চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে জামায়াতে ইসলামীর বিজয় মিছিলে বক্তব্য প্রদানকালে স্ট্রোক করে উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি আবুল কালামের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার (০৫ আগস্ট) সন্ধ্যা ৬টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
মৃত আবুল কালামের বাড়ি লোহাগাড়া উপজেলার তেওয়ারি খিল এলাকায়। তিনি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী লোহাগাড়া উপজেলা শাখার সেক্রেটারি এবং পদুয়া এসিএম উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি। তিনি দীর্ঘদিন পদুয়া আইনানুল কামিল মাদ্রাসার আরবি বিভাগের প্রভাষক ছিলেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন লোহাগাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মুহাম্মদ ইকবাল হোসাইন। তিনি বলেছেন, সাড়ে ৫টার দিকে লোহাগাড়া সদরের একটি হাসপাতালে তাকে ভর্তি করা হয়েছিল। প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে হার্ট অ্যাটাকে তার মৃত্যু হয়েছে।
খবর নিয়ে জানা জায়, মঙ্গলবার বিকেলে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকারের পতনের প্রথম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে মিছিল ও সমাবেশের আয়োজন করে লোহাগাড়া উপজেলা জামায়াত। একটি মিছিলে নেতৃত্ব দিয়ে সমাবেশে যোগ দিচ্ছিলেন মাওলানা কালাম। সামনের সারিতে থাকা জামায়াতের এই নেতা বক্তব্য দেওয়ার সময় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর নেতাকর্মীরা দ্রুত তাকে উদ্ধার করে লোহাগাড়া সদরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
অন্যদিকে মিছিলে অংশ নেওয়া নেতাকর্মীরা জানান, মিছিলে বক্তব্য দেওয়ার সময় অসুস্থ হয়ে পড়েন উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি আবুল কালাম। পরে তাকে লোহাগাড়া মা-শিশু হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. মো. ইকবালও উপস্থিত ছিলেন। তিনি ইসিজি পরীক্ষার পর জানান, আবুল কালাম স্ট্রোক করে মারা গেছেন।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক প্যানেল স্পিকার শাহজাহান চৌধুরী জানান, ‘মাওলানা আবুল কালাম ভাই আমার একদম পাশে ছিলেন। হঠাৎ দেখি তিনি অস্থির হয়ে পড়েছেন। আমরা দ্রুত তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাই, কিন্তু চিকিৎসক জানান, তিনি আর নেই।’
মাওলানা আবুল কালামের এ আকস্মিক মৃত্যুতে মিছিলে অংশ নেওয়া হাজারো নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ কান্নায় ভেঙে পড়েন এবং পুরো বটতলী শহরে শোকের ছায়া নেমে আসে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে লোহাগাড়া উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারির দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন এবং দলের প্রতি তার নিষ্ঠা ও ত্যাগ সর্বজনবিদিত ছিল, যা স্থানীয় জামায়াতের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি বলে মনে করছেন নেতাকর্মীরা। তার মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা।
মন্তব্য করুন