কেরানীগঞ্জে দুদিন ধরে হঠাৎ করে লোডশেডিংয়ের মাত্রা অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে। দিনের বেলায় ঘণ্টায় ঘণ্টায় বিদ্যুৎ যাওয়া-আসার খেলা আর রাতে একাধিকবার বিদ্যুৎবিভ্রাটে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন বাসিন্দারা।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, কেরানীগঞ্জ উপজেলার ঢাকা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-৪ এর আওতাধীন বিভিন্ন এলাকাজুড়ে লোডশেডিং এখন নিত্যদিনের ঘটনা। কোথাও প্রতি ঘণ্টায়, কোথাও তিন ঘণ্টা অন্তর বিদ্যুৎ এসে আবার মিনিট পনেরো পরেই চলে যাচ্ছে।
গত কয়েকদিনের প্রচণ্ড গরমে বিদ্যুৎ না থাকায় ঘরে থাকা কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়েছে। নবজাতক শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধ, হৃদরোগী ও ডায়াবেটিস রোগীরা ঝুঁকির মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। রাতে ঘুম না হওয়ায় অনেকেই দিনের বেলায় ক্লান্তিতে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।
বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কাজ অনলাইন হয়ে যাওয়ায় সেবা পেতে বিড়ম্বনার স্বীকার হচ্ছেন সেবাগ্রহীতারা। ভূমি, কর, জন্মনিবন্ধনসহ বিভিন্ন সেবা গ্রহণ করতে এসে বিদ্যুৎ না থাকায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে হচ্ছে সেবাগ্রহীতাদের।
কেরানীগঞ্জের বিভিন্ন গার্মেন্ট ও প্লাস্টিক কারখানার মালিকরা জানাচ্ছেন, জেনারেটর চালিয়ে উৎপাদন বজায় রাখতে গিয়ে বেড়ে যাচ্ছে খরচ। ফলে পণ্যের উৎপাদন ব্যয়ে উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধির আশঙ্কা করা হচ্ছে।
চলমান এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী অনেক শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, বিদ্যুৎবিভ্রাটের কারণে পড়ালেখা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। কেরানীগঞ্জ উপজেলার মুগারচর গ্রামের পরীক্ষার্থী আফরিন জানায়, বই খুলে বসার পরই বিদ্যুৎ চলে যায়, গরমে কষ্ট হয়ে যায় পড়ায় মন বসানো।
ঢাকা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-৪ এর সহকারী জেনারেল ম্যানেজার (ইএন্ডসি) মো. নাসিম উজ জামান কালবেলাকে বলেন, বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ থাকায় জাতীয় গ্রিড থেকে পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ পাওয়া যাচ্ছে না। আমাদের কেরানীগঞ্জ অঞ্চলের চাহিদা ৯৫ মেগাওয়াট হলেও পাচ্ছি মাত্র ৬০ মেগাওয়াট। তাই বাধ্য হয়েই এলাকাভিত্তিক লোডশেডিং করতে হচ্ছে।
তিনি বলেন, পরিস্থিতি সাময়িক, তবে জনগণকে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানাচ্ছি। গ্রিড পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই পুনরায় নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা হবে।
অসহ্য গরম ও বারবার বিদ্যুৎবিভ্রাটে ক্ষুব্ধ কেরানীগঞ্জবাসী দ্রুত সমাধান চায়। স্থানীয় ব্যবসায়ী, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা বলছেন, এমন অবস্থা চলতে থাকলে জীবনযাত্রা কঠিন হয়ে পড়বে।
মন্তব্য করুন