রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত শিক্ষক মাসুকা বেগম নিপুর দাফন সম্পন্ন হয়েছে। শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী মঙ্গলবার (২২ জুলাই) বিকেলে বড় বোনের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার সোহাগপুর গ্রামে তাকে দাফন করা হয়।
পরিবারের ছোট মেয়েকে হারিয়ে অনেকটা নির্বাক বাবা সিদ্দিক আহমেদ। মেয়ে মাসুকা বেগম নিপু (৩৭) আট বছর আগে ঢাকার উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে শিক্ষকতা পেশায় যোগদান করেন। তিনি প্রাইমারি শাখার বাংলা মাধ্যমের ইংরেজি বিষয়ের শিক্ষক ছিলেন।
স্বজনরা জানান, সোমবার (২১ জুলাই) বিমানটি বিধ্বস্তের সময় মাসুকা বেগম ক্লাসে ছিলেন। পরে দগ্ধ অবস্থায় তাকে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত সাড়ে ১২টার দিকে তিনি মারা যান।
শিক্ষিকা মাসুকার মৃত্যুতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তার মৃত্যুর ঘটনায় পরিবারজুড়ে চলছে শোকের মাতম। নিহত মাসুকা ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরের চিলোকুট গ্রামে হলেও বসবাস করতেন শহরের মেড্ডা এলাকায়।
জানা যায়, মঙ্গলবার বিকেলে মাসুকার মরদেহ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে সোহাগপুর গ্রামে তার বড় বোনের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়।
মাসুকা বেগমের স্বজনরা জানান, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরেক শিক্ষককে মাসুকা বেগম তার শেষ ইচ্ছার কথা জানিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, মৃত্যুর পর যেন তাকে বড় বোনের বাড়িতে দাফন করা হয়। সে অনুযায়ী বাদ আসর তার মরদেহ সোহাগপুর গ্রামে দাফন করা হয়।
নিহতের বড় বোনের মেয়ে নিধি বলেন, খালামনি আমাদের অনেক আদর করতেন। কোনোদিন ধমক দিয়ে কথা বলেননি। মৃত্যুর খবর পাওয়ার আগ পর্যন্ত দোয়া করেছিলাম আল্লাহ্ যেন খালামনিকে বাঁচিয়ে রাখে। শেষ পর্যন্ত খবর এলো তিনি আর নেই। দোয়া করি আল্লাহ্ যেন বেহেস্ত নসিব করেন।
নিহতের বাবা জানান, দুই মেয়ে ও এক ছেলের মধ্যে মাসুকা সবার ছোট ছিল। তার মা মারা গেছে ১৫ বছর আগে। মারা যাওয়ার পর থেকে সবসময় সে আমার খোঁজখবর নিত। তার বিয়ে দিতে পারিনি। আমি এই শোক কী করে সইব।
মন্তব্য করুন