ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম বলেছেন, ভারত কোনো অবস্থাতেই চায় না ড. ইউনূস সরকার বাংলাদেশের গদিতে থাকুক। ভারত সরকার কোনোভাবেই তাকে মেনে নিতে পারে না।
শনিবার (২৪ মে) বিকেলে লক্ষ্মীপুর দক্ষিণ তেমুহনী এলাকায় ইসলামী আন্দোলনের জেলা কার্যালয়ে দায়িত্বশীলদের প্রশিক্ষণ কর্মশালা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
প্রশিক্ষণ কর্মশালা শেষে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য লক্ষ্মীপুর-১ (রামগঞ্জ) আসনে দলীয় প্রার্থী হিসেবে জেলা কমিটির সহসভাপতি জাকির হোসেন পাটওয়ারীর নাম ঘোষণা করেন তিনি।
মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম বলেন, ইউনূস সরকার ভারতের গোলামী থেকে আমাদের মুক্ত করার চেষ্টা করছে। এটি ভারত কোনো অবস্থাতেই সহ্য করতে পারছেন না। এজন্য ‘র’ আমাদের দেশের কিছু মানুষের ওপর সওয়ার করে ক্ষমতার প্রলোভন দেখিয়ে তারা ইউনূস সরকারকে পদত্যাগ করার জন্য বাধ্য করতে চাচ্ছে। এ দেশের জনগণ সচেতন। কোনো অবস্থাতেই ‘র’-এর ফাঁদে এদেশের জনগণ পা দেবে না।
তিনি বলেন, সংস্কারের বাইরে ড. ইউনূসের সরকারকে যারা নামাতে চান, তারা এদেশের রাজনীতি করেন না, তারা দিল্লি ও ‘র’-এর রাজনীতি করেন। তারা দেশ, জনগণ ও মানবতার শত্রু।
ফয়জুল করিম বলেন, সেনাপ্রধানের রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে আলোচনা না করাই ভালো। সেনাপ্রধান তার দায়িত্ব পালন করাই উচিত। সেনাপ্রধানের দায়িত্ব হলো দেশকে রক্ষা করা। দেশের রাজনীতি করা তার দায়িত্ব নয়। আমরা অনুরোধ করব, তিনি তার দায়িত্ব পালন করবেন। যা তার দায়িত্ব না, অনধিকার চর্চা তিনি করবেন না।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের এ নেতা বলেন, ভারতের কোনো প্রেসক্রিপসন আমাদের দেশের জনগণ বাস্তবায়ন করবে না। যদি মানবিক করিডোর ভারতের পক্ষে হয়, আমরা নাই। যদি দেশের পক্ষে হয়, আমরা আছি। আমরা আমাদের দেশের স্বার্থে কাজ করব, আমরা ভারতের স্বার্থে কাজ করব না। ভারত যতটুকু আমাদেরকে স্বার্থ দেবে, আমরাও ততটুক তাদের স্বার্থ দেব।
তিনি আরও বলেন, বরিশাল সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলাম। তৎকালীন নির্বাচন কমিশন আশ্বস্ত করেছিল, নিরপেক্ষ গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দেবে। তাদের কথায় আস্থা রেখে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলাম। কিন্তু তারা গ্রহণযোগ্য নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে ব্যর্থ হয়েছে। তৎকালীন সময় শেখ হাসিনার আপন ফুফাতো ভাইকে সরকার, সরকারি লোক, প্রশাসন সবাই মিলে অবৈধভাবে নির্বাচিত করিয়েছেন।
মুফতি ফয়জুল করীম বলেন, তখন আমরা মামলা করি নাই, কারণ তখন মামলা করা বৃথা। বিচারালয় সরকারের অধীনস্থ ছিল, সেখানে মামলা করলে আমরা ন্যায্য বিচার পেতাম না। যেহেতু অন্তর্বর্তী সরকারের সময় বিচারালয় নিরপেক্ষ, এজন্য আমরা মামলা করেছি, আশা করি আদালত আমাদের পক্ষে রায় দেবে। যদি আদালত আমাদের পক্ষে রায় না দেয়, তখন আমরা ও দেশের জনগণ দেখবে, যে আসলে দ্বৈতনীতি চলতেছে। এখানে আসলে আদালত বলতে কিছুই নেই, এখানে যারা চাপ খাটাতে পারে তাদের পক্ষেই রায় আসে। আর যারা চাপ দেয় না তাদের পক্ষে রায় আসে না।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ লক্ষ্মীপুর জেলা শাখার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইনের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কমিটির প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক নূরুল করীম আকরাম, সহগঠনিক সম্পাদক শেখ মুহাম্মদ জয়নাল আবেদীন, জেলা কমিটির সহসভাপতি মহি উদ্দিন, সেক্রেটারি জহির উদ্দিন, প্রচার ও দাওয়া সম্পাদক মাহমুদুল হাসান, ইসলামী যুব আন্দোলনের জেলা শাখার সভাপতি মোখলেছুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক শোরাফ উদ্দিন স্বপন প্রমুখ।
মন্তব্য করুন