বগুড়া ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি (আইএইচটি) শিক্ষার্থীদের নির্যাতনসহ বিভিন্ন অভিযোগে করা মামলায় ছাত্রলীগ নেতা সজল ঘোষকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) ভোররাতে শেরপুর উপজেলার ছোনকা বাজার এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বগুড়া জেলা পুলিশের মিডিয়া মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) শরাফত ইসলাম।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরাফত ইসলাম জানান, ভোররাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে শেরপুরের ছোনকা বাজার এলাকা থেকে সজল ঘোষকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে দুপুরে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
গ্রেপ্তার সজল ঘোষ শহরের রহমাননগর এলাকার মৃত সুমেন ঘোষের ছেলে। এ ছাড়াও তিনি বগুড়া জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক।
এর আগে সোমবার সন্ধ্যায় আইএইচটি'র অধ্যক্ষ আমায়াত-উল-হাসিনকে বাগেরহাট ম্যাটসের সিনিয়র লেকচারার হিসেবে বদলি করা হয়।
বগুড়া আইএইচটির শিক্ষার্থীদের অভিযোগ- এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী না হয়েও রাজনৈতিক প্রভাবে বিগত ১২ বছর ধরে ছাত্রাবাসের (হোস্টেল) একটি কক্ষ দখল করে ছিলেন সজল ঘোষ। ওই কক্ষে নিয়মিত মাদক সেবনসহ শিক্ষার্থীদের ওপর নিপীড়ন চালাতেন সজল। সর্বশেষ গত ২৯ আগস্ট দুপুরে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থী ও হোস্টেলের মিল ম্যানেজার আমিনুল ইসলামকে মারধর করেন তিনি। এই ঘটনায় শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে সড়ক অবরোধ করেন। সেই সময় শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের ক্ষোভের বিষয়টি সামনে আসে। প্রায় দুই ঘণ্টা সড়ক অবরোধকালে তারা তিন দফা দাবি জানায়। তাদের দাবির মধ্যে ছিল বহিরাগত সন্ত্রাসীকে আশ্রয় ও প্রশ্রয়দানকারী অধ্যক্ষ ডা. আমায়াত-উল-হাসিনের অপসারণ, সজল ঘোষকে গ্রেপ্তার ও শাস্তি এবং শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ। এ ইস্যুতে টানা ১৩ দিন আন্দোলন চালিয়ে আসে শিক্ষার্থীরা।
সর্বশেষ গত রোববার ৩ দফা দাবিতে ১০ ঘণ্টা শহরের বগুড়া-শেরপুর সড়ক অবরোধ করে রাখে শিক্ষার্থীরা। পরে পুলিশ ও জেলা প্রশাসনের আশ্বাসে রাত ১০টার দিকে অবরোধ তুলে নেয় তারা।
এদিকে এ ঘটনায় স্বাস্থ্য ও শিক্ষা অধিদপ্তর তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে। স্বাস্থ্য ও শিক্ষা অধিদপ্তরের অল্টারনেটিভ মেডিসিন বিভাগের উপপরিচালক ডা. গউসুল আজিম চৌধুরীকে প্রধান করে গঠিত ওই কমিটির সদস্যরা গতকাল ঘটনাস্থল পরিদর্শনসহ শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলেন।
মন্তব্য করুন