নরসিংদীর রায়পুরায় গুলিবিদ্ধ হওয়া মাদ্রাসা ছাত্রী তাফসিরা (১২) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। বৃহস্পতিবার (১২ জুন) বিকেল ৪টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।
নিহত তাফসিরা শ্রীনগর গ্রামের আশরাফ আলীর মেয়ে এবং স্থানীয় একটি মাদ্রাসার ছাত্রী।
এর আগে গত ৯ জুন রায়পুরা উপজেলার শ্রীনগর ইউনিয়নে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে চরম উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। পরে স্থানীয় সোহেল ও তার অনুসারীরা বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান রিয়াজ মোরশেদ খান রাসেলের সমর্থকদের ওপর দেশীয় ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। সংঘর্ষের সময় বাজারের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়া তাফসিরা গুলিবিদ্ধ হন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর তাফসিরাকে তাৎক্ষণিক উদ্ধার করে প্রথমে রায়পুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। তার অবস্থা গুরুতর হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। সেখানে চারদিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে অবশেষে বিকেলে তার মৃত্যু হয়।
গত ৯ জুন সংঘর্ষের ঘটনার পরপরই পুলিশ সোহেলের বাড়িতে অভিযান চালায়। অভিযানে সোহেলের বাড়ি ও তার আশপাশের এলাকা থেকে দেশীয় অস্ত্র (টেটা-বল্লম), ৫টি চাপাতি, ৭টি ছুরি, লোহার পাইপ, ৮টি মোবাইল ফোন, রেজিস্ট্রেশনবিহীন ২টি মোটরসাইকেল, ১টি ল্যাপটপ, ডিভিআর ও টর্চলাইটসহ বিভিন্ন জিনিস উদ্ধার করা হয়েছে।
তাফসিরার ভাই ইয়াছিন মিয়া জানান, আমার বোন বাজারে যাচ্ছিল। হঠাৎ সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে যায়। গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর হাসপাতালে নেওয়া হলেও শেষ পর্যন্ত বাঁচানো গেল না। সোহেল ও তার বাহিনীর সদস্যেদের দৃষ্টান্তমূল শাস্তি দাবি জানাচ্ছি।
এর আগে গত ৭ ফেব্রুয়ারি একইভাবে ইউপি চেয়ারম্যান রাসেলের বাড়িতে হামলা চালায় সোহেল মিয়া ও তার অনুসারীরা। ওই সময় রাসেলকে না পেয়ে তার ইউপি কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ করে এবং চাচাতো ভাইয়ের স্ত্রী শান্তা ইসলামকে গুলি করে হত্যা করে তারা।
রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আদিল মাহমুদ বলেন, গুলিবিদ্ধ মাদ্রাসা ছাত্রীর নিহতের ঘটনায় থানায় কোনো মামলা হয়নি। আমরা পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতেছি। হয়তো দাফন শেষে মামলা করতে থানায় আসতে পারে।
এছাড়া গত ৯ জুন হামলার ঘটনার পর সোহেলের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। তবে পালিয়ে যাওয়ায় তাকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। তার বিরুদ্ধে হত্যা, অস্ত্রসহ থানায় ১২টি মামলা রয়েছে।
মন্তব্য করুন