আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলায় চাহিদার চেয়ে ৩ হাজার ১৮৫টি পশু বেশি প্রস্তুত করা হয়েছে। বিগত বছরের তুলনায় দাম এবার কিছুটা কম। তবে এখনো পুরোদমে পাইকারি ব্যবসায়ীরা বাজারে না আসায় পশুর বাজার জমে ওঠেনি। চাহিদার অতিরিক্ত পশুগুলো দেশের বিভিন্ন স্থানের চাহিদা পূরণে রপ্তানি করা হবে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের তথ্যমতে, এ বছর উপজেলার চাহিদা ১২ হাজার ৬১৩টি হলেও প্রস্তুত করা হয়েছে ১৫ হাজার ৭৯৮টি পশু। অতিরিক্ত ৩ হাজার ১৮৫টি। এসব পশুর মধ্যে রয়েছে- ৬ হাজার ৬৪৫টি গরু, ৭ হাজার ৭০৫টি ছাগল এবং ১ হাজার ৪৪৮টি ভেড়া। গরুর মধ্যে ৪ হাজার ৯টি ষাঁড়, ৪৯৫টি বলদ এবং ২ হাজার ১৪১টি গাভি রয়েছে।
খামারিরা বলছেন, দেশি জাতের পশুতেই এবার বেশি জোর দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে উপজেলায় ৭০৮টি গবাদিপশুর খামার রয়েছে। এর মধ্যে নিবন্ধিত ৪১টি এবং অনিবন্ধিত ৬৬৭টি রয়েছে। কৃষকদের উদ্যোগে গড়ে ওঠা এসব খামারে পশু মোটাতাজা করা হচ্ছে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়ে কাঁচা ঘাস, খৈল, ব্র্যান্ড, ধানের কুঁড়া ও ভুট্টা দিয়ে। তবে পশুখাদ্যের দাম বাড়ায় খরচও বেড়েছে বলে জানান খামারিরা।
শেষ সময়ে ভালো লাভের আশায় ব্যস্ত খামারিরা। খুব যত্ন সহকারে গবাদিপশুর দেখভাল করছেন তারা। ইতোমধ্যে খামারিরা বাজারে পশু তুলতে শুরু করেছেন।
উপজেলার পৌরসভার পশুরহাট, আমডুঙ্গি পশুরহাট, মেলাবাড়ী পশুরহাট, আটপুকুর পশুরহাট ও বারাইহাট পশুরহাটের গরু দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে রপ্তানি হয়। ওই অঞ্চলগুলোর পাইকারি ব্যবসায়ীরা ফুলবাড়ী উপজেলার গরুর হাটগুলো থেকে পশু ক্রয় করেন।
পৌরশহরের স্বজনপুকুর এলাকার আমিন এগ্রো ফার্মের ব্যবস্থাপক মো. ওমর ফারুক বলেন, ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে ফার্মে ১৯০টি গরু ও দুটি মহিষ লালনপালন করা হচ্ছে। খামারে দেশি গরুর পাশাপাশি ব্রাহামা, শাহিওয়াল, নেপালি, হরিয়ানা ও উন্নত জাতের গরু রয়েছে। এবার ছোট আকৃতির গরুর চাহিদা বেশি হওয়ায় ক্রেতাদের চাহিদানুযায়ী গরু প্রস্তুত করা হচ্ছে।
আমিন এগ্রো ফার্মের স্বত্বাধিকারী মো. রুহুল আমিন বলেন, খামারে কোরবানি উপযোগী ১৯০টি গরু রয়েছে। এগুলো বিক্রি করা হবে। গরু হাটে তোলা হবে না। ফার্মে রেখেই বিক্রি করা হবে। অনেক ব্যবসায়ী যোগাযোগ করছেন। তবে ইতোমধ্যে ফার্ম থেকেই ২৩টি গরু বিক্রি হয়ে গেছে। ফার্মে দেশি গরুর সংখ্যাই বেশি। ব্যবসায়ীদের কাছে ছোট আকারের গরুর চাহিদা বেশি। ফার্মের গরুর দাম আকার ও প্রকার ভেদে ৬০ হাজার থেকে সাড়ে তিন লাখ টাকা পর্যন্ত ধরা হয়েছে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সারোয়ার হাসান বলেন, আসন্ন কোরবানির পশুগুলো যাতে স্বাস্থ্য সম্মতভাবে মোটাতাজাকরণসহ বাজারজাত করা যায়, সেজন্য খামারিদেরকে প্রাণিসম্পদ দপ্তর থেকে নিয়মিত পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
বিজিবির ফুলবাড়ী ২৯ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল এএম জাবের বিন জব্বার জানান, সীমান্তে চোরাচালান ও অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বিজিবির নজরদারি জোরদার করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন