

সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কে বাঁশের বেড়া দিয়ে নৌকায় পারাপার করিয়ে অতিরিক্ত চাঁদা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, উপজেলার আনোয়ারপুর থেকে ফতেপুর হয়ে জেলা শহরে যাওয়ার সড়কটি তাহিরপুর থেকে সুনামগঞ্জ শহর ও পার্শ্ববর্তী জামালগঞ্জ উপজেলার অন্যতম যোগাযোগ পথ।
বর্ষা মৌসুমে বালিজুরী ইউনিয়নের বারঙ্কা গ্রামের সামনে সড়কের কিছু অংশ পানিতে তলিয়ে যায়। যানবাহন চলাচলের সুবিধার্থে বালিজুরী ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে খেয়া পারাপারের ইজারা দেওয়া হয়।
চলতি বছর পানি থাকা অবস্থায় আনোয়ারপুর গ্রামের জামাল মিয়া ২ লাখ ৮২ হাজার টাকায় ওই খেয়া পারাপারের ইজারা নেন। তবে গত ৮-১০ দিন আগে সড়কটির পানির স্তর নেমে গিয়ে পুরোপুরি শুকিয়ে যায়। তবুও ইজারাদারের লোকজন বাঁশের বেড়া দিয়ে রাস্তা বন্ধ করে নৌকায় পারাপার করিয়ে টাকা আদায় অব্যাহত রেখেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পারাপারে কোনো সরকারি চার্ট বা নির্ধারিত নিয়ম ছাড়াই গত ছয় মাস ধরে মোটরসাইকেলপ্রতি ৩০ টাকা করে আদায় করছে ইজারাদারের লোকজন। এতে প্রতিদিন হাজারো পথচারী ও যানবাহনচালক হয়রানির শিকার হচ্ছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা সিরাজ মিয়া ও মঈনুল ইসলাম বলেন, এখন রাস্তা একদম শুকনো, গাড়ি সহজেই যেতে পারে। কিন্তু ইজারাদারের লোকজন বাঁশের বেড়া দিয়ে রাস্তা আটকে রেখেছে। আমাদের জোর করে নৌকায় উঠিয়ে টাকা নিচ্ছে।
মোটরসাইকেল নিয়ে তাহিরপুরে আসা রাব্বী ও সুজন বলেন, একটু জায়গা পার করে প্রতি মোটরসাইকেল ৩০ টাকা রাখে। সরকারি কোনো চার্ট নেই, কোনো নিয়ম নেই।
মোটরসাইকেলচালক রিয়াদ মিয়া বলেন, প্রতিদিন এই পথে যাতায়াত করি। এখন পানি নেই, কিন্তু তারপরও ৩০ টাকা দিতে হয়। বাঁশ সরাতে গেলে আমাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করে।
অভিযোগের বিষয়ে ইজারাদার জামাল মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে পারাপারের দায়িত্বে থাকা ইজারাদারের লোকজন বলেন, রাস্তা পুরোপুরি শুকায়নি। কিছু জায়গায় এখনো কাদা আছে, তাই নিরাপত্তার জন্য বাঁশ দিয়ে পারাপার নিয়ন্ত্রণ করছি। অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগ ঠিক নয়।
বালিজুরী ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বাবুল মিয়া বলেন, পানি থাকা অবস্থায় ইজারা দেওয়া হয়েছিল। এখন রাস্তা শুকিয়ে গেলে নৌকা পারাপারের আর প্রয়োজন নেই। কেউ যদি জোর করে চাঁদা তোলে, সেটি সম্পূর্ণ অবৈধ।
এ বিষয়ে তাহিরপুর উপজেলা সহাকারী কমিশনার (ভূমি) ও ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শারুখ হাসান শান্তনু বলেন, বিষয়টি আপনার থেকে শুনলাম। রাস্তা শুকিয়ে গেলে ইজারাদারের খেয়া চালানোর অধিকার নেই। অভিযোগের সত্যতা পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন