মো. আবু জুবায়ের উজ্জল, টাঙ্গাইল
প্রকাশ : ১০ অক্টোবর ২০২৩, ০১:৩৩ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

ডেঙ্গুতে টাঙ্গাইলের এক গ্রামেই মৃত্যু ৬, জনমনে আতঙ্ক

ডেঙ্গু মশা। গ্রাফিক্স : কালবেলা
ডেঙ্গু মশা। গ্রাফিক্স : কালবেলা

টাঙ্গাইলে দেলদুয়ারে একটি গ্রাম ডেঙ্গুর আঁতুড়ঘরে পরিণত হয়েছে। জেলা শহর থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে এই গ্রামের অবস্থান হলেও এরই মাঝে শতাধিক মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৬ ব্যক্তির ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে বলে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানিয়েছেন। স্থানীয়দের অভিযোগ, ছোট গ্রামে শতাধিক ব্যক্তি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলেও মশক নিধনে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।

গত সোমবার সন্ধার দিকে উপজেলার হিংগানগর গ্রামের প্রকাশ সরকারের ছেলে জয় সরকার (১২) এর মৃত্যু হয়। এদিকে একই গ্রামে গত ১০ থেকে ১২ দিনের মধ্যে মৃত্যু হয় সনাতন সরকারের স্ত্রী মিতালী সরকার (২৪), সন্তোষ সরকারের ছেলে বাসুদেব সরকার (২০), আলাউদ্দিনের ছেলে আলমগীর হোসেন, সুরেস সরকারের ছেলে মনোরজ্ঞন সরকার (৪২) ও সমেজ মিয়ার স্ত্রী ইসমত তারা।

সমর চন্দ্র দাস বলেন, আমার পরিবারে চার জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত আমিও ছিলাম। এতে আমাদের হিন্দু সম্প্রদায়ে কয়েক দিন পর পূজা শুরু হবে। সেই পূজার আমেজ আমার পরিবারে নেই। এখন বাঁচা-মরার লড়াই। কীভাবে পূজার আমেজ থাকে। তাছাড়া দিন এনে দিন খাই এমন ধরনের মানুষ আমরা। এমনিতেই আমাদের শখ আহ্লাদ নেই, তার ওপর আবার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত।

মৃত জয় সরকারের বাবা প্রকাশ সরকার বলেন, আমার বাড়িতে কয়েক দিন আগে আমার ভাইয়ের বউ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। এই ভয়ে আমার ছেলেকে প্রথমে সোনিয়া ক্লিনিকে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হয়। সেখানে ভালো চিকিৎসা না পেয়ে আমি ঢাকায় শিশু হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে ৭ দিনের মাথায় আমার সন্তান জয়ের মৃত্যু হয়। তবে স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের প্রতি দাবি, আমার মতো আর কোনো সন্তান যাতে এভাবে মারা না যায়, সে বিষয়ে নজর দেওয়ার জন্য। এই এলাকাকে আপনারা ডেঙ্গুর মহামারির হাত থেকে বাঁচান।

উপজেলার আতিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণকান্ত দে বলেন, এটি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের এলাকা। জনমনে এলাকাজুড়ে চলছে আতঙ্ক। রাস্তাঘাট ও বাজারে কিছুটা মানুষ কমে গেছে। এত আবার আমাদের সম্প্রাদায়ে সবচেয়ে বড় পূজা শুরু হবে। অথচ এই এলাকায় পূজার আমেজ নেই। আর এলাকায় কোনো জনপ্রতিনিধিকে মশা নিধনে ভূমিকা রাখতে দেখা যায়নি।

উপজেলার আতিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, আমাদের ইউনিয়নের মধ্য হিংগানগর গ্রামটি বন-জঙ্গলে ঘেরা। এই এলাকায় শতাধিক মানুষ আক্রান্ত। এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ নজরে রাখছে।

এ বিষয়ে টাঙ্গাইলের সির্ভিল সার্জন ডা. মো. মিনহাজ উদ্দিন কালবেলাকে বলেন, এই এলাকার বিষয়ে আমরা সবসময় নজরে রাখছি। উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের টিম সবসময় সেখানে নিয়োজিত আছে। তা ছাড়া জনগণকে সচেতন করার জন্য প্রচার কাজসহ মশারি টাঙানো বিষয়ে আমরা যথেষ্ট তাগাদা দিচ্ছি।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

পাথর লুট / ডিসি, এসপি ও বিভাগীয় কমিশনারকে দুষলেন জামায়াত নেতা

ফ্যান চালালে মাসে কত টাকা বিদ্যুৎ খরচ হয় জেনে নিন

নতুন নাটকে আইনা আসিফ

বাংলাদেশ এখন অর্থনীতিকে উচ্চপর্যায়ে নিয়ে যেতে প্রস্তুত : আমির খসরু

সিলেটের পাথর উদ্ধারে চলছে দুদকের অভিযান

ডিজিটাল ডিভাইস থেকে চোখ সরছে না, হতে পারে বিপদ

২০২৭ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সরাসরি খেলার সম্ভাবনা কতটুকু?

আন্তর্জাতিক যুব দিবস ২০২৫ / বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রায় তরুণদের মূল্যায়ন কতটা জরুরি? 

রেলপথ অবরোধে আটকা ৮টি ট্রেন, ভয়াবহ শিডিউল বিপর্যয়

পাকিস্তান সীমান্তে দুপক্ষের গোলাগুলি, ভারতীয় সেনা নিহত

১০

জেসিকাকে ওরকার খেয়ে ফেলার দাবি ভুয়া, ভিডিওটি এআই নির্মিত

১১

সন্ধ্যার মধ্যে যেসব জেলায় হতে পারে বজ্রবৃষ্টি

১২

আটক ৫ বাংলাদেশিকে ফেরত দিল বিএসএফ

১৩

অবশেষে প্রকাশ্যে এলো ‘দেবী চৌধুরানী’র টিজার

১৪

আড়তে মেলে ইলিশ, পাতে ওঠে না সবার

১৫

নির্বাচনের সময় উপদেষ্টা থাকবেন না আসিফ মাহমুদ

১৬

বাস-ট্রাকের ভয়াবহ সংঘর্ষ

১৭

শিক্ষকরা প্রেস ক্লাবের সামনে, যান চলাচল বন্ধ

১৮

নিউজিল্যান্ডের সাবেক ক্রিকেটার এবার খেলবেন স্কটল্যান্ডের হয়ে

১৯

কিশোরগঞ্জে ২ কলেজের নাম পরিবর্তন

২০
X