ব্যবস্থা স্থাপন বাধ্যতামূলক। হোটেল-মোটেল ও রিসোর্টগুলো এই নীতিমালার আওতায় পড়লেও কুয়াকাটায় এর বাস্তবায়ন প্রায় অনুপস্থিত।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কুয়াকাটায় অন্তত ৫০টির বেশি হোটেল ও রিসোর্টে ১০ থেকে ৫০ কিলোওয়াটের অধিক থ্রি-ফেজ সংযোগ চালু রয়েছে। কিন্তু সেসব ভবনের ছাদে নেই কোনো ধরনের সৌর প্যানেল। হোটেল মালিকদের একাংশের দাবি, সোলার স্থাপনের খরচ ও রক্ষণাবেক্ষণ জটিলতা, আর অন্যদিকে প্রশাসনিক নজরদারির অভাবে বিষয়টি উপেক্ষিত থাকছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি কেবল আইন লঙ্ঘনই নয়, বরং দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা ও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনে একটি বড় অন্তরায়। নবায়নযোগ্য জ্বালানি কর্তৃপক্ষ (SREDA) ও বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (BPDB) বিভিন্ন সময়ে নীতির কঠোর বাস্তবায়নের কথা বললেও মাঠপর্যায়ে এর প্রতিফলন নেই বললেই চলে।
পরিবেশবিদরা বলছেন, কুয়াকাটার মতো উপকূলীয় এলাকায় সারা বছর সূর্যপ্রকাশ বেশি থাকায় এখানেই সৌরবিদ্যুৎ ব্যবস্থার বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। সঠিক বাস্তবায়ন হলে কুয়াকাটা হতে পারে দেশের প্রথম পরিবেশবান্ধব ‘গ্রিন ট্যুরিজম জোন’।
এ বিষয়ে পল্লী বিদ্যুৎ কুয়াকাটা শাখার এজিএম মোতাহার হোসেন কালবেলাকে বলেন, সোলার প্যানেল ছাড়া যেসব হোটেলে লাইনগুলো দেওয়া হয়েছে সেটা আমাদের সরকারি নির্দেশনার আগে। নির্দেশনা পাওয়ার পরে কোনো সংযোগ দেওয়া হয়নি।
পটুয়াখালী জেলা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার মোহাম্মাদ আবুল কাশেম কালবেলাকে বলেন, ১০ কিলোওয়াটের মধ্যে সোলার প্যানেল সিস্টেম বাধ্যতামূলক। কেউ নিয়মবহির্ভূত কাজ করলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মন্তব্য করুন