

বগুড়ায় জুলাই গণঅভ্যুত্থানে গুলিতে প্রাণ হারানো রিকশাচালক শহীদ কমর উদ্দিন বাঙ্গির পরিবারের ওপর সংঘবদ্ধ হামলার অভিযোগ উঠেছে। রোববার (০৭ ডিসেম্বর) রাত আনুমানিক ৮টার দিকে বগুড়া সদর উপজেলার চক আকাশতারা খাঁপাড়া এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে।
হামলায় শহীদ কমর উদ্দিনের নাতি শিমুলসহ তিনজন আহত হয়েছেন। গুরুতর অবস্থায় শিমুলকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্র ও থানায় দায়ের করা অভিযোগ থেকে জানা যায়, ঘটনার সময় শহীদ কমর উদ্দিন বাঙ্গির নাতি শিমুল বাড়ির সামনে ব্যাডমিন্টন খেলছিলেন। সেসময় হামলাকারীরা আচমকা শিমুলকে ধারালো রামদা দিয়ে আঘাত করে। রামদার আঘাতে রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হয়।
হামলাকারীরা শুধু শিমুলকেই আঘাত করেই থামেনি। তাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসা দুইজন স্থানীয় বাসিন্দাকেও তারা মারধর করে বলে অভিযোগ রয়েছে। এরপর তারা শহীদ কমর উদ্দিনের আধাপাকা বসতবাড়িতে হামলা চালায়। হামলাকারীরা বাড়িটির ঘরবাড়ি, মোটরসাইকেল ও অন্যান্য মূল্যবান মালামাল ভাঙচুর করে লন্ডভন্ড করে দেয়।
হামলার শিকার শহীদ কমর উদ্দিনের মা জমেলা বেগম জানান, বগুড়ার শহরের নারুলী তালপট্টি এলাকার ইমরান হোসেন (২১), ইমন (২০), সোহান (২৭), রাকিবুল (২১), ইমরানসহ (২০) অজ্ঞাতনামা ৭-৮ জন পূর্বশত্রুতার জের ধরে বাড়িতে হামলা চালায়। এ সময় হামলাকারীরা তাকেও মারধর করে এবং বাড়িতে থাকা টাকা-পয়সা লুট করে নিয়ে যায়।
শহীদ কমর উদ্দিনের মা বলেন, ‘আমার ছেলে দেশের জন্য জীবন দিল, আর আজ আমাদের বাড়িতেই হামলা। আমরা কি একটু শান্তিতে থাকতে পারব না?’
স্বজনরা জানান, কমর উদ্দিনকে হারানোর পর থেকেই পরিবারে অন্ধকার নেমে আসে। রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করা এ নিরীহ মানুষটির মৃত্যুতে পরিবারটি সহায়-সম্বলহীন হয়ে পড়ে। আর এখন এই বর্বর হামলা পুরো পরিবারকে আবারও গভীর আতঙ্কে ডুবিয়েছে।
শহীদ পরিবারের এক স্বজন হতাশা প্রকাশ করে বলেন, ‘কয়েকজন যুবক হঠাৎ এসে আমাদের ঘরবাড়ি ভাঙতে শুরু করে। এমন দৃশ্য আগে কখনো দেখিনি। আমরা এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করি।’
এদিকে শহীদ পরিবারের ওপর হামলার বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখছে প্রশাসন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বগুড়া সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) মাহফুজ আলম বলেন, শহীদ পরিবারের ওপর হামলার বিষয়টি বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। দোষীদের শনাক্ত করে তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন