বগুড়া ব্যুরো ও ধুনট প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৬ নভেম্বর ২০২৫, ০১:৪২ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

বাবার কোলে চড়ে অনার্স পাস করা হাসি শিক্ষক হতে চান

বাবার কোলে চড়ে যাতায়াত করেন প্রতিবন্ধী হাসি। ছবি : কালবেলা
বাবার কোলে চড়ে যাতায়াত করেন প্রতিবন্ধী হাসি। ছবি : কালবেলা

বগুড়ার ধুনট উপজেলায় বাবার কোলে চড়ে ১৮ বছর ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাতায়াত করা নাইছ খাতুন ওরফে হাসি অনার্স চূড়ান্ত পর্বের পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হয়েছেন।

শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ হয়। ফলাফলে দেখা যায় হাসি সিজিপিএ ৩ দশমিক ২ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দুটো পা আছে, তবে সেগুলোয় বল পান না হাসি। ডান হাতেও নেই শক্তি। সম্বল তার বাঁ হাত। সবসময় বাবার কোলে চড়েই তাকে স্কুল-কলেজে যাতায়াত করতে হয়েছে। এবার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্ভুক্ত ধুনট সরকারি ডিগ্রি কলেজ থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয় নিয়ে বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজ কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশ নেন তিনি।

ধুনট উপজেলার বহালগাছা গ্রামে তার বাড়ি। বাবার নাম নজরুল ইসলাম ও মায়ের নাম আকতার জাহান। দরিদ্র এই দম্পতির ঘরেই ২০০১ সালে জন্ম নেন হাসি।

হাসি ৬ বছর বয়সে গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। সেখান থেকে ৫ম শ্রেণির লেখাপড়া শেষ করে ভর্তি হন বিশ্বহরিগাছা-বহালগাছা উচ্চবিদ্যালয়ে। ওই বিদ্যালয় থেকে ২০১৭ সালে মানবিক শাখায় এসএসসি পরীক্ষায় ৩ দশমিক ৫৫ পয়েন্ট পেয়ে কৃতকার্য হন। এরপর ২০১৯ সালে বিশ্বহরিগাছা-বহালগাছা বহুমুখী মহাবিদ্যালয় থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় ২ দশমিক ৭৫ পয়েন্ট পেয়ে পাস করেছেন। এরপর উচ্চশিক্ষা গ্রহণের জন্য ধুনট সরকারি ডিগ্রি কলেজে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ে অনার্স শ্রেণিতে ভর্তি হন। দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে হাসি বাড়ি থেকে বাবার কোলে চড়েই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাতায়াত করেছেন।

হাসির বাবা নজরুল ইসলাম জানান, তার মেয়ে জন্ম থেকেই শারীরিক প্রতিবন্ধী। তবে দূর থেকে তা বোঝার কোনো উপায় নেই। দুটো পা, একটি হাত নিশ্চল। তাই নিজের পায়ে দাঁড়াতে বা হাঁটতে পারে না। শুধু বসা অবস্থায় বাঁ হাতটি দিয়ে কলম ধরে লিখতে পারে সে। এক ভাই ও এক বোনের মধ্যে হাসি ছোট। শরীরের এই প্রতিবন্ধিতাকে হাসিমুখেই জয় করেছে মেয়েটি।

হাসি বলেন, শরীরে শক্তি নেই, তাই কী হবে? মনোবল আর এক হাতের শক্তি নিয়েই জীবন শুরু করেছি। আমি কারও মাথায় বোঝা হয়ে থাকতে চাই না। বাবার কোলে চড়ে একসময় রাস্তায় বের হলে মানুষ আড় চোখে তাকিয়ে থাকত। লেখাপড়া করার কারণে মানুষ এখন ভালোবাসে। উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করে সমাজের সবার ভালোবাসা নিয়ে বেঁচে থাকতে চাই। প্রকৃত শিক্ষা অর্জন করে নিজেকে শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিত করতে চাই।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ভয়াবহ ব্যাটিং ধসে সহজ ম্যাচ হেরে বসল ভারত

হাসিনার রায়ের দিন মাঠে থাকার ঘোষণা জামায়াতসহ ৮ দলের

চট্টগ্রাম বোর্ডে এইচএসসিতে ফেল থেকে পাস করলেন ৩৯৩ শিক্ষার্থী

কুমিল্লা বোর্ডে ফল পুনর্নিরীক্ষণে ফেল থেকে পাস ১০৮ শিক্ষার্থী

উইন্ডোজ ১১-এ আসছে নতুন ফিচার

মেহজাবীনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

নাশকতার মামলায় আ.লীগের ৭ নেতাকর্মী গ্রেপ্তার

গোপালগঞ্জে আ.লীগের নাশকতা ঠেকাতে বিএনপির অবস্থান কর্মসূচি

ঢাকাসহ ৪ জেলায় বিজিবি মোতায়েন

ওয়ার্ল্ড ডে অব রিমেমব্রান্স: স্মরণ, শোক এবং নিরাপদ ভবিষ্যতের অঙ্গীকার

১০

গোমতী নদীর চরে গলায় কাপড় প্যাঁচানো কিশোরের মরদেহ

১১

কেউ শোনে না চরাঞ্চলের শিক্ষকদের চাপা কান্না

১২

ঘরেই বানিয়ে নিন সরষে-পোস্তো দিয়ে কাতলা মাছের ঝাল

১৩

স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভিপি পদে মনোনয়ন নিলেন জবি ছাত্রদল নেতা

১৪

মুগ্ধতায় নুসরাত ফারিয়া

১৫

বাফুফের চিঠির জবাব দিল বিসিবি, যা লেখা তাতে

১৬

২৯ বছরেও শুরু হয়নি খানজাহান আলী বিমানবন্দর নির্মাণের কাজ

১৭

বাবার কোলে চড়ে অনার্স পাস করা হাসি শিক্ষক হতে চান

১৮

হেবরনে ইব্রাহিমি মসজিদ মুসলমানদের জন্য বন্ধ ঘোষণা

১৯

রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান মির্জা ফখরুলের

২০
X