গাইবান্ধার সাঘাটা থানার পাশের পুকুর থেকে মরদেহ উদ্ধার হওয়া যুবক সিজু মিয়ার মৃত্যুকে ‘পুলিশি হত্যা’ দাবি করে মানববন্ধন ও পুলিশ সুপারের কার্যালয় ঘেরাও করেছেন তার পরিবার ও এলাকাবাসী।
শনিবার (২৬ জুলাই) বিকেল ৫টার দিকে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করে কার্যালয় ঘেরাও করেন তারা।
নিহত সিজু মিয়া সদর উপজেলার গিদারি ইউনিয়নের বাগুরিয়া গ্রামের দুলাল মিয়ার ছেলে এবং ইউনিয়ন শিবিরের সভাপতি ছিলেন। মানববন্ধনে নিহতের মা মোছা. রিক্তা বেগম, বড় বোন খুশি বেগম, স্থানীয় ইউপি সদস্য রমজান আলী, গাইবান্ধা জেলা ছাত্রশিবিরের সভাপতি ফেরদৌস সরকার রুম্মানসহ অনেকে বক্তব্য দেন।
নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসীর অভিযোগ, পুলিশ পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করে পুকুরে ফেলে রাখে। এ দাবিতে শনিবার বিকেলে শত শত মানুষ গাইবান্ধা জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেন। পরে তারা বৃষ্টি উপেক্ষা করে পুলিশ সুপারের কার্যালয় ঘেরাও করে অবস্থান নেন।
বক্তব্যে তারা বলেন, সিজু সাঁতার জানত, সে পানিতে ঝাঁপ দিয়ে মরতে পারে না। তাকে থানায় ডেকে নিয়ে পরিকল্পিতভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এরপর মরদেহ পুকুরে ফেলে ‘পালানোর সময় পানিতে ডুবে মৃত্যু’ নাটক সাজিয়েছে পুলিশ।
সিজুর মা রিক্তা বেগম বলেন, কয়েকদিন আগে সে একটি পুরোনো অ্যান্ড্রয়েড ফোন কিনেছিল। সাঘাটা থানার এসআই রাকিব সেটিকে চোরাই ফোন বলে অভিযোগ করলে ইউপি সদস্য রমজান আলীর উপস্থিতিতে ফোনটি থানায় জমা দেওয়া হয়। এর পরও বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সিজুকে থানায় যেতে বলা হয়। এর কিছুক্ষণ পরই তাকে হত্যা করা হয়।
স্থানীয় ইউপি সদস্য রমজান আলী বলেন, মরদেহ উদ্ধারের সময় তার পকেট থেকে পাওয়া কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের প্রবেশপত্র একটুও ভিজে যায়নি, অথচ বলা হচ্ছে সে ১২ ঘণ্টা পানিতে ছিল—এটা বিশ্বাসযোগ্য নয়।
গাইবান্ধা ছাত্রশিবির সভাপতি রুম্মান বলেন, সিজু নম্র-ভদ্র ছেলে ছিল। তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমাদের কাছে ঘটনার ভিডিও রয়েছে।
গাইবান্ধা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরিফুল ইসলাম ঘটনাস্থলে গিয়ে বিক্ষুব্ধ জনতাকে শান্ত করেন এবং ঘটনার সঠিক তদন্ত ও দোষীদের বিচারের আশ্বাস দেন।
পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে সিজু মিয়া সাঘাটা থানায় ঢুকে সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মহসিন আলীকে ছুরিকাঘাত করে পালানোর চেষ্টা করেন। এরপর তিনি থানা সংলগ্ন পুকুরে ঝাঁপ দেন। শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টায় সাঘাটা পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের পুকুরে কচুরিপানার মধ্যে থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস।
মন্তব্য করুন