

সন্ধ্যা নামতেই শীতের ছোঁয়া, রাতে ঝরছে শিশির। ধীরে ধীরে বাড়ছে শীতের তীব্রতা। পাতলা কাঁথায় আর শীত মানছে না। হিমেল ঠান্ডা থেকে রক্ষায় চাই লেপের উষ্ণতা। শীতের প্রকোপ বাড়ায় বগুড়ায় লেপ-তোশক তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন কারিগররা।
সরেজমিন বুধবার (৩ ডিসেম্বর) জেলা শহরের রেললাইনের ২ নম্বর রেলগুমটির তুলাপট্টি গিয়ে দেখা যায় প্রায় দোকানেই লেপ-তোশক তৈরি ও বেচাকেনা জমজমাট হয়ে ওঠেছে। শীত মৌসুমে লেপ-তোশক তৈরি করে বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা।
স্থানীয়রা জানান, শীতের আগমনে লেপ-তোশক বানানোর ধুম পড়েছে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দোকানে ভিড় করছেন ক্রেতারা। মধ্যবিত্ত ও উচ্চ-মধ্যবিত্তরা কম্বল কিনতে যাচ্ছেন বড় কাপড়ের দোকানে। তবে তুলা, কাপড়, ফোম ও মজুরি মিলিয়ে গত বছরের তুলনায় এবার খরচ কিছুটা বেড়েছে।
এদিকে, লেপ-তোশকের চাহিদা বাড়ায় দাম বেড়েছে তুলার। আগে প্রতি কেজি শিমুল তুলা ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায় পাওয়া গেলেও বর্তমানে তা বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ থেকে ৬০০ টাকায়। এ ছাড়া কেজিপ্রতি প্রায় ২০ থেকে ১০০ টাকা দাম বেড়েছে কালো উল, কালো রাবিশসহ সাদা তুলায়। সেইসঙ্গে দাম বেড়েছে লেপ-তোশকের কাপড়েরও।
তুলাপট্টি এলাকার কারিগর হোসেন আলী বলেন, পুরো বছরের চেয়ে শীতে বেচাকেনা বেশি হয়। শীত আসার আগেই লোকজন লেপ বানাতে শুরু করেছে। আমরাও ব্যস্ত। শীত বাড়লে ব্যবসা আরও বাড়বে।
জেলা শহরের রেল গুমটি এলাকার তুলা পট্টিতে লেপ বানান আকবর আলী। দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে কাজ করেন লেপ-তোশক কারিগর হিসেবে।
আকবর আলী বলেন, কয়দিন আগেও তেমন কাজ ছিল না। তবে ঠান্ডা বাড়ার সঙ্গে কাজের চাপ বাড়ছে। এখন রাত ১০টা পর্যন্ত কাজ করেও চাহিদা পূরণ করতে পারছি না।
গাবতলী উপজেলার জয়ভোগা গ্রাম থেকে আসা ধলি বেওয়া বলেন, নতুন লেপ বানানোর সামর্থ্য নেই। পুরোনো লেপ সেলাই করে ব্যবহার উপযোগী করতে এখানে এসেছি।
শহরের কলোনি এলাকার গৃহবধূ মনোয়ারা বেগম বলেন, নতুন লেপের খরচ অনেক। পুরোনো লেপ ধুনিয়ে বাড়তি তুলা দিয়ে নতুন কাপড়ে মুড়িয়ে নিচ্ছি। খরচ অর্ধেকেরও কম।
কারিগররা জানান, শীতে তাদের কাজ সবচেয়ে বেশি। একজন শ্রমিক দৈনিক ৪-৫টি লেপ সেলাই করতে পারেন।
দোকান মালিকরা জানান, মুনাফা ও বিক্রির আশায় দিনরাত পরিশ্রম করছেন। শীত এগোলে কাজ আরও বাড়বে। আগে বড় লেপ তৈরিতে ১৫০০-১৮০০ টাকা লাগত, এখন ২৫০০-২৬০০ টাকা। এতে লাভ কমে গেছে।
মন্তব্য করুন